বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৫, ১০:০৯

দীপিকর দ্বন্দ্ব

বিমল কান্তি দাশ
দীপিকর দ্বন্দ্ব

সমগ্র বাংলাদেশব্যাপি ঘটমান বর্তমান অত্যন্ত নৈরাশ্যব্যঞ্জক বটে। বাংলাদেশের সর্বত্র আজ স্বাধিকার প্রাপ্যতার অধিকার নিয়ে রাজপথে যে সমস্ত সংগ্রাম-আন্দোলন, ধর্ষণ-খুন-খারাবি, ডাকাতি-ছিনতাই, চাঁদাবাজি-দখলবাজি, মবোক্র্যাসি-আইনহীনতা এবং পাশাপাশি শয়তান-শিকারী অভিযান চলছে। যা প্রাচীন বঙ্গদেশ-বাংলা-পূর্ব পাকিস্তান ঐক্যে স্বাধীন বাংলাদেশের নিষ্কলুষ ঐতিহ্যের প্রতি নিদারুণ কটাক্ষ বটে। উৎকৃষ্ট মানবতার সাজে সজ্জিত হওয়া বাতাবরণে একদল কট্টর ধড়িবাজ অজ্ঞাত শক্তিতে বলীয়ান হয়ে এই কাজটি অবিরাম গতিতে করে যাচ্ছে। এ যেন ‘বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো’র আওতায় চলমান এক বিস্ময়কর অবস্থান থেকে আসা-যাওয়া করছে।

এক সময় পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে অতিশয় ঘৃণিত বৈষম্য বিরাজ করতো। যা এক সময় ঘোরতর গণ আন্দোলন থেকে ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে রূপান্তরিত হয় এবং মহান ভারত সরকারের সক্রিয় সহযোগিতায় মাত্র নয় মাসেই একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের একখানা জাতীয় পতাকা প্রাপ্ত হয়।

সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশে কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা এবং কিছু সংখ্যক অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ নিয়ে ‘জাসদ’ নামক একটি সরকারবিরোধী দল গঠিত হয়েছিল। যে দলের মূলমন্ত্র ছিল ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’। সেবারের নির্বাচনে উপস্থিত ভোটারের মাত্র ৬% ভোট পেয়ে তারা তৃতীয় স্থানে ছিল। পক্ষান্তরে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট ‘বৈষম্য বিরোধী’ আন্দোলনটি এক সময় ‘সরকার হটাও’ একদফা আন্দোলনে রূপ নেয়। ফলে সরকার ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। আর দেশে সরকার শূন্যতা সৃষ্টি হয়। ফলস্বরূপ ড. মো. ইউনুছকে আপদকালীন সরকার প্রধান তথা প্রধান উপদেষ্টা এবং অপর কয়েকজন ছাত্র আন্দোলনকারীকে সহ অন্য কয়েকজন রাজনীতিবিদকে অন্যান্য উপদেষ্টা মনোনীত করে নতুন মন্ত্রিসভা তথা বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়ক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। যে উপদেষ্টা সরকার অদ্যাবধি মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত স্ব-পদে বহাল আছেন। এখানে উল্লেখ্য যে, কতেক ছাত্র সমন্বয়ক মিলেমিশে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ নামক একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, যারা বরং বর্তমান সরকারের নিকটতম। কারণ তাদের প্রতিনিধি সরকারে নেতৃত্ব দিতেছেন।

অবয়বিক মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটাতে হলেই প্রয়োজন বস্তুনিষ্ঠ শিক্ষা। এই শিক্ষার প্রাঞ্জল্য এনে দেয় এক মাত্র মাতৃভাষায় বাল্যশিক্ষা। যা জ্ঞানার্জনের মূল ভিত শক্ত করে দেয়। অতঃপর যে কোনো শিক্ষাই মৌলিকত্বের প্রতি আকৃষ্ট হয়। আমাদের অবস্থান কিন্তু এই বাস্তবতার বিপরীত। ফলে শিক্ষায় কৃত্রিমতা এবং মানুষের মধ্যে যথার্থ ধর্ম বোধের পরিবর্তে পশুত্ব বোধের জাগরণ ঘটে। এতেই কিশোর সন্ত্রাসী সৃষ্টি হয়ে আজকের মানব (?) সমাজ মনুষ্যত্বে বন্ধ্যাত্ব বরণ করতে হয়েছে। এদেশের বহুমুখী প্রাথমিক শিক্ষা এবং শিক্ষানীতি নির্ধারকদের দ্বি-চারিতা এজন্যে বহুলাংশে দায়ী। সুস্থ জাতি গড়তে হলে অনতিবিলম্বে সর্বাগ্রে নৈতিকতা বহুল প্রাথমিক শিক্ষায় দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য। যাতে করে এদেশের শিক্ষায় শিষ্টাচার-ক্ষমাশীলতা-কর্তব্যপরায়ণতা জাগরিত হয়। ফলস্বরূপ যেন এ দেশে হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান, আস্তিক-নাস্তিক, মুক্ত চিন্তক-সংকীর্ণ চিন্তক সকলেই নাগরিকত্ব বোধের স্বকীয়তায় বিচরণ করতে পারে।

বিমল কান্তি দাশ : কবি ও প্রাবন্ধিক; অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষক, বলাখাল যোগেন্দ্র নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজ, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়