বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন, ২০২৫  |   ৩৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৫, ২০:৩৭

পথে প্রান্তরে : পর্ব-৫

দৃষ্টি শক্তি হারিয়েও আল আমিন প্রকাশ করেছে 'ভালোবাসার শেষকৃত্য'

মো. মঈনুল ইসলাম কাজল
পথে প্রান্তরে : পর্ব-৫

শাহরাস্তি উপজেলার সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নের শোরসাক গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আল আমিন। তাঁর স্বপ্ন ছিলো লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে সমাজের অবহেলিত মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করবে। সব কিছুই ঠিকঠাক ছিলো। ২০১৬ সালে দশম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় তাঁর ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। ঢাকায় তাঁর অপারেশন করার পর জীবন ফিরে ফেলেও দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যায় আল আমিনের। সেই থেকেই লেখাপড়ার পথ বন্ধ হয়ে গেলেও কিন্তু তাঁর ইচ্ছাশক্তি থেমে থাকেনি। মনের চোখ দিয়ে কল্পনা করতে থাকেন, সেই সাথে স্বপ্ন দেখতে লাগলেন একদিন তাঁর লেখা বই পাঠকের হাতে পৌঁছবে। খুব কাছের বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা নিয়ে বই লেখা শুরু করেন। মনের ভেতর গেঁথে থাকা শব্দগুলো আল আমিন মুখ দিয়ে উচ্চারণ করলেই সাথে সাথে তাঁর পরিবারের সদস্য ও বন্ধু বান্ধব খাতায় লিপিবদ্ধ করে নিতো। দু-একটি পাণ্ডুলিপি সমাপ্ত হওয়ার পর আল আমিন সেটি প্রকাশের জন্যে ছুটাছুটি করতে লাগলেন। একদিন হাজীগঞ্জ বাজারের বই দোকানদার আজাদ হোসেনের শরণাপন্ন হন। আজাদ হোসেন তাঁর কথা শুনে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন।

আজাদ হোসেন হাজীগঞ্জ উপজেলার কাকৈরতলা এলাকার তিতাস প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী বাবুল হোসেনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন আল আমিনকে। বাবুল তার প্রকাশনী থেকে 'ভালোবাসার শেষকৃত্য' বইটি প্রকাশ করেন।

আল আমিন তার প্রকাশিত বইটি হাতে পেয়ে দৃষ্টিশক্তি হারানোর কষ্ট ভুলে যেতে শুরু করলেন। একে একে আরো ক'টি পাণ্ডুলিপি প্রকাশের জন্যে ইতোমধ্যেই প্রস্তুত করে রেখেছেন । আল আমিন অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, বই প্রকাশের জন্যে তিনি একটু একটু করে টাকা জমাতে শুরু করেন।‌ একটি মাটির ব্যাংকে দশ-বিশ টাকা করে জমিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে প্রথম বইটি বের করেন তিনি। তাঁর সহপাঠী এক বন্ধুকে উৎসর্গ করেন বইটি। তাঁর সকল কাজে বড়ো ভাই ব্যবসায়ী মোরশেদ আলম সহযোগিতা করে আসছেন।

আল আমিনের স্বপ্ন, সুযোগ পেলে দৃষ্টি, শ্রবণ, শারীরিক প্রতিবন্ধী, এতিম ও বিধবা নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নিজেকে নিয়োজিত করা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়