রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

এমন মিলন মেলা ও সংবর্ধনা প্রশংসাব্যঞ্জক

অনলাইন ডেস্ক
এমন মিলন মেলা ও সংবর্ধনা প্রশংসাব্যঞ্জক

চাঁদপুর জেলা পরিষদের আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধকালীন চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কমান্ডার, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলা এবং সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য এ আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে চাঁদপুর জেলার ৪১৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয়া হয়। অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়ারী। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।

জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমরা এ প্রজন্মের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানি না। আজকে চাঁদপুর জেলা পরিষদের আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধাদের যে মিলন মেলা হলো এবং তাঁদের সংবর্ধনা দেয়া হলো, তা প্রশংসার দাবি রাখে। এমন আয়োজনে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের দেখা এবং তাঁদের মুখ থেকে যুদ্ধের স্মৃতিকথা শুনতে পারি। তিনি আরো বলেন, সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে আমরা সর্বোচ্চ সম্মান করি। আপনাদের যে কোনো প্রয়োজনে আমাদের কাছে আসবেন। আমরা আপনাদের সাথে যে কোনো পরিস্থিতিতে কথা বলতে প্রস্তুত আছি। আমার বাবা এবং নানা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ায় আমাদের গ্রামে যে একটি বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে, সেটি আমাদের বাড়ি। আমার বাবাও এখন আপনাদের মতো বয়সের ভারে ন্যূব্জ। আগামী বছরে হয়তো আমরা অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়ে ফেলবো। বাঙালি জাতির বীর সন্তানদের চোখে দেখার যে সৌভাগ্য আমরা পেয়েছি, তা যখন তারা থাকবেন না, তখন বুঝতে পারবো। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, এটি আমার জন্যে বিরল আনন্দের। আজকে আমি নিজে অনেক গর্ববোধ করছি। আপনারা আমার জন্যে দোয়া করবেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে আমি যেনো আমার দায়িত্ব পালন করতে পারি।

উদ্বোধকের বক্তব্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওসমান গনি পাটওয়ারী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। তিনি একটি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেটি বর্তমানে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করছেন। তিনি আরো বলেন, যাদের কারণে আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি সেসব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান দেয়াটা আমাদের জন্যে অনেক গর্বের। আমরা সবমসময় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করতে চাই। আজকে তাঁদের সম্মান জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত এবং গর্বিত। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিপিএম, পিপিএম, এনএসআই চাঁদপুরের উপ-পরিচালক আরমান হোসেন, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুননাহান চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধকালীন আত্মঘাতী নৌকমান্ডো শাহজাহান কবির বীর প্রতীক, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শহিদুল আলম রব, মিয়া মোঃ জাহাঙ্গীর, সাহাদাত হোসেন সাবু পাটওয়ারী সহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানে চাঁদপুরের সকল পর্যায়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পরিবারের সদস্য, জেলা পরিষদের সকল সদস্য এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

যতোই দিন যাবে, ততোই বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কমবে। দেশের অহংবোধের মানুষগুলোকে বারবার বেশি করে দেখবার সুযোগ কমতে থাকবে। সেজন্যে জীবদ্দশায় মুক্তিযোদ্ধাদের যতো একত্রিত করা যায়, তাঁদের কথা শোনা যায়, তাঁদের সান্নিধ্য-সাহচর্য পাওয়া যায়, ততোই বর্তমান প্রজন্মের জন্যে অনেক লাভ। কিন্তু তাঁদেরকে বৃহৎ পরিসরে এক জায়গায় আনার কাজটা ব্যয়বহুল এবং কম-বেশি কষ্টসাধ্য। অথচ সে কাজটিই করেছে ও করছে চাঁদপুর জেলা পরিষদ। এজন্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অবশ্যই ধন্যবাদার্হ। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অকৃপণভাবে সম্মান জানাতে তাঁর আন্তরিকতা, উদ্যম ও আয়াসসাধ্য প্রয়াস নিঃসন্দেহে প্রশংসাব্যঞ্জক এবং অন্যদের জন্যে অনুকরণীয়। চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা কর্তৃপক্ষেরও উচিত যৌথভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে ব্যাপক পরিসরে এমন মিলন মেলা ও সংবর্ধনার আয়োজন করা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়