প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪১
খোশ আমদেদ মাহে রমজান
রমজান পুণ্যময় জীবন গড়ার সর্বোৎকৃষ্ট সিলেবাস

রমজানের উদ্দেশ্যই হচ্ছে মুমিনকে মুত্তাকী হিসেবে তৈরি করা। পুরো রমজান মাসটা নিয়ে গবেষণা করলে বাস্তবে তাই পরিলক্ষিত হয়। রমজান আসলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের মাঝে আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায়। বিশ্ব মুসলিম মননে পবিত্রতার স্নিগ্ধ হাওয়া যেনো প্রবাহিত হয়। সিয়াম পালনের উদ্দীপনায় উদ্দীপ্ত হয় দ্বীনদার মুমিন-মুত্তাকী। রমজানের প্রতিটি দিন ইবাদতের মধ্য দিয়ে কাটিয়ে দেয়ার আবহ সৃষ্টি হয়। রমজানের চাঁদ ওঠার সাথে সাথেই যেনো পরিবেশ বদলে যায়। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা প্রস্তুতি নিতে থাকে মসজিদে যেতে। জামাতের সাথে এশার নামাজ আদায়, এর পরপরই জামাতে বিশ রাকাত তারাবীহর নামাজ আদায়। কেউ খতম তারাবীহ আবার কেউ ছোট ছোট সূরা দিয়ে তারাবীহ পড়ে থাকেন। এরপর আবার শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় এবং সেহরী খাওয়া। এরপর ফজর নামাজ আদায় করা। অনেকে ভোর রাতে উঠে কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করেন। ফজর নামাজ পড়ে পবিত্র অবস্থায়ই নিদ্রা যান। এরপর দিনের শুরুতে জীবিকা নির্বাহের কাজে নেমে পড়েন। কেউ চাকুরি, কেউ ব্যবসা আর কেউ দিনমজুরি করেন। এসব কাজও যদি আমরা সততা, ন্যায়পরায়ণতা, বৈধ এবং নিষ্ঠার সাথে করি তাহলে এগুলোও ইবাদত। দুপুরে সময়মতো জোহর নামাজ আদায় করা, বিকেলে আছর নামাজ আদায় করা। আছর নামাজের পর অনেকে কোরআন তেলাওয়াত করেন আবার অনেকে ইফতারির প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকেন। বাসা-বাড়িতে ধর্মপ্রাণ নারীরাও অনুরূপভাবে ইবাদত-বন্দেগী ও সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। ইফতারের পরপরই মাগরিবের নামাজ আদায় করা। এরপর খানিকক্ষণ বিরতি দিয়ে আবার এশা ও তারাবীহর নামাজের প্রস্তুতি নিতে হয়। এমনিভাবে রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত মুসলমানগণ ইবাদতের মধ্যে নিয়োজিত থাকেন। মসজিদগুলোতে মুসল্লির ঢল নামে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা কোরআন শিক্ষার আসরে নিয়োজিত থাকে। বাসা-বাড়িতে কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করা হয়। এর বাইরে দান-সদকা, জাকাত-ফিতরা আদায় তো আছেই। এসব কিছু মিলে রমজান একজন মুসলমানের মনকে বিগলিত করে। আর প্রকৃত রোজাদার ব্যক্তি কখনো কারো সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয় না। কেউ যদি তার সাথে ঝগড়া করতে উদ্যত হয় তখন সে বলবে, আমি রোজাদার। প্রকৃত রোজাদার ব্যক্তি কাউকে কষ্ট দেয় না, কাউকে ঠকায় না, প্রতারণা করে না, মিথ্যা শপথ করে না। সব কিছু মিলে রমজানের এই সিলেবাস একজন মুমিনের পুণ্যময় জীবন গড়ার সর্বোত্তম পন্থা।