প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৩
ঢাকায় মলম পার্টির ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব খোয়ালেন আহাম্মদ
ঢাকা শহরের ব্যস্ততম এলাকায় সক্রিয় মলম পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়ালেন দোহার উপজেলার নারিশা গ্রামের আহাম্মদ (৫৫)। বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্ত্রী হাওয়া বেগমের বিল পরিশোধের জন্য এক লাখ টাকা নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু গুলিস্তানে নেমে হাসপাতালের গাড়িতে উঠতে যাওয়ার সময় সংঘবদ্ধ প্রতারকদের হামলার শিকার হন।
|আরো খবর
ঘটনার বিস্তারিত: গত ২৯ জানুয়ারি, আহাম্মদের স্ত্রী হাওয়া বেগম মারাত্মক ডায়াবেটিসজনিত জটিলতায় ঢাকার বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে আট দিনের চিকিৎসা শেষে ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে চিকিৎসা, ওষুধ ও সিট ভাড়াসহ হাসপাতালের বিল দাঁড়ায় এক লাখ টাকারও বেশি।
এই বিল পরিশোধের জন্য আহাম্মদ স্ত্রীকে হাসপাতালে রেখে বাড়িতে যান এবং এক লাখ টাকা সংগ্রহ করেন। সকালবেলা টাকা হাতে নিয়ে তিনি নারিশা থেকে বাসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। গুলিস্তানে নেমে হাসপাতালের গাড়ির দিকে এগোতেই ঘটে বিপত্তি।
মলম পার্টির ফাঁদে সর্বস্ব লুট: গুলিস্তানের ব্যস্ত রাস্তায় হাঁটার সময় হঠাৎ দুই অপরিচিত ব্যক্তি তাকে ঘিরে ধরে। তাদের একজন আচমকা আহাম্মদের চোখে ঝাঁঝালো মলম লাগিয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে চোখে অন্ধকার দেখেন আহাম্মদ এবং কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রতারক চক্র তার পকেট থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়।
চোখ জ্বালাপোড়া করতে থাকায় তিনি রাস্তার পাশে বসে পড়েন। পরে এক পথচারী শামীম নামে এক ব্যক্তি এগিয়ে আসেন এবং তাকে সহায়তা করেন।
পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ও বাড়ি ফেরা: অবস্থার অবনতি হলে আহাম্মদের মোবাইল ফোনে তার মামা শ্বশুর শাহাবুদ্দিন কল করেন। তখন শামীম ফোন রিসিভ করে পুরো ঘটনার বিবরণ দেন। শাহাবুদ্দিনের নির্দেশনায় শামীম আহাম্মদকে নিয়ে দোহারগামী বাসে তুলে দেন এবং গ্রামের বাড়ি নারিশায় পৌঁছে দেন।
মলম পার্টির দৌরাত্ম্য, উদ্বেগে সাধারণ মানুষ:রাজধানীতে মলম পার্টির দৌরাত্ম্য ক্রমশ বাড়ছে। সাধারণ পথচারীরা আতঙ্কে থাকেন, কখন কার কী ঘটে যায়! প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এ ধরনের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন, অথচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।
ভুক্তভোগী আহাম্মদ এ ঘটনার পর এখনো শারীরিকভাবে দুর্বল এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি এই প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকায় কীভাবে দিনের আলোয় প্রতারণার ঘটনা ঘটে? সাধারণ মানুষ কি কখনো নিরাপদ হবে? প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ছাড়া এই চক্র নির্মূল হবে তো? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ভুক্তভোগী সাধারণ জনগণ।
ডিসিকে/এমজেডএইচ