প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২১, ০০:০০
করোনা বেড়েছে, তবে আতঙ্ক বাড়েনি
বৈশ্বিক পর্যায়ে, জাতীয় পর্যায়ে ও আঞ্চলিক পর্যায়ে করোনার প্রকোপ বেড়েছে অস্বাভাবিক। দিনের পর দিন পূর্ববর্তী রেকর্ড ভঙ্গ করে নূতন সংক্রমণ হচ্ছে এবং মৃত্যু বাড়ছে বিভিন্ন স্থানে। কোথায়ও দ্বিতীয় ঢেউ চূড়ান্ত পর্যায়ে, কোথাও তৃতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা। সোমবার দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে। ২৪৭ জন মৃত্যুবরণ করেছে ও আক্রান্ত হয়েছে ১৫ হাজার ১৯২ জন। একইদিনে চাঁদপুরে ২২৯ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং করোনায় ও এর উপসর্গে ৬ জন মৃত্যুবরণ করেছে।
|আরো খবর
করোনার ব্যাপক সংক্রমণ এখন ধীর লয়ে বাড়ছে না, বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। গত ২০ জুলাই সারাদেশে ২০০ জন, ২১ জুলাই ১৭৩ জন, ২২ জুলাই ১৮৭ জন, ২৩ জুলাই ১৬৬ জন, ২৪ জুলাই ১৯৫ জন, ২৫ জুলাই ২২৮ জন ও ২৬ জুলাই দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৪৭ জন অর্থাৎ এক সপ্তাহে ১৩৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ২০ জুলাই ১১ হাজার ৫৭৯ জন, ২১ জুলাই ৭ হাজার ১৪ জন, ২২ জুলাই ৩ হাজার ৯৭ জন, ২৩ জুলাই ৬ হাজার ৬৪ জন, ২৪ জুলাই ৬ হাজার ৮০ জন, ২৫ জুলাই ১১ হাজার ২৯১ জন এবং ২৬ জুলাই দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ১৯২ জন অর্থাৎ এক সপ্তাহে ৬২ হাজার ৫১৭ জন শনাক্ত হয়েছে।
চাঁদপুর জেলায় ২০ জুলাই ১২৫ জন শনাক্ত (সংক্রমণের হার ৩৯.১৮ শতাংশ), ২১ জুলাই (ঈদের দিন) ১০৮ জন শনাক্ত (৩৭.৭৬ শতাংশ) ও ১ জনের মৃত্যু, ২২ জুলাই ১১৮ জন শনাক্ত (৫২.৪৪ শতাংশ) ও ১ জনের মৃত্যু, ২৩ জুলাই ১০৫ জন শনাক্ত (৫৫.৫৫ শতাংশ) ও ১ জনের মৃত্যু, ২৪ জুলাই ১৫৮ জন শনাক্ত (৩৯.৬৯ শতাংশ) ও ৫ জনের মৃত্যু, ২৫ জুলাই ১৮০ জন শনাক্ত (৩০.৫০) শতাংশ ও ৮ জনের মৃত্যু, ২৬ জুলাই ২২৯ জন শনাক্ত (৪১.৬৩ শতাংশ) ও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোর হাসপাতাল, চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো রোগীতে ঠাসা অবস্থায় আছে। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এই হাসপাতালগুলোতে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা এবং মুমূর্ষু রোগীদের রোগ-যন্ত্রণায় যে বিভীষিকাময় দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে ও হচ্ছে, এসব দৃশ্য গণমাধ্যমে যেভাবে আসছে, তাতে জনমনে অনেক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার কথা। কিন্তু আতঙ্কটা সেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে না। কারণ, জীবন-জীবিকার প্রশ্নে মানুষ বেপরোয়াই হয়ে গেছে। লকডাউন মানছে না, স্বাস্থ্যবিধিও পুরোপুরি মানছে না। জাতীয় পর্যায়ে করোনার টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান বলেছেন, সামনে ভয়াবহ অবস্থা আসছে।
করোনা-সংক্রান্ত ভয়াবহ পরিস্থিতির বিষয়টি আশঙ্কা করা সত্ত্বেও সরকার পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১০ দিনের জন্যে লকডাউন শিথিল করে দেয়। এ সময়ে গরুর হাটে ও শপিং মলে বেপরোয়া মানুষ স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই বেচাকেনায় মত্ত হয়। পরিস্থিতি যা হবার এখন তা-ই হয়েছে। করোনা সংক্রমণ লাগামহীনভাবে বেড়ে গেছে, মৃত্যুর মিছিল বেগবান হয়েছে। কিন্তু সর্বস্তরের মানুষের মাঝে করোনা নিয়ে ভয় বা আতঙ্ক সেভাবে বাড়েনি বলে মনে হচ্ছে। এমতাবস্থায় সম্মিলিত প্রয়াসে অর্থাৎ রাজনৈতিক- অরাজনৈতিক সকল পক্ষ থেকে সবাই স্বেচ্ছাশ্রমে সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রশাসনের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসতে হবে। চাঁদপুর শহরে ইতিমধ্যে এমনভাবে অনেকে এগিয়ে আসা শুরু করেছে। এমনটি সারাদেশে হোক-সে প্রত্যাশা করছি।