বাকিলার কফির সুখ্যাতি, প্রতারণা ও স্বেচ্ছাচারিতা

হাজীগঞ্জের বাকিলা বাজারের রেল লাইনের পাশে বিসমিল্লাহ্ কফি হাউজে পচাবাসি খাবার সংরক্ষণ, পরিবেশন ও মূল্য তালিকা না রেখে প্রতারণার দায়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চাঁদপুর অফিস। একই সময় একই অফিস কফি হাউজ সংলগ্ন বিসমিল্লাহ মেডিকেল হলের মালিককে চিকিৎসক না হয়েও ডাক্তার লিখার দায়ে ১০ হাজার টাকা ও পাশের এরাবিয়ান ফুড নামের আরেকটি ফাস্টফুডের দোকানকে ২ হাজার টাকাসহ মোট ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করে ও আদায় করে। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর ২০২৫) জেলা ভোক্তা অধিকার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজীগঞ্জের বাকিলা বাজারের রেললাইনের পাশে বিসমিল্লাহ্ কফি হাউজে খাবারের মূল্য তালিকা না রাখা, বাসি খাবার সংরক্ষণ, ভেজাল ও প্রতারণামূলক কার্যক্রমের প্রমাণ পাওয়ায় মালিক আক্তার হোসেনকে ৫ হাজার টাকা, এরাবিয়ান ফুড কর্নারে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় মালিক ফজুলল হককে ২ হাজার টাকা ও চিকিৎসা সম্পর্কিত অনিয়ম যেমন গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসক না হয়ে চিকিৎসক পরিচয় ধরা পরায় বিসমিল্লাহ মেডিকেল হলের মালিক মামুনকে ১০ হাজার টাকাসহ মোট তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মূল্য তালিকা প্রদর্শন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনার নির্দেশ দিয়ে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর চাঁদপুরের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষায় এ অভিযান চলমান থাকবে। যে কোনো ধরনের প্রতারণা, মুনাফাখুরি বা ভুয়া পরিচয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে এ ধরনের অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয়রা জানান, কফি ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন খাদ্যের কোনো মেমো প্রদান করেন না, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করেন না, যেভাবে ইচ্ছা নিজের মনে করে গ্রাহক থেকে গলাকাটা দাম রাখেন। এছাড়া গভীর রাত পর্যন্ত কফি হাউজটি চলমান থাকায় অপরাধীদের রাতের আড্ডা বাড়ার প্রতিবাদ করেন। এটা মোটেও বাড়িয়ে বলা নয় যে, চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা বাজারে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে এক দশকেরও বেশি সময় আগে সনাতন ধর্মাবলম্বী এক রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী এমন সুস্বাদু কফি বানানো শুরু করেন যে, শুধু বাকিলা নয়, সারা জেলায় এর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারীচালিত অটোবাইক ও মোটরসাইকেল থামিয়ে ওই রেস্টুরেন্টের কফির স্বাদ নেয়া শুরু করে। এক পর্যায়ে মূল্য নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা ও অপরিচ্ছন্নতাহেতু এবং রেললাইনের পাশে সুপরিসর জায়গায় বিসমিল্লাহ্ কফি হাউস হওয়ায় গ্রাহকরা সুস্বাদু কফির প্রথম উদ্যোক্তা সেই রেস্টুরেন্ট থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। জমে উঠে নূতন কফি হাউজ। কিন্তু মালিক মূল্য নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা করতে থাকে, এমনকি পচাবাসি খাবার খাওয়ানোসহ গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডাবাজিকে প্রশ্রয় দিয়ে চলছেন। অভিযোগ পেয়ে অবশেষে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চালিয়েছে অভিযান, করেছে জরিমানা এবং সতর্ক। আশা করি একবার নয়, বারবার এ রকম অভিযান চললে এই কফি হাউজে গ্রাহকবান্ধব পরিবেশ তৈরি হবে, সুনাম রক্ষা হবে।