রবিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫১

অগ্নিসংযোগকারীদের খুঁজে বের করতেই হবে

অনলাইন ডেস্ক
অগ্নিসংযোগকারীদের খুঁজে বের করতেই হবে

পুকুর, দিঘি কিংবা অন্য কোনো জলাশয়ে বিষ প্রয়োগে মৎস্য নিধন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এতে মৎস্য খামারিরা লাখ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতির শিকার হন প্রায়শই। এ বিষ প্রয়োগ শত্রুতা উদ্ধার কিংবা ঈর্ষাবশত হয়ে থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্য, পুলিশ-র‌্যাব-পিআইবির অন্য প্রায় সকল ঘটনায় সাফল্য থাকলেও বিষ প্রয়োগকারীদের ধরার ব্যাপারে সাফল্য নেই বললেই চলে। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তা যেন এখানে অচল! সাম্প্রতিক সময়ে শত্রুতাবশত কারো ঘরে বা স্থাপনায় আগুন লাগিয়ে দেয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর সাথে সংশ্লিষ্টদের ধরতেও পুলিশ-র‌্যাব-পিআইবির ব্যর্থতা লক্ষণীয়। সর্বশেষ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটলো। গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত হলো এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ।

‘কচুয়ায় দুর্গামন্দিরের গুদামে অগ্নিসংযোগ : ক্ষয়ক্ষতি ১০ লাখ টাকা’ শিরোনামের সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, কচুয়া পৌরসভার করইশ বেপারী বাড়ি দুর্গামন্দিরের গুদামে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর ২০২৫) দিবাগত রাত দেড়টার সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। বেপারী বাড়ির বাসিন্দা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক রতন চন্দ্র ভৌমিক জানান, স্থানীয়রা রাত দেড়টার সময় মন্দিরের পাশে গোডাউনে আগুন দেখতে পেয়ে ডাকচিৎকার দিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে সংবাদ দিলে সবাই মিলে আগুন নেভাতে সহায়তা করে। আগুনে গোডাউনে রক্ষিত পূজা উদযাপনের মালামাল, কাপড়, পানির মোটর, কার্পেট, বিছানা, রান্না করার সসপেন, পাতিল, লাকড়ি, থালা, বাসন, ঘর ও সকল মালামাল পুড়ে যায়। তিনি আরো বলেন, রাতের আঁধারে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের আগুনে আমাদের গোডাউনের প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল আগুনে পুড়ে গেছে। উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সাহা জানান, শত বছরের পুরাতন এ মন্দিরে কখনও এ ধরনের ঘটনা ঘটে নাই। গোডাউনে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই । কীভাবে আগুন লেগেছে তা বলতে পারছি না। প্রতিবেশী মুসলিম ভাই ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন মিলে আগুন নিভিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দুষ্কৃতকারীদের শাস্তি ও প্রশাসনের কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করছি। উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ পোদ্দার বলেন, আমরা সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন যুগ যুগ ধরে একসাথে মিলে মিশে বসবাস করছি। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি এই মন্দিরে ৪দিনব্যাপী হরিনাম কীর্তনের প্রস্তুতি চলছে। মন্দিরের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। কচুয়া থানার ওসি মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, সংবাদ পেয়ে টহল পুলিশ, আমি ও সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল হাই চৌধুরী এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক রতন চন্দ্র ভৌমিক বাদী হয়ে কচুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

আমরা চাই, কচুয়ায় মন্দিরের গুদামে আগুন লাগানোর সাথে জড়িতরা অবিলম্বে গ্রেফতার হোক। কেননা ঘটনাটিকে সুস্পষ্ট নাশকতা মনে হচ্ছে। ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর নাশকতা করে সমাজে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার প্রয়াস বিভিন্ন স্থানে মাঝেমধ্যে দেখা যায়। কচুয়ায় হিন্দু ও মুসলমানদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত এমন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আছে। দুষ্কৃতকারীরা একটি মন্দিরের গুদামে অগ্নিসংযোগ করে টেস্ট করলো কিনা এবং পরবর্তীতে বড়ো ধরনের হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা সেটা ভাবার বিষয়। এ ঘটনায় দুষ্কৃতকারীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকলে তারা আস্কারা পেতে পারে। সেজন্যে এমন দুষ্কৃতকারীকে চিহ্নিত করাটা অতি আবশ্যক। আশা করি পুলিশ-র‌্যাব-পিআইবি সফল হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়