প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০১
গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক জুম মিটিং
সিলেট প্রদেশ প্রতিষ্ঠার দাবি : অযৌক্তিক মনে করেন জনগণ

“সিলেট বিভাগ নিয়ে কোনো টালবাহানা বিশ্বময় গ্রেটার সিলেটবাসী মেনে নেবে না”। সিলেট বিভাগ নিয়ে জালালাবাদ প্রদেশ বাস্তবায়নের দাবিতে গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি রোববার, লন্ডন সময় বিকেল ৩টায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিশিষ্টজনদের অংশগ্রহণে এক আন্তর্জাতিক জুম মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে। খবর বাপস নিউজ।
গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ময়নুল হক চৌধুরী হেলালের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশ্বের প্রায় ৪০টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন বলে বাপস নিউজকে জানানো হয়েছে।
সভায় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট পৌরসভা ও সিলেট সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বাবরুল হোসেন বাবুল, আমেরিকার ডিস্কেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জিয়াউদ্দিন আহমদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ আখতারুল ইসলাম, রানা ফেরদৌস চৌধুরী, ইউকে বিসি-এর সাবেক প্রেসিডেন্ট এম এ মুনিম ওবিই, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মিঠু চৌধুরী, গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকে কেন্দ্রীয় কনভেনর সাংবাদিক মকিস মনসুর, গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ছোটন, সহ-সভাপতি অলিউদ্দিন শামীম, আব্দুল মোনেম জাহেদী ক্যারল, সৈয়দ হাসান আহমদ, শেখ ফারুক আহমদ, কেন্দ্রীয় ট্রেজারার রফিকুল হায়দার ,সহ-সম্পাদক আবুল হোসেন, ইয়াকুব কামালী, ইসবাহ উদ্দিন, ফয়জুল হক, প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি জাহাংগীর খান, আশিকুর রহমান, অস্ট্রেলিয়া থেকে ইঞ্জিনিয়ার রাসেল আহমদ, বাংলাদেশ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মহিব উদ্দিন, ট্রেজারার শামীম আলম কোরেশী, এবিসি নিউজের চেয়ারম্যান আলাউর রহমান খন্দকার, ফ্রান্স কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুল বাসিত, স্পেনের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমদ, পর্তুগাল থেকে আবুল হাসনাত, সাংবাদিক সাহাব উদ্দিন, প্রফেসর মিছবাহ উদ্দিন, দুবাই থেকে ছয়ফুল ইসলাম, নিউইয়র্ক বাফেলো থেকে আব্দুল মুক্তাদির, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী মুরাদ, নিউইয়র্ক থেকে শ্যমল কান্তি চন্দ ও ইংল্যান্ড জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদেক আহমদ, বাহরাইন থেকে নজরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও এ শামীম আহমদসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
সভায় সিলেট বিভাগ নিয়ে জালালাবাদ প্রদেশ বাস্তবায়নের দাবিতে গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সিলেট শাখার পক্ষ থেকে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) সিলেটের গোল টেবিল বৈঠকে বাংলাদেশের টিমের সবাইকে
যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো সহ আগামী দিনের নানা কর্মসূচি নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় বক্তারা 'সিলেট বিভাগ নিয়ে কোনো টালবাহানা মেনে নেওয়া হবে না, চট্টগ্রামের সাথে সিলেটকে যুক্ত করার চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে'।
‘আমরা সিলেট বিভাগ নিয়ে জালালাবাদ প্রদেশ চাই’, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ মতে বাংলাদেশকে যদি কয়েকটি প্রদেশে ভাগ করতে হয়, তাহলে বৃহত্তর সিলেটের চারটি জেলা নিয়ে একটি প্রদেশ গঠন করা হবে যুক্তিযুক্ত। চট্টগ্রামের সাথে যুক্ত করা হবে অবাস্তব ও অযৌক্তিক। বৃহত্তর সিলেটের ভৌগোলিক অবস্থা ও লে-আউট আলাদা--একথা সরকারের বোঝা উচিত, সিলেট থেকে চট্টগ্রামের চেয়ে ঢাকায় বরং যাওয়া যাবে দ্রুত। তাই চট্টগ্রামের সাথে সিলেট কানেক্ট করে প্রদেশ করলে সিলেট হবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চিত। এরকম হটকারী, অবাস্তব এবং অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত কোনো অবস্থাতেই বিশ্বময় বসবাসকারী সিলেটের মানুষ মেনে নেবে না। ১৯৪৭ সালে আমরা সিলেট বিভাগ রেফারেন্ডারের মাধ্যমে বর্তমান বাংলাদেশে আসে, তখন থেকেই সিলেটের আলাদা মর্যাদার অংগীকার ছিলো বলে উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, বৃহত্তর সিলেট সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট নিয়ে সিলেট বিভাগ গঠিত। আমাদের কাছে ‘জালালাবাদ’ নামেও পরিচিত। হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর নামানুসারে এ নামকরণ।
এ নামের ব্যাপক পরিচিতি ঘটে, যখন ষাটের দশকে ‘জালালাবাদ’ প্রদেশ আন্দোলন দানা বেঁধে উঠে।
আন্দোলনকারীদের যুক্তি ছিল, যেহেতু ১৯৪৭ সালে গণভোটের মাধ্যমে সিলেট পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ দেয়, তাই সিলেটের বিশেষ মর্যাদা পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই ছিল। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ সহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তথা রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসা বাণিজ্য, শিক্ষা- দীক্ষা, জ্ঞান-গরিমা, সাংস্কৃতিক ইতিহাস ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে এমনকি প্রবাসের মাটিতে ক্যাটারিং সেক্টর ও ব্যবসা বাণিজ্য এবং বিশ্বময় বাংলাদেশ কমিউনিটির কল্যাণে ব্যাপক ভূমিকা রাখা সহ বাংলাদেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনে গ্রেটার সিলেটবাসীর অবদান অনস্বীকার্য।
সিলেট বাংলাদেশের অন্যতম সম্পদশালী এলাকা। সিলেটের খনিজ তেল,গ্যাস, পাথর, চা শিল্প, পর্যটন ও দেশের রেমিটেন্সের সিংহভাগই আসে প্রবাসী সিলেটবাসীর মাধ্যমে বলে উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান সরকার যদি প্রাদেশিক সরকার গঠন করে, তাহলে সিলেটের নাম আসবে সবার আগে।কারণ, সিলেটের মানুষের এই দাবি দীর্ঘদিনের। সিলেটবসীর ন্যায্য দাবি সিলেট প্রদেশ বাস্তবায়নের ক্যাম্পেইনে
দেশে বিদেশে সিলেটবাসীকে আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে। অনেক প্রবাসী সংবাদ সংস্থা বাপস নিউজকে বলেছেন, ছোট আয়তনের বাংলাদেশে যেখানে বিভাগেরই কোনো প্রকার প্রয়োজন নেই, সেখানে প্রদেশ দাবি পুরোপুরি অযৌক্তিক। তারা আরো বলেছেন, প্রদেশ কেন হবে? মাতাবারী বিভাগই বাতিল করে শুধু জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন এই পাঁচ ভাগে লোকাল সরকার থাকার কথা জানিয়েছেন।