বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৫, ০৮:২৮

কচুয়ায় মোঘল আমলের নিদর্শন বখতিয়ার খাঁ জামে মসজিদ

মো. নাছির উদ্দিন
কচুয়ায় মোঘল আমলের নিদর্শন বখতিয়ার খাঁ জামে মসজিদ

কচুয়া উপজেলার উজানি গ্রামে মোঘল আমলে তৈরি হয়েছে বখতিয়ার খাঁ জামে মসজিদ। মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ‘র শাসনামলে ১১১৭ হিজরি তথা ১৭০৫ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রায় ৩ শ' ২০ বছর পূর্বে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে।

তৎকালীন সময়ে ফৌজদার বক্তার খাঁ নামে এক ব্যক্তি ওই এলাকা শাসন করতেন। তিনিই ওই মসজিদটি নির্মাণ করেন বলে মসজিদের শিলালিপি পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হওয়া যায়। স্থানীয়দের মতে, কোনো এক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এলাকাটি জনশূন্য হয়ে গেলে মসজিদটিও ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে ক্বারী ইব্রাহীম (রহ.) নামে একজন প্রখ্যাত মুসলিম সাধক এ এলাকায় এসে মসজিদটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পান। তিনি মসজিদটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নামাজ আদায় করা শুরু করেন।

মসজিদের বর্তমান পেশ ইমাম মাওলানা আবু বকর জানান, এই মসজিদের ইতিহাস পর্যালোচনা করে যতটুকু জানা যায়, গায়েবিভাবে মসজিদটি হওয়ার যে গল্প কাহিনী সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। মূলত মসজিদটি মোঘল আমলে তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা যায়। যা পরবর্তীতে প্রখ্যাত মুসলিম সাধক ক্বারী ইব্রাহীম (রহ.) আবিষ্কার করেন।

মোঘল আমলে এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদে ১৫-২০ জন মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারতেন। স্থানীয়দের অর্থায়নে মসজিদটি কালক্রমে বেশ কিছু সংস্কার করা হয়। বর্তমানে মসজিদে কয়েক শ' মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। প্রতিদিন মসজিদটি দেখার জন্যে দূরদূরান্ত থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে।

স্থাপত্য শিল্পের প্রাচীনত্ব ও গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৯৮৭ সালের পয়লা অক্টোবর বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মসজিদটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে।

চাঁদপুর জেলার ব্র্যান্ডিং বুক 'ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে' এই মসজিদটি সম্পর্কে কচুয়া অধ্যায়ে একটি বিবরণ আছে। যেখানে মসজিদটি ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ করার তথ্য আছে। সে বইয়ে লিখা আছে, ঊনিশ শতকের মধ্যভাগে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দীর্ঘদিন এ মসজিদটি অব্যবহৃত ছিলো। পরবর্তীতে বিশিষ্ট আলেম ক্বারী ইব্রাহিম নতুন করে এই মসজিদটির সন্ধান পান এবং বনজঙ্গল পরিষ্কার করে মসজিদটিকে ব্যবহার উপযোগী করে তোলেন। কথিত আছে, একবার ক্বারী ইব্রাহীম দেখলেন, মসজিদের ভেতরে এক বাঘিনী তার বাচ্চাদের দুধ পান করাচ্ছে। তখন তিনি বাঘকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ''হে বাংলার বাঘ! এখানে মানুষের বসতি এসেছে। কাজেই তুমি তোমার বাচ্চাদের নিয়ে জঙ্গলে চলে যাও।'' তাঁর কথা শুনে বাঘ তার বাচ্চাদের ঘাড় কামড়ে ধরে লালমাই পাহাড়ের দিকে চলে যায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়