বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫  |   ৩২ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৫, ২৩:৫২

ফলোআপ

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ঝরলো হাজীগঞ্জের সাঈফের প্রাণ

কামরুজ্জামান টুটুল
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ঝরলো হাজীগঞ্জের  সাঈফের প্রাণ

হাজীগঞ্জ দারুল উলুম আহমাদিয়া কামিল মাদরাসা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই বিদ্যুতায়িত হয়ে অকালে ঝরে গেলো মো. সাঈফ বিন আনোয়ার (১১) নামের স্কুল ছাত্রের জীবন। মাদ্রাসার ইন্টারনাল ওয়্যারিং লিকেজ থেকে এমন হয়েছে বলে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। দুর্ঘটনার পর মাদরাসার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও নতুন করে ওয়্যারিং করাতেই যার প্রমাণ মিলে। একমাত্র ছেলে হারিয়ে এখনো শোকে বিহবল নিহতের অসুস্থ বাবা ও গর্ভধারিণী মা'সহ পুরো পরিবার।

নিহতের মা ও বাবার সম্মতিতে কথা হয় নিহতের চাচা দেলোয়ার হোসেনের সাথে। তিনি জানান, আমাদের তিন ভাইয়ের দুটি ছেলে সন্তানের একজন এভাবে অকালে চলে গেলো। পুরো ভুলটি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের। তাদের ভুলের মাশুল আমরা দিচ্ছি। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের সন্তান চলে গেছে, মামলা করে আর কী হবে? তবে কষ্টকর বিয়ষ হলো, হাজার হাজার লোক সাঈফের কবর জিয়ারত ও বাসাতে সমবেদনা জানাতে এসেছে, এমনকি তার বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে স্কুলে মিলাদ ও দোয়া পর্যন্ত পড়ানো হয়েছে। কিন্তু মাদরাসার কেউ একবার আসলোও না।

হাজীগঞ্জ দারুল উলুম আহমাদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) কাজী আবু তাহের আহমাদ উল্লাহ্ জানান, ছেলেটি কীভাবে বিদ্যুতায়িত হয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। ঘটনা জানার পরে আমরা নতুন ওয়্যারিং করিয়েছি, আর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আবেদন দেয়া হয়েছে বিচ্ছিন্ন সংযোগ দিয়ে দিতে। নিহতের পরিবারের দাবি ঠিক নয় বলে অধ্যক্ষ বলেন, বড়ো মসজিদের ইমাম সাহেবসহ আমি ফজরের নামাজ শেষে নিজে কবর জিয়ারত করেছি।

চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর জেনারেল ম্যানেজার গোবিন্দ আগরওযালা জানান, ঘটনার পরেই আমাদের লোক সেখানে গেছে। যেখানে কিশোরটি বিদ্যুতায়িত হয়েছে সেটি মাদরাসার অভ্যন্তরীণ (ইন্টারনাল) লাইন থেকে হয়েছে। কোথাও না কোথাও এক জায়গায় লাইনে লিকেজ ছিলো বলে ছেলেটি বিদ্যুতায়িত হয়েছে।

হাজীগঞ্জ দারুল উলুম আহমাদিয়া কামিল মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সচিত্র রঞ্জন দাস জানান, শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনাটি মাদ্রাসা অধ্যক্ষ আমাকে আজকে (মঙ্গলবার) জানিয়েছেন। আগে মাদ্রাসার ওয়্যারিং নিরাপদভাবে করার জন্যে তাগিদ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত রোববার (২৫ মে ২০২৫) বিকেলে হাজীগঞ্জ দারুল উলুম আহমাদিয়া কামিল মাদ্রাসার টিনশেড একাডেমিক ভবনের টিনের চালে খেলার বল খুঁজতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারাত্মক আহত হন হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. সাঈফ বিন আনোয়ার। এর পরেই তাকে প্রথমে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রাতেই সেখানে সাঈফ মারা যায়। সে হাজীগঞ্জ পৌরসভার মকিমাবাদ গ্রামের কাসারি বাড়ির মো. আনোয়ার হোসেন লিটনের একমাত্র ছেলে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়