প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২১, ০০:০০
ডাঃ সামছুন্নাহার তানিয়া চাঁদপুরের একজন বহুল আলোচিত স্ত্রীরোগ, প্রসূতি বিদ্যা বিশেষজ্ঞ ও সার্জন। তিনি নানা কারণে বার বার গণমাধ্যমের সংবাদ শিরোনাম হন। গতকালও হয়েছেন। চাঁদপুর কণ্ঠে তাঁকে নিয়ে করেছে শীর্ষ প্রতিবেদন। এ প্রতিবেদনের শিরোনাম হয়েছে ‘এটি কি প্রচারণা না ধৃষ্টতা ?’ এতে লেখা হয়েছে তার কমনসেন্স বহির্ভূত দাপুটে আচরণ সম্পর্কে। তিনি তার প্রাইভেট চেম্বারের স্থান পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালকে প্রচারণার প্রধান উপজীব্য বানিয়েছেন। তিনি প্রচারণা সামগ্রী হাসপাতাল ভবনের বহিরাংশে লাগিয়েছেন বিনা বাধায় ও নির্দ্বিধায়। এটি যে একটি দৃষ্টিকটু ব্যাপার হতে পারে সেটি তিনি তার অপরিসীম ব্যস্ততার জন্যে ভাববার অবকাশ পেয়েছেন বলে মনে হয় না। এর মধ্যে দিয়ে সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নেয়ার উৎকট মানসিকতাও প্রকাশ পেয়েছে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের কিছু ডাক্তার তাদের প্রাইভেট চেম্বারকে বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়ে হাসপাতালে সপ্তাহের ছয়দিন নির্ধারিত ডিউটিতে রেগুলারলি ইরেগুলার থাকেন। তাদের পক্ষে নিয়োজিত দালাল রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যায় তাদের প্রাইভেট চেম্বারে। এসব ডাক্তারের জন্যে হাসপাতালের ডিউটি হয়ে গেছে গৌণ, আর তাদের প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখাটা হয়ে গেছে মুখ্য। এমন ক’জন ডাক্তারের মধ্যে ডাঃ তানিয়ার নামটি বেশ উচ্চারিত। এতে তিনি ডেমকেয়ার ও বেপরোয়া। সরকারি কর্মস্থলকে প্রাইভেট চেম্বারের স্থান পরিবর্তনের প্রচারণা সামগ্রী লাগানোর মোক্ষম স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এজন্যে তিনি পরিণামদর্শিতার বিষয়টি ভাবেননি, ভেবেছেন শুধু স্বীয় স্বার্থের বিন্দুমাত্র ক্ষতি না হবার বিষয়টি।
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের সম্মুখস্থ সড়কের বৈদ্যুতিক খুঁটি কিংবা অন্য কিছুকে অবলম্বন করে বিভিন্ন ডাক্তারের প্রচারণা সামগ্রী সাঁটানোর দৃশ্য অতি সাধারণ দৃশ্য। কিন্তু হাসপাতাল ভবনে এমন কিছু সাঁটানোর দৃশ্য অসাধারণ। অথচ সে অসাধারণ কাজটিই করেছেন ডাঃ সামছুন্নাহার তানিয়া। এতে সচেতন মহল বিস্মিত। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ?-নিশ্চয়ই বিব্রত।
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তা হচ্ছেন তত্ত্বাবধায়ক। নিশ্চয়ই তিনি পুরো হাসপাতালের সব কিছুই দেখভাল করেন। এ হাসপাতালের সীমানা দেয়ালের ভেতরে কেউ অসাধারণ কিছু করতে চাইলে অবশ্যই তত্ত্বাবধায়কের নিকট থেকে অনুমতি নেয়ার বাধ্যবাধকতা আছে। কথা হলো, ডাঃ তানিয়া কি হাসপাতাল ভবনে তার চেম্বার সংক্রান্ত প্রচার সামগ্রী সাঁটাতে তত্ত্বাবধায়কের অনুমতি নিয়েছেন? যদি নিয়ে থাকেন, তাহলে কি সেটা বৈধ অনুমতি? তিনি
কারো দাপট দেখিয়ে সেটা করেছেন, না নিজের দাপটে করেছেন-সেটা ভেবে দেখবার অনেক অবকাশ রয়েছে বলে আমরা মনে করি।