শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৮

টপ সয়েলবিরোধী টাস্কফোর্স চাই

অনলাইন ডেস্ক
টপ সয়েলবিরোধী টাস্কফোর্স চাই

বৃহস্পতিবার দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের শীর্ষ সংবাদে প্রকাশ, ফরিদগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র চলছে ফসলি জমির মাটি কাটার ধুম। প্রশাসনের অভিযানের পরও থামছে না মাটি কাটা। জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাছের ঝিলের নামে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। আর এসব মাটি নিষিদ্ধ ট্রাক্টর দ্বারা ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রতিদিনই এ উপজেলায় টপ সয়েল কাটা হলেও সেদিকে নজরদারি করছে না স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। উপজেলার দেইচর, কেরোয়া ও বেহারিপুর গ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। নিচুস্থান ভরাট করাসহ এসব মাটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। একটি সূত্র জানায়, মাটি ক্রেতারা স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ও সাংবাদিক নামধারী কতিপয় ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে মাটি কাটছে। যেসব জমির মাটি কাটা হচ্ছে, পাশের জমির ক্ষতি হলেও এরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলে কথা বলতে সাহস পায় না। এসব মাটি দিনের চেয়ে রাতের বেলায় বেশি কাটা হয়ে থাকে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ক’জন জানান, ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাতের বেলা নিষিদ্ধ ট্রাক্টর, পিকআপ ও ট্রলি গাড়িতে করে নেওয়া হয়। গাড়ির বিকট শব্দে ঘুমাতে পারেন না তারা। এরা প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে মাটি কাটছে। তাদের মাটি কাটার কারণে পাশের জমির ক্ষতি হলেও ভয়ে জমির মালিকরা কিছু বলতে সাহস পান না। এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেটু কুমার বড়ুয়া বলেন, মঙ্গলবারও আমরা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফরিদগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ আর এম জাহিদ হাসান বলেন, এ উপজেলা একটি বড়ো উপজেলা। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বালি কাটা ও মাটি কাটা হয়। এদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান শুরু করে দিয়েছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা আজকেও অভিযান করেছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। মাটি ও বালি যারা কাটছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। শুধু কি ফরিদগঞ্জ, শাহরাস্তি, হাজীগঞ্জ, কচুয়া, মতলব উত্তরসহ দেশের প্রায় সর্বত্র কৃষিজমির উর্বর টপ সয়েল কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। ইটভাটাসহ বিভিন্ন উন্নয়নে এ মাটি কেনাবেচায় বেপরোয়া ভাব লক্ষ্য করা যায়। এজন্যে প্রতিটি উপজেলায় কর্মরত দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে টপ সয়েলবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। এমন মাটি বেচাকেনায় জড়িতরা কালেভদ্রে পরিচালিত আদালতকে ফাঁকি কীভাবে দিতে হয় সেটা ভালো করেই জানে। সেটাকে প্রতিহত করতে নিয়মিত সাঁড়াশি অভিযানের বিকল্প নেই। এজন্যে নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমের প্রাক্কালে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে, যে ফোর্স সপ্তাহের সাতদিন ২৪ ঘণ্টা অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সক্ষমতা রাখবে। অন্যথায় প্রতি উপজেলার দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে তাদের রুটিন ওয়ার্ক বাদ দিয়ে টপ সয়েলবিরোধী কার্যক্রমে ব্যস্ত রাখতে হবে কিংবা থাকতে হবে। বস্তুত সেটা কি আদৌ সম্ভব?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়