সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৫, ২২:৪১

সাবেক এমপি হারুন অর রশিদ খানের মাগফেরাত কামনায় আজ মসজিদ মাদ্রাসায় দোয়ার আয়োজন

অনলাইন ডেস্ক
সাবেক এমপি হারুন অর রশিদ খানের মাগফেরাত কামনায় আজ মসজিদ মাদ্রাসায় দোয়ার আয়োজন

চাঁদপুর-৩ আসনের দুবারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য, বিশিষ্ট সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী মরহুম আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ খানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় তাঁর পরিবারের উদ্যোগে আজ সোমবার (১০ মার্চ ২০২৫) মসজিদ, মাদ্রাসায় দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। সাবেক এই সংসদ সদস্য ২০০৩ সালের ৫ নভেম্বর, ৯ রমজান ঢাকার ইন্দিরা রোডস্থ নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে তাঁর সন্তানরা প্রতি বছর ৫ নভেম্বর ও প্রতি রমজান মাসের ৯ম রমজান মসজিদ, মাদ্রাসায় মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় মরহুম আলহাজ্ব হারুন-অর রশিদ খানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় আজ ৯ রমজান সোমবার তাঁর সন্তানরা মরহুমের জন্মস্থান সফরমালী এলাকা ও মতলবসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় মিলাদ ও দোয়া এবং অসহায় গরিব মানুষদের মাঝে ইফতার ও ঈদ উপহার বিতরণের আয়োজন করেন। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আলহাজ্ব হারুন-অর রশিদ খান ১৯৩৪ সালের ১ নভেম্বর চাঁদপুর সদর উপজেলার তৎকালীন আশিকাটি ইউনিয়নের সফরমালী গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আলহাজ্ব সেকান্তর খান। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী আলহাজ্ব মিজানুর রহমান চৌধুরীর অনুপ্রেরণায় রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেন। তিনি চাঁদপুর-৩ আসন (মতলব দক্ষিণ ও চাঁদপুর সদরের পূর্বাঞ্চল) দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক ও দানবীর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি চাঁদপুর ও মতলব উপজেলায় বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও স্কুল-কলেজে শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ খান সফরমালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও চেয়ারম্যান পদে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত অধিষ্ঠিত থেকে এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে ও উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। উল্লেখ্য, মরহুম আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ খান চাঁদপুর রেলওয়ে হকার্স মার্কেট প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে অন্যতম উদ্যোক্তা ও উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৬০ সালে সফরমালী উচ্চ বিদ্যালয় মেঘনার করাল গ্রাসে পতিত হলে তাঁর বাবা মরহুম আলহাজ্ব সেকান্তর খানের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানটি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া হারুনুর রশিদ খান সফরমালী বাজারের প্রতিষ্ঠাতা। বাজারের আয়ের অংশ দুঃস্থ মানবতার সেবা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে উৎসর্গ করেছেন, যা এখন পর্যন্ত চলমান রেখেছেন তাঁর সুযোগ্য সন্তানরা। অদ্যাবধি জেলার প্রায় শতাধিক মসজিদ, মাদ্রাসা উক্ত আয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে এবং চাঁদপুর জেলার বাজারকেন্দ্রিক শত শত পরিবারের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে জীবন-জীবিকা পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া তিনি মুন্সিরহাট দারুল উলুম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, মুন্সিরহাট কলেজের আজীবন সদস্য, মতলব বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। তাঁর পিতা মরহুম আলহাজ্ব মো. সেকান্তর খান এবং মাতা জরিনা খাতুন। ছোটবেলা থেকেই তাঁর ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি মনোযোগ ছিলো। প্রথমেই নারায়ণগঞ্জে তিনি তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ১৯৮৮ সালে তিনি সর্বপ্রথম মতলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বিকাশে জরিনা বৃত্তি প্রকল্প চালু করেন। প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারে তাঁর এই ভূমিকা ছিলো প্রশংসনীয়। তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি চাঁদপুর গণি স্কুল হইতে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তিনি সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। যুদ্ধ চলাকালীন এলাকার যুবসমাজকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্যে উৎসাহ প্রদান এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণে সকল প্রকার সহযোগিতা করেন। যুদ্ধকালীন প্রশিক্ষণ নিতে তিনি ভারত চলে যান এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক সহযোগিতা করেন। ১৯৮২-৮৮ পর্যন্ত বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ঢাকা’র সদস্য, ১৯৭০-৮৬ সাল পর্যন্ত হাজী মহসিন জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি, ১৯৭৮-৮৮ সময়ে ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সমিতির সহ-সভাপতি ও উপদেষ্টা ছিলেন। হারুন-অর-রশিদ খান পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জে তাঁর ব্যবসা পরিচালনা করে ধীরে ধীরে রাজনীতিতে যোগদান করেন। ১৯৮৬-৮৮ সালে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচন হন। সংসদ সদস্যকালীন বিভিন্ন সময়ে সকল স্তরে নেতা-কর্মীদের ও সাধারণ মানুষের অত্যন্ত আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। চাঁদপুর জেলায় দল-মত-নির্বিশেষে তিনি ছিলেন সকলের মধ্যমণি ও সততার নিদর্শন ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়