বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

এতো সুনাম ! তবুও অনিয়ম?
অনলাইন ডেস্ক

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, চাঁদপুর জেলা সদরে বাস স্ট্যান্ডের অদূরে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল অত্যন্ত সুনাম অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান। চাঁদপুরের পাশর্^বর্তী লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরসহ সন্নিহিত জেলাগুলোতে এ হাসপাতালের মতো সুপ্রতিষ্ঠিত চক্ষু হাসপাতাল দ্বিতীয়টি আর নেই। পর্যবেক্ষকরা বলেন, বিএনএসবি নামীয় চক্ষু হাসপাতালগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, কুমিল্লার সমতুল্য হাসপাতাল হচ্ছে এ হাসপাতালটি। এ হাসপাতাল কর্তৃক প্রকাশিত স্মরণিকা থেকে জানা যায়, বিগত সত্তরের দশকে চাঁদপুরে জার্মানীর দাতা সংস্থা আন্ধেরী হিলফির আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ চক্ষুশিবির চলাকালে লক্ষ্য করা যায় যে, চক্ষু রোগগুলোর মধ্যে চোখে ছানিজনিত কারণে অন্ধ রোগীদের সংখ্যা প্রতি বছর ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরবর্তীতে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সদস্য বিশিষ্ট সমাজ হিতৈষী, শিল্পপতি ও দানবীর আলহাজ¦ মাজহারুল হক ভূঁইয়া, ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডাঃ নূরুর রহমান, প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি আলহাজ¦ ডাঃ এম.এ. গফুর, সদস্য আলহাজ¦ এম.এ. মাসুদ ভূঁইয়া এবং তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এ.এইচ.এম. ফজলুল হক ও চাঁদপুরের তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যান আঃ করিম পাটোয়ারীর আন্তরিক প্রচেষ্টা ও উৎসাহী ভূমিকায় ১৯৮২ সালে মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই ক্লাবের একটি প্রকল্প হিসেবে মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল যাত্রা শুরু করে। এ ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আলহাজ¦ মাজহারুল হক ভূঁইয়ার একক ভূমিদানে ও সিংহভাগ অর্থায়নে এবং কিছু সংখ্যক রোটারিয়ানের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতায় এ হাসপাতালটি চালু হয়। পরবর্তীতে প্রধানত আন্ধেরি হিলফিসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার সহযোগিতায় এ হাসপাতালটির অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত হয়। বর্তমানে দ্যা ফ্রেড হলোজ ফাউন্ডেশন, অরবিস ইন্টারন্যাশনাল ও ডাচ্ বাংলা ব্যাংক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এ হাসপাতালটি স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি চক্ষু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

জানা যায়, বিশে^র সর্বাধুনিক ফ্যাকো মেশিনের সাহায্যে ফ্যাকো অপারেশন ও চোখে লেন্স সংযোজনসহ সব ধরনের ছানি অপারেশন, বিশেষায়িত শিশু চক্ষু চিকিৎসা সেবা, কম্পিউটারের মাধ্যমে চক্ষু পরীক্ষা করে চশমার ব্যবস্থা, টিউব সংযোজনের মাধ্যমে কসমেটিক সেলাইসহ নেত্রনালী অপারেশন, বিশে^র সর্বাধুনিক ফিল্ড এনালাইজার মেশিন ও ফেকিমেট্রির মাধ্যমে গ্লুকোমা রোগ নির্ণয়সহ চিকিৎসা ও অপারেশন, কম্পিউটারাইজ্ড স্ক্যান ও বায়োমেট্রির মাধ্যমে চোখের লেন্সের পাওয়ার নির্ণয়, চোখের অন্যান্য ছোট অপারেশন, শ্লীট ল্যাম্পের সাহায্যে চোখের বিভিন্ন রোগ নির্ণয়, রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষার মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগ নির্ণয়সহ অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরীতে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা, স্বল্প খরচে অত্যাধুনিক মেশিনের সাহায্যে ইসিজি করার ব্যবস্থা, অত্যাধুনিক এসি/নন এসি কেবিনের ব্যবস্থা, স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের চক্ষু স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম, ড্রাইভারদের বিনামূল্যে দৃষ্টিশক্তি চিকিৎসা কার্যক্রম, টেলিমেডিসিন সার্ভিস, ভ্রাম্যমাণ চক্ষু শিবিরের মাধ্যমে বহিঃবিভাগে চক্ষু চিকিৎসা ও ছানি অপারেশনসহ আনুষঙ্গিক কিছু চিকিৎসা কার্যক্রম রয়েছে চাঁদপুরের মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে।

তুলনামূলক ছোট অবকাঠামোর এ হাসপাতালে এতো বেশি কার্যক্রমে সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনাগত কিছু শৈথিল্যে কম-বেশি দুর্নাম হচ্ছে বলে রব উঠেছে। এ হাসপাতালে শিশুদের চক্ষু চিকিৎসা ব্যয়বহুল বলে অভিভাবকদের দাবি। এছাড়া পাথর নিক্ষেপ দূরত্বে ডায়াবেটিক হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও ডায়াবেটিস পরীক্ষার কার্যক্রমকে বাড়তি হিসেবেও অনেকেই মনে করেন। গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে এ হাসাপাতাল নিয়ে তথ্যবহুল একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এর শিরোনাম হয়েছে ‘ভুল চিকিৎসায় চশমা, ব্যবহারে ভোগান্তি’। আমরা এ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদে পদাধিকার বলে অধিষ্ঠিত চাঁদপুরের সুযোগ্য জেলা প্রশাসককে উক্ত প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় তদন্ত সম্পাদনের অনুরোধ জানাচ্ছি। কেননা, চাঁদপুরবাসী চান, এতো সুনামের অধিকারী হাসপাতালটিতে যেনো কোনো অনিয়ম বাসা বাঁধতে না পারে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়