শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫  |   ৩২ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৫, ০৯:০৬

শাহতলীতে মাদক ব্যবসায়ীদের এতোটা দৌরাত্ম্য কেন?

অনলাইন ডেস্ক
শাহতলীতে মাদক ব্যবসায়ীদের এতোটা দৌরাত্ম্য কেন?

চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহ মাহমুদপুর ইউনিয়নের বিখ্যাত এক গ্রামের নাম শাহতলী। এই গ্রামের নামে এবং এই গ্রামে রেল স্টেশন, বাজার, কামিল মাদ্রাসা, কলেজ, একাধিক প্রাইমারী স্কুল, বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বহু ব্রিক ফিল্ড সহ কতো কিছুই না আছে। প্রাচীনত্ব, প্রসিদ্ধি ও ঐতিহ্যে শাহতলী শুধু সদর উপজেলা নয়, সমগ্র চাঁদপুর জেলায় বহুল পরিচিত একটি নাম। অথচ সেই নামটি সাম্প্রতিক সময়ে মাদক ব্যবসা এবং এর সাথে সংশ্লিষ্টদের বেপরোয়া আচরণ তথা দৌরাত্ম্যে কালিমাযুক্ত হতে চলেছে। শাহতলীতে মাদক মামলার ২ আসামী ধরতে গিয়ে অতি সম্প্রতি চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ হামলার শিকার হয়েছে এবং প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় চেষ্টায় আসামীদের ধরতে সক্ষম হয়েছে। এ সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে পড়ার দগদগে স্মৃতি মন থেকে না মুছতেই চাঁদপুর কণ্ঠে গতকাল পাঠকরা শাহতলীতে বেপরোয়া মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে গ্রাম পুলিশের মারধরের সংবাদ পড়েছে।

সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহতলীতে মাদক ব্যবসা জমজমাট আকার ধারণ করেছে। মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলায় গ্রাম পুলিশকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায়, শাহতলী ও আশপাশের এলাকায় হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় যে কোনো মাদক। পূর্বে শাহতলী ও আশপাশের এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা কম থাকলেও সেবনকারীর সংখ্যা বেশি ছিলো। ৫ আগস্টের পর হতে শাহতলী ও আশপাশের এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাত বাড়ানোর আগেই পাওয়া যায় মাদক। এ সকল মাদক ব্যবসায়ীর বেশিরভাগই ১৫ বছর হতে শুরু করে ৩০ বছরের যুবক। যার ফলে এরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এরা কাউকে তোয়াক্কা না করে গ্রুপ বেঁধে চলে এবং মাদকের ব্যবসা করে যাচ্ছে। মাদক ব্যবসার ব্যাপারে এলাকার সচেতন মহল জানলেও ভয়ে কিছু বলতে সাহস পায়নি। গত ক’দিন আগে ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ আলী মাদকের বিরুদ্ধে প্রশানকে তথ্য দেয়া ও মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে তাকে মারধর করে মাদক ব্যবসায়ীরা। পরে মডেল থানা পুলিশ শাহতলী বাজারে গিয়ে মাদক ব্যবসায়ীকে খুঁজতে গেলে সে পালিয়ে থাকে। এ সকল মাদক ব্যবসায়ী কার খুঁটির জোরে এসব করে যাচ্ছে এ নিয়ে সচেতন মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদার রয়েছে। যার কারণে তারা বেপরোয়াভাবে মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে। এসব মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে নিয়ে গেলেও পরে তারা আবার সহজে জামিনে চলে আসে। মাদক ব্যবসায়ীরা দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে মাদক সেবন করাসহ বিক্রি করে থাকে।

শাহতলী গ্রামবাসী ও সচেতন মহলের ন্যায় আমাদেরও প্রশ্ন, কোন্ খুঁটির জোরে এখানকার মাদক ব্যবসায়ীরা এতোটা বেপরোয়া। এদেরকে ধরার পর কেবল জেল হাজতে না পাঠিয়ে রিমান্ডে এনে গডফাদার কারা সেটা জানা দরকার। এটা না করলে শাহতলী গ্রামটি ক্রমশ যে স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে সেটা বললে মোটেও অত্যুক্তি হবে না। আমরা মনে করি, সব বেপরোয়া অপরাধীকে ধরার পাশাপাশি গডফাদারদেরকে চিহ্নিত করে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে হবে। আর করতে হবে পুলিশ-জনতার সচেতনতামূলক সভা।এতে নির্দিষ্ট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হতে বাধ্য। কেননা এ সংক্রান্ত বহু প্রামাণ্য নজির রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়