বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৮

একজনকে এতো ভয় করলে কি চলে?

অনলাইন ডেস্ক
একজনকে এতো ভয় করলে কি চলে?

‘দোকানের বকেয়া পরিশোধ না করে উল্টো প্রবাসী কর্তৃক হয়রানি ॥ পালিশারা বাজারের ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সংবাদ সম্মেলন’-এ সংবাদটি পড়ে কোনো পাঠক ক্ষুব্ধ হয়েছে, কেউ সংবেদনশীল হয়েছে, আবার কেউ মুচকি হেসেছে। কেননা একজনকে অনেক ভয় পেয়েই একটি বাজারের পুরো ব্যবসায়ী সমাজ এ সংবাদ সম্মেলনটি করেছে। প্রবাদে আছে, আহার-নিদ্রা-ভয়/যতো করে ততো হয়। এ বাজারের ব্যবসায়ীদের অবস্থা বোধ করি তেমনই।

সংবাদটিতে কামরুজ্জামান টুটুল লিখেছেন, পুরো বাজারের বহু দোকানে বাকি খেয়ে কোনো বকেয়া পরিশোধ না করে উল্টো ব্যবসায়ীদেরকে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগে এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। অভিযুক্ত মো. ইয়াছিন (৪০) নামের এই প্রবাসী হাজীগঞ্জ উপজেলার ৯নং গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের পালিশারা গ্রামের কামিজ উদ্দিন বেপারী বাড়ির বাসিন্দা। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনটি করেন একই ইউনিয়নের পালিশারা বাজারের ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীগণ এবং ব্যবসায়ী সমিতি। হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক সভাপতি হাসান মাহমুদের সভাপ্রধানে পালিশারা মধ্য বাজারে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পালিশারা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, পালিশারা গ্রামের কামিজ উদ্দিন বেপারী বাড়ির বাসিন্দা মো. ইয়াছিন প্রবাসে থাকলেও কয়েক মাস পর পর তিনি দেশে আসেন। এসেই তিনি বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বাকিতে মালামাল ক্রয় করেন। পরবর্তীতে তার কাছে পাওনা টাকা চাইতে গেলে তিনি পাওনাদার ব্যবসায়ীদের হুমকি-ধমকি দেন ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এমনকি পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে তার হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন একাধিক ব্যবসায়ী। ইয়াছিনের এমন কর্মকাণ্ডে অনেক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হিসেবে আমার কাছে অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে আমি তাকে (ইয়াছিন) জিজ্ঞাসা করলে সে আমার সাথেও উচ্ছৃঙ্খল ও মারমুখী আচরণ করে এবং আমাকে হুমকি-ধমকির পাশাপাশি আমার বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগ দেয়। তার ভয়ে ও অত্যাচারে পালিশারা বাজারের ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ এবং তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বেশ ক’জন পাওনাদারের নাম উল্লেখ করে মো. নূরুল ইসলাম বলেন, এরা সবাই এ বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সেলুন থেকে শুরু করে ফার্মেসী--এমন কোনো ধরনের ব্যবসায়ী নেই যে তার কাছে টাকা পাবে না। সে নিয়মিত মাদক সেবন এবং মাদক বিক্রয় করে এলাকার কিশোর ও যুব সমাজকে ধ্বংস করে আসছে। তার জুলুম ও অত্যাচার থেকে বাঁচতে চান পালিশারা বাজারের ব্যবসায়ীরা। তাই এ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত মজুমদারের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদসহ একাধিক পাওনাদার ও ব্যবসায়ী।

একজন সন্ত্রাসী প্রকৃতির মাদক ব্যবসায়ী প্রবাসী ইয়াছিনকে জমের মতো ভয় পেয়ে হাজীগঞ্জের পালিশারা বাজারের ব্যবসায়ীরা ও ব্যবসায়ী সমিতি হাজীগঞ্জ উপজেলা সদরে গিয়ে নয়, বরং তাদের বাজারে হাজীগঞ্জ থেকে সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে খুব বড়ো কাজ করে ফেলেছেন বলে আমরা মনে করি না। তারা যদি সন্ত্রাসী ও মাদক প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে তার আত্মপ্রকাশ ও কর্মতৎপরতা উদ্বোধন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন বা অন্য অনুষ্ঠান করতেন, তাহলে সেটাকে বড়ো কাজ বলে অভিহিত করা যেতো। আমরা অবশ্যই ভয় পাওয়া ব্যবসায়ীদের পাশে প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ সহ সাহসী সকলকে দাঁড়াবার ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাবো। কিন্তু এ আহ্বানেও আবার সব হবে না। এজন্যে সেনাবাহিনী/ থানা পুলিশকে পালিশারা বাজারে গিয়ে সভা করে ব্যবসায়ীদের মাঝে সাহস সঞ্চারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং নিজস্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রক্রিয়া বাতলে দিতে হবে। আর এতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমর্থন ব্যক্ত করে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিতে হবে। একই সাথে সন্ত্রাসী ইয়াছিনকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। তবেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও দৃষ্টান্তমূলক কিছু হয়ে যাবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়