রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৩০

কোস্ট গার্ড এতো মাদক ধরলো, অন্যরা কী করলো?

অনলাইন ডেস্ক
কোস্ট গার্ড এতো মাদক ধরলো, অন্যরা কী করলো?

চাঁদপুরে ১৮ লাখ টাকা মূল্যের মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে কোস্ট গার্ড। এটা স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে বেশ ফলাও করে প্রকাশ পেয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চাঁদপুরে বিভিন্ন অভিযানে জব্দকৃত প্রায় এসব মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে কোস্ট গার্ড। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা মো. সিয়াম-উল-হক লে. কমান্ডার বিএন এ তথ্য জানান। তাতে উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশ কোস্টগার্ড দেশের সুবিশাল সমুদ্র উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এ সকল এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, চোরাচালান, মাদক ও মানব পাচার রোধ এবং জনগণের জানমাল রক্ষায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড মানুষের মাঝে নিরাপত্তা ও আস্থার বিশ্বস্ত প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

গত ৩০ মার্চ হতে ২০ জুন ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত কোস্টগার্ড স্টেশন চাঁদপুর কর্তৃক চাঁদপুর সদর উপজেলায় পৃথক ৫ টি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ১৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যের ৬০ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজাসহ ৪ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণের জন্যে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়েরপূর্বক হস্তান্তর করা হয়। জব্দকৃত গাঁজার নমুনা হিসেবে ৬৫০ গ্রাম গাঁজা সংশ্লিষ্ট থানায় জমা প্রদান করা হয়। বাকি ৫৯ কেজি ৮৫০ গ্রাম গাঁজা ধ্বংসের জন্যে আদালতের নির্দেশনা আনা হয়। প্রাপ্ত নির্দেশনা মোতাবেক মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিকেলে কোস্টগার্ড স্টেশন চাঁদপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালত, চাঁদপুর-এর উপস্থিতিতে ৫৯ কেজি ৮৫০ গ্রাম গাঁজা ধ্বংস করা হয়। এ সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের প্রতিনিধিগণও উপস্থিত ছিলেন। কোস্ট গার্ডের অভিযানে উদ্ধারকৃত মাদক প্রকাশ্যে ধ্বংস করার কাজ পর্যবেক্ষণ করেন মো. ইয়াছিন আরাফাত (সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট), বিশাল দাস (সরকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, চাঁদপুর), মো. আহসান হাবিব (পরিদর্শক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চাঁদপুর) সহ গণমাধ্যম ও পুলিশ প্রতিনিধিবৃন্দ।

আমাদের দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রয়েছে। জেলা পর্যায়ে এর কার্যালয়, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও যানবাহন রয়েছে। চাঁদপুরেও আছে। কিন্তু নেই মাদকবিরোধী ব্যাপক কার্যক্রম। ২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর থেকে প্রায় প্রতিদিন জেলাব্যাপী সেনাবাহিনী ও পুলিশ তথা যৌথ বাহিনী দিনরাত ২৪ ঘন্টার যে কোনো সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যেভাবে মাদকবিরোধী অভিযান চালায়, তার তুলনায় দশভাগের একভাগ অভিযানও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয় থেকে চালানো হয় না। সেজন্যে সমালোচকরা এই কার্যালয় সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করে এমন-আসলে এ কার্যালয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করে না, বরং পালন করে। দেখা গেছে, এই অধিদপ্তরের যে কর্মকর্তা প্রত্যাশিত তৎপরতা দেখায়, দেশের অন্য জেলায় কী হয় বা হয়েছে জানি না, চাঁদপুরে অতীতে এমন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের চেয়ে তার সহকর্মীরা লেগেছে অনেক বেশি। যার প্রমাণ স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনেক সংবাদ ও তৎপ্রেক্ষিতে সম্পাদিত তদন্ত কার্যক্রম। এমতাবস্থায় তথা কোনো ভয়ে সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদপুরে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম ধীর গতির, না অন্য কোনো অজুহাতে-সাধারণ্যে সেটা জানার কৌতূহল তৈরি হয়েছে। আশা করি, এ কৌতূহল মিটাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চাঁদপুর তাদের তিন মাস বা ছয় মাসের তৎপরতা গণমাধ্যমে প্রকাশের ব্যবস্থা করবে। কথা হলো, সেই সৎসাহস কি আছে তাদের?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়