রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   প্রাইভেটকারের ধাক্কায় বুয়েট শিক্ষার্থী নিহত: ডোপ টেস্টে ধরা পড়ল মাদকাসক্তি
  •   সাতক্ষীরায় ব্যবসায়ীর ২৩ লাখ টাকা ছিনতাই: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ
  •   চাকা পাংচার হওয়ায় এনজিও কর্মকর্তার মৃত্যু
  •   বরগুনায় টিকটক নিয়ে পারিবারিক কলহ: স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা
  •   মানব পাচারের চক্রের বিরুদ্ধে বিজিবির সফল অভিযান: কিশোরী উদ্ধার, তিন আটক

প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

মোলহেডের প্রতি রেল কর্তৃপক্ষের মামুলি আচরণ!

অনলাইন ডেস্ক
মোলহেডের প্রতি রেল কর্তৃপক্ষের মামুলি আচরণ!

বধ্যভূমি, কবরস্থান বা সমাধিক্ষেত্র সাধারণত দর্শনীয় স্থান হয় না। তবে কোনো কোনোটি হয়। এর মধ্যে রয়েছে চাঁদপুর শহরের পশ্চিম দিকে অবস্থিত মেঘনা তীরবর্তী বড়ো স্টেশন মোলহেড এবং কুমিল্লা শহরতলীর ময়নামতিতে অবস্থিত ওয়ার সিমেট্রি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের দোসর আলবদর-রাজাকাররা রেলওয়ের চাঁদপুর (বড়ো) স্টেশন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের নারী-পুরুষকে ধরে এনে নির্মম নির্যাতনের পর যেস্থানে হত্যা করে মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীতে ফেলে দিতো, সে স্থানটিই অর্থাৎ ১৯৭১-এর বধ্যভূমিটিই বর্তমানে পরিচিত মোলহেড নামে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে এখানে চাঁদপুরের ষোড়শ (১৬তম) জেলা প্রশাসক প্রিয়তোষ সাহা (২৪-৩-২০১০- ০৪-১০-২০১২) নির্মাণ করেন স্মৃতিস্তম্ভ ‘রক্তধারা’। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মাণ করে ইলিশ ভাস্কর্য। এই ভাস্কর্য ও স্মৃতিস্তম্ভ ‘রক্তধারা’র সৌন্দর্য এবং মেঘনা, পদ্মা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলের সৌন্দর্যে ‘মোলহেড’ বধ্যভূমি হওয়া সত্ত্বেও আজ চাঁদপুর জেলার সবচে’ আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। পর্যটক আকর্ষণে এখানে নানা অবকাঠামো গড়ে তোলে চাঁদপুর পৌরসভা ও জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের আবেদনে এই পর্যটন কেন্দ্রটি বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণের জন্যে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট লিখিত অনুমতি প্রদান করে। এমতাবস্থায় এগিয়ে আসে পর্যটন মন্ত্রণালয়। কিন্তু বাধ সাধে রেল মন্ত্রণালয়। ভূমির মালিক বলে রেল কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অর্থায়নে মোলহেডে আকর্ষণীয় স্থাপনা নির্মাণের ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণার পর ২০২২ সাল থেকে যা করছে, তাতে সেটিকে মামুলি আচরণ ছাড়া আর অন্য কী-ইবা বলার আছে?

শুক্রবার চাঁদপুর কণ্ঠে শীর্ষ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে মোলহেডকে নিয়ে। শিরোনাম হয়েছে ‘বর্ষায় পুরোদমে কাজ বন্ধ : মোলহেডের সৌন্দর্যবর্ধন কাজে কচ্ছপগতি’। এই সংবাদে রেলওয়ের অন্যতম প্রকৌশলী মোরসালিন রহমানের বক্তব্য জুড়ে দেয়া হয়েছে। যার সারাংশ হচ্ছে : বাজেট স্বল্পতা ও বিল নিয়ে বিলম্বের কারণে কাজটি ধীরগতিতে হচ্ছে। এই বক্তব্যের রেশ ধরেই আমাদেরকে বাধ্য হয়ে তাই বলতে হচ্ছে, রেল কর্তৃপক্ষের বাজেট স্বল্পতা তথা অর্থাভাব সত্ত্বেও তারা মোলহেডে পর্যটন মন্ত্রণালয়কে কাজ করতে বাধা দিলো কেন? নিতান্তই ভূমির মালিকানার জোরে?

আজকাল ভূমির মালিকদের অধিকাংশই নিজস্ব অর্থায়নে অবকাঠামো নির্মাণের চেয়ে ডেভেলপার কোম্পানির মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক নির্মাণকেই লাভজনক মনে করছে। আমাদের দেশের সেকেলে রেল কর্তৃপক্ষ সেটি সকল ক্ষেত্রে মনে করছে না। তারা চট্টগ্রাম রেল স্টেশন সংলগ্ন রেলভূমিতে পর্যটন মন্ত্রণালয়কে বহুতলবিশিষ্ট আধুনিক হোটেল সৈকত নির্মাণের সুযোগ দিলেও চাঁদপুরের পর্যটন কেন্দ্র ‘মোলহেডে’ কিছুই করতে দেয়নি। নিজেরা করতে গিয়ে বাজেট স্বল্পতায় হোঁচট খেয়ে দু বছরেরও অধিক সময়ে তেমন কিছু করতে পারেনি। চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে অব্যবহৃত রেল স্টেশনসমূহে অপ্রয়োজনীয় কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন করলেও রেল কর্তৃপক্ষ মোলহেডে অতি প্রয়োজনীয় দেড় কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ শেষ করতে পারেনি, যেটি অবশ্যই দুঃখজনক ও আপত্তিকর। আমরা এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য মহোদয়ের সক্রিয় হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়