শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৪

এটা গুরু পাপের জন্যে লঘু দণ্ড নয় তো?

অনলাইন ডেস্ক
এটা গুরু পাপের জন্যে লঘু দণ্ড নয় তো?

চাঁদপুর শহরে সরকারি টেকনিক্যাল হাই স্কুল সংলগ্ন এলাকায় সরকারি খাল বালু দিয়ে ভরাট করে তা দখল করে ফেলেছে ভূমিদস্যু চক্র। সেখানে নির্মাণ কাজও শুরু করে দিয়েছে। এভাবে সরকারি খাল ভরাট করে নির্মাণ কাজ করায় রনি গাজী নামে এক ভূমিদস্যুকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। যেটাকে গুরু পাপের জন্যে লঘু দণ্ড হিসেবে মনে করছেন কেউ কেউ।

চাঁদপুর শহরের ১৩নং ওয়ার্ডের টেকনিক্যাল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার একমাত্র সরকারি খালটির পাড়ের বেশিরভাগ অংশ দখল করে এবং পাশে ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তিসহ বিক্রি করে দেন ওয়্যারলেস এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু ইবু গাজী। ইবু গাজী জনৈক গিয়াসউদ্দিনের নিকট তা বিক্রি করেন। পরে তিনি সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ করতে বালু দিয়ে ভরাটের সময় পাশের খালটিও ভরাট করে ফেলেন। এটি নিয়ে স্থানীয় জনগণের মাঝে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে এটি প্রশাসনের নজরে পড়ে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি ২০২৫) দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল ইমরান সেখানে উপস্থিত হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

এ সময় তিনি জানতে পারেন, টেকনিক্যাল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সরকারি খাল দখল ও বালু দিয়ে ভরাট করে নির্মাণ কাজ করছেন ওয়্যারলেস এলাকার জনৈক রনি গাজী। পরে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে জমি ও সরকারি জলাশয় দখল, বিনা অনুমতিতে শ্রেণী পরিবর্তনের চেষ্টা আইন ২০০০-এর ৫ ধারা ভঙ্গের কারণে ৮ ধারায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, সরকারি জায়গা দখল করে শ্রেণি পরিবর্তন করার অপরাধ স্বীকার করায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া সন্ধ্যার মধ্যে খাল থেকে বালু উত্তোলন করে খালের পানি চলাচল স্বাভাবিক করবেন বলে রনি গাজী উপস্থিত সকলের সামনে প্রতিশ্রুতি দেন। জেলা প্রশাসনের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

চাঁদপুর শহরের ওয়্যারলেস এলাকা ও সংলগ্ন চার পাশ গত প্রায় দু দশক ধরে ভূমিদস্যুদের অভয়ারণ্য হিসেবে কথিত ও পরিচিত। এ সময়টাতে এই এলাকায় ‘শেখ’, ‘গাজী’, ‘বরকন্দাজ’ ইত্যাদি বংশীয় কিছু লোকের প্রভাব-প্রতিপত্তি ও ক্ষমতার দাপটে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে এবং জনপ্রতিনিধিদের কেউ দাঁত বসানোর সুযোগ পায় নি। এই এলাকায় চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলদারিত্বে নিরীহ সাধারণ মানুষের জায়গা ক্রয়-বিক্রয় এবং স্থাপনা নির্মাণ ছিলো কষ্টকর ও ব্যয়বহুল বিষয়। সেই এলাকায় চাঁদপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জনৈক রনি গাজীকে সরকারি খাল দখলের মতো অপরাধের জন্যে জরিমানা করার ঘটনা ঘটিয়েছেন, যেটা বিস্ময়করই বটে। এটাকে যদি স্মরণকালের মধ্যে উল্লেখযোগ্যও বলা হয়, তাতে অত্যুক্তি হবে বলে মনে হচ্ছে না। তবে গুরু পাপের জন্যে রনি গাজীকে লঘু দণ্ড প্রদান করা হয়েছে বলে কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন। অপরাধ স্বীকার ও খাল দখলমুক্ত করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করায় হয়তো বিচারক দয়াপরবশ হয়ে এই লঘু দণ্ড দিয়েছেন। এমতাবস্থায় ভূমি কর্মকর্তাদের ফলোআপ করতে হবে এবং ভূমিদস্যুতা, অবৈধ দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। সাথে সাথে ইন্ধনদাতা, আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যদের আইনের আওতায় আনার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে মাথায় রাখতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়