বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৬

স্বর্ণখোলা রোডের ধোঁয়া সমস্যা: কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর কতদিন?

ময়লার আগুনে পুড়ছে স্বাস্থ্য

মো. জাকির হোসেন
ময়লার আগুনে পুড়ছে স্বাস্থ্য
ছবি : স্বর্ণখোলা রোড ও বাসস্ট্যান্ডের ধোঁয়া।

স্বর্ণখোলা রোড বাসস্ট্যান্ডের ধোঁয়া সমস্যাটি এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য শুধুই একটি অসুবিধা নয়; এটি একটি মানবিক সংকটে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী ধোঁয়া ও বায়ু দূষণের কারণে শ্বাসকষ্ট, চোখের জ্বালা এবং স্বাস্থ্যগত অন্যান্য সমস্যার শিকার হচ্ছেন। একাধিকবার স্থানীয় জনগণ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালেও তা শুধুমাত্র আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ থেকেছে।

প্রথমে সমস্যা শুরু হয়েছিল অল্প ধোঁয়া দিয়ে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের চোখ এড়িয়ে তা এখন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। বাসা-বাড়িতে থাকা দুরূহ হয়ে উঠেছে, বাইরে চলাফেরা করাও দুষ্কর। শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থ ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। চিকিৎসকরা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, এই ধোঁয়া দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা: সমস্যা বাড়ানোর মূল কারণ স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এ বিষয়ে নীরব। কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া শুধু জনগণের হতাশাই বাড়াচ্ছে না, বরং জনগণের নিরাপত্তা ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বাসিন্দাদের দাবি, এই সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হলে প্রথম পর্যায়েই এটি নিয়ন্ত্রণ করা যেত। এখন অবস্থা এমন হয়েছে যে জনগণের ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে, এবং তারা মানববন্ধন বা বিক্ষোভের মতো কর্মসূচির দিকে এগোচ্ছে।

সমস্যার সমাধানে কি করা উচিত?:

১. তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপ: ধোঁয়া উৎপন্নের একমাত্র উৎস হলো শহরের ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো। এই কার্যক্রম দ্রুত বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে ধোঁয়া ও বায়ু দূষণের সমস্যা থেকে জনগণ মুক্তি পেতে পারে।

২. পরিবেশ মনিটরিং: বায়ু দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত মনিটরিং এবং রিপোর্ট প্রকাশ করা দরকার।

৩. জনসচেতনতা: স্থানীয় জনগণকে সচেতন করে তাঁদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

৪. আইন প্রয়োগ: পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব এবং জনগণের প্রত্যাশা: প্রশাসনের উদাসীনতা যে কেবল জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে তা নয়, এটি জনগণের মধ্যে প্রশাসনের প্রতি আস্থার ঘাটতিও সৃষ্টি করছে। সরকারের কাজ শুধু উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন নয়; নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়ন নিশ্চিত করাও একটি মৌলিক দায়িত্ব।

আমরা আশাবাদী যে, স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এ সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। জনগণের দাবি উপেক্ষা করলে এর পরিণতি হতে পারে আরও জটিল। পরিবেশ সুরক্ষা এবং মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য প্রয়োজন যথাযথ পরিকল্পনা ও তাৎক্ষণিক বাস্তবায়ন।

এখনই সময়, কর্তৃপক্ষ এই সেনসিটিভ বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে স্থানীয় জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করবে। ধোঁয়ার করাল গ্রাস থেকে মুক্তি পেয়ে এলাকাবাসী সুস্থ ও নিরাপদ জীবনের প্রত্যাশা করছে।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়