বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৫

‘রাঙ্গামাটির রঙে চোখ জুড়ালো’

কাজী শাহাদাত
‘রাঙ্গামাটির রঙে চোখ জুড়ালো’

চার.

আমরা রাখিনি নয়নে, তিনি রেখেছেন নয়নে নয়নে

সভাপতি কাজল তাঁকে সিদ্দিকুর রহমান নয়ন হিসেবেই আমার (লেখক)-এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ফেসবুকে তাঁর আইডি হচ্ছে 'বি এম নয়ন প্রেস'। শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের রাঙ্গামাটি ভ্রমণকালে তাঁকে দেখেছি কিছুটা লাজুক লাজুক ভাবে। সিনিয়রদের সাথে দূরত্ব বজায় রেখেই তিনি চলেছেন। তবে যেভাবে হোক তিনি তাঁর মোবাইল ফোন ক্যামেরায় লেখকসহ সিনিয়রদের বিশেষ মুহূর্তগুলো ধারণ করেছেন। তাঁকে রাগী মনে হলেও আসলে কিন্তু তা ছিলো না। ভ্রমণের আনুষ্ঠানিক সমাপনী পর্বে সবার স্ত্রীকে উপহার দিয়ে র‌্যাফেল ড্রও শেষ করা হলো। জানা গেলো, নয়নের স্ত্রী উপহার পান নি, অথচ উপহার কিন্তু একটি উদ্বৃত্ত ছিলো। সেমতে তাঁর স্ত্রীকে ডরে ডরে ডাকা হলো উপহার নিতে। নয়নের কাছে সভাপতি অ্যাপোলজি চাইবার চেষ্টামাত্রই নয়ন এটিকে স্বাভাবিক ভুল হিসেবে মেনে নিয়েছেন, উদ্দেশ্যমূলক ভুল ভেবে রাগান্বিত হন নি। তবে তাঁর স্ত্রী উপহার গ্রহণের সময় তাঁর মোবাইল হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ছবি তুলতে বিলম্ব হয়েছে, সেজন্যে বাসায় ফিরে স্ত্রীর কোনো কথা শুনতে হয়েছে কি না সেটা জানা যায় নি।

কাপ্তাই হ্রদে বিতর্ক একাডেমির শিক্ষার্থী!

শনিবার (৮ জানুয়ারি ২০২৫) সকালে কাপ্তাই হ্রদে ভ্রমণ করার শুরুতে ভ্রমণসঙ্গী মোসাদ্দেক হোসেন জুয়েল জানতে চাইলেন, লেখক বিতর্ক একাডেমির সাথে সংশ্লিষ্ট কি না। হ্যাঁ বলতেই তাঁর মেয়ে জুঁই নৈকট্য অনুভব করলো। তাঁর এই মেয়েকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত চার মাস হাজীগঞ্জ হতে বিতর্ক একাডেমির ক্লাসের ভেন্যু ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চাঁদপুর ক্যাম্পাস পর্যন্ত

যাতায়াত করেছেন তাঁর স্ত্রী। তাই জুয়েল ভিডিও কলে তাঁর স্ত্রীর সাথে আমার কথা বলিয়ে দেয়াতেই উচ্ছ্বাস খুঁজতে চাইলেন। লেখক তাঁর সাথে কথা বলে জানতে পারলেন, তিনি অসুস্থ বলে আনন্দ ভ্রমণে আসতে পারেন নি। তাই জুঁই ও তার ছোটো বোনকে সাথে নিয়ে বাবা হিসেবে জুয়েল এসেছেন ভ্রমণে। স্ত্রীকে সাথে আনতে না পারার কষ্ট তাই কম-বেশি ফুটে উঠেছে জুয়েলের অবয়বে। বাস-ড্রাইভারের পেছনে সরু আসনে বসে সময় কাটিয়েছেন কম-বেশি নির্লিপ্ততায়।

সে কী অপেক্ষার যন্ত্রণা!

সভাপতি কাজল জানিয়েছেন, শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের ভ্রমণ দলের সঙ্গে রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক শুক্রবার রাতেই হোটেলে এসে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। কিন্তু পথিমধ্যে জেলা প্রশাসক নিজেই জানিয়েছেন, এক উপদেষ্টার রাঙ্গামাটি আগমনে তিনি প্রোটোকলজনিত ব্যস্ততাসহ অনিবার্য কারণে শুক্রবার রাতে আসতে পারবেন না। তবে তাঁর পক্ষে সহকারী কমিশনার তামজিদ হোসেন হোটেলে গিয়ে সাক্ষাৎ করবেন। তামজিদ সাহেব আসলেন এবং জানালেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় শনিবার রাতে হোটেলে দেখা করতে আসবেন। পরদিন (শনিবার) জেলা প্রশাসক রাঙ্গামাটি জেলা সদর থেকে প্রায় একশ' কিলোমিটার দূরবর্তী লংঘদুতে গিয়ে ফিরে আসতে দেরি হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, রোববার সকাল ১০টায় তিনি হোটেল লবিতে এসে শাহরাস্তি প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করে তারপর তাঁর অফিসে যাবেন। এতে অপেক্ষার যন্ত্রণা বেড়েছে। অবশেষে সে যন্ত্রণার নিরসনে জেলা প্রশাসক মহোদয় রোববার ঠিক সকাল ১০টাতেই আসলেন। সভাপতি সহ অন্য নেতৃবৃন্দকে তাঁর পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানালেন। অভিভূত হলেন সকলে। লেখককে তাঁর পাশে বসিয়ে কথা শুরু করলেন, এক মিনিট সময়ও পার হয়নি, এমন সময় মোবাইল ফোনে জানতে পারলেন পার্বত্য উপদেষ্টাকেন্দ্রিক তাঁর ওইদিনের ব্যস্ততার কথা। সাথে সাথে উঠে দাঁড়ালেন এবং 'আপনাদের সাথে সার্কিট হাউসে দুপুরে তো দেখা হচ্ছেই' বলে হোটেল লবী থেকে প্রস্থান করলেন।

কিছুক্ষণের জন্যে উন্মুক্ত বিহঙ্গ

সভাপতি শনিবার রাতেই জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে ১০টায় সাক্ষাতের পর আমরা দেড়টার সময় মালামালসহ হোটেল ত্যাগ করে বাসযোগে সার্কিট হাউসে যাবো। তার পূর্বে আপনারা ২-৩ ঘণ্টা যে সময় পাবেন, সে সময়ে দলগতভাবে নয়, যার যার ইচ্ছেমত রাঙ্গামাটি শহরটা ঘুরে দেখবেন। তা-ই হলো।

আবাসিক হোটেলের নিখুঁত সেবা

রাঙ্গামাটি জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে দোয়েল চত্বর সংলগ্ন হোটেল স্কয়ার পার্কে শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের আনন্দ ভ্রমণে অংশগ্রহণকারীবৃন্দ দুরাত কাটিয়েছেন হোটেল কর্তৃপক্ষের নিখুঁত সেবায়। রুম ভাড়াতেও পেয়েছেন অনেক ডিসকাউন্ট। আর পার্শ্ববর্তী অন্নপূর্ণা রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায়নি প্রত্যাশিত সেবা। ভাবতে অবাক লাগে, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ঠিক করা এই রেস্তোরাঁয় বাসি খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে, আর উচ্চমূল্য তো রাখা হয়েছেই। এ কথা জেনে জেলা প্রশাসন নিয়োজিত অভিজ্ঞ গাইড রমজান সাহেব বাবুর্চি দিয়ে অন্যত্র রান্না করে আবাসিক হোটেলেই সুলভ মূল্যে দ্বিতীয় দিনের রাতের খাবার ও শেষদিন সকালের নাস্তার যে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, তাতে ছিলো না কারো অতৃপ্তির অভিযোগ।

স্কয়ার পার্ক হোটেলের মালিক নেয়াজ আহমেদ সাহেব শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সভাপতিসহ অন্য নেতৃবৃন্দের সাথে শোভন আচরণ করেছেন, সকলকে চমৎকার আতিথেয়তা প্রদর্শন করেছেন। একটা ভালো অভিজ্ঞতা নিয়েই এই হোটেল থেকে শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের আনন্দ ভ্রমণে অংশগ্রহণকারীবৃন্দ রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) দুপুর ২টার পূর্বে রাঙ্গামাটি সার্কিট হাউসের উদ্দেশ্যে দুটি বাসযোগে রওনা করে।

(চলবে)

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়