বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫  |   ৩৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫১

হল সুপারই যদি উত্তর বলে দেয়-

অনলাইন ডেস্ক
হল সুপারই যদি উত্তর বলে দেয়-

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠসহ বহু গণমাধ্যমে ‘শাহরাস্তিতে পরীক্ষা কেন্দ্রে উত্তর বলে দেয়ার দায়ে প্রধান শিক্ষক আটক’ বিষয়ক সংবাদটি দেখে অনেকেই বিম্মিত হয়েছেন। কারণ তিনি শুধু একটি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নন, তিনি তো হল সুপারেরও দায়িত্বে ছিলেন।

চাঁদপুর কণ্ঠের সংবাদটিতে মো. মঈনুল ইসলাম কাজল লিখেছেন, শাহরাস্তি নিজমেহের মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের উত্তর বলে দেওয়ার অপরাধে দেবকরা মারগুবা ড. শহীদুল্লাহ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজমুল হককে আটক করা হয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল ২০২৫) এসএসসি গণিত পরীক্ষা চলাকালীন এমসিকিউর উত্তর শিক্ষার্থীদের বলে দেওয়ার সময় বিষয়টি এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদারের নজরে আসে। তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা সত্যতা নিশ্চিত করে। পরে হল সুপারের দায়িত্বে নিয়োজিত আজমুল হক তার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেন। দুপুর ১২ টায় শাহরাস্তি থানা পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদার জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক দায় স্বীকার করেছেন, তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে। কেদ্র সচিব মো. আযাদ হোসেন জানান, হলে দায়িত্বে থাকা তিন শিক্ষককে আগামী পরিক্ষাগুলো থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। শাহরাস্তি থানার ওসি আবুল বাসার জানান, কেন্দ্র থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক আজমুল হককে আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

চাঁদপুরের কৃতী সন্তান, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী (২০০১-২০০৬) আ.ন.ম. এহছানুল হক মিলন পাবলিক পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে এবং কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে বসাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি দেশের নির্দিষ্ট কিছু কেন্দ্রে চুক্তিভিত্তিক পরীক্ষা পাস করিয়ে দেবার বিষয়টি চিরতরে বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কেন্দ্রগুলো থেকে বস্তায় বস্তায় নকল উদ্ধারের কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। তারপর নকলের ধরণ পাল্টেছে। নকল শিক্ষার্থীরা আগের মতো পরীক্ষার হলে নিয়ে গিয়ে করে না। কেননা হল সুপার, কেন্দ্র সচিবের মৌন সম্মতি কিংবা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতায় সকল পরীক্ষা কেন্দ্রে নয়, অনেক পরীক্ষা কেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই পরীক্ষার্থীদের উত্তর বলে দেয়, উত্তর সরবরাহ করে। তাই বলে হল সুপারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো প্রধান শিক্ষক উত্তর বলে দেবেন, সেটা তো ভাবা যায় না। এই অভাবনীয় কাজটিই করে শাহরাস্তির আজমুল হক আটক হলেন এবং আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হলেন। যেসব পরীক্ষার্থীকে উত্তর বলে দিয়ে তিনি উপকার (!) করতে চেয়েছিলেন, তারাই ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সাক্ষ্য দিয়ে তাকে ফাঁসিয়ে দিলো। শাহরাস্তির মতো এমন অনেক পরীক্ষার হলেই উত্তর বলে দেয়ার কাজটি নির্বিঘ্নে চলে বলে সচেতন-নীতিবান শিক্ষক ও অভিভাবক, এমনকি শিক্ষক নেতারাও গণমাধ্যমকে জানান। কিন্তু হাতেনাতে প্রমাণ জোগাড় করতে না পারার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরাও ব্যবস্থা নিতে পারে না এবং গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশ করা যায় না। এবার শাহরাস্তিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তীক্ষè নজরদারির কারণে যা হলো, সেটি যেনো অন্যত্রও হয় এবং এই ঘটনা থেকে সতর্ক থাকার বিষয়টি যেনো প্রতিটি পরীক্ষার হলে সঞ্চারিত হয়, সেটি আমরা প্রত্যাশা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়