প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৪
টিসিবির ডিলারের ৬ মাসের কারাদণ্ড!
চাঁদপুর কণ্ঠের শাহরাস্তি ব্যুরো ইনচার্জ মো. মঈনুল ইসলাম কাজল গতকাল তাঁর পরিবেশিত এক সংবাদে লিখেছেন, টিসিবির কার্ডধারীদের মাঝে বিতরণের জন্যে নির্ধারিত টিসিবির লেবেলযুক্ত পণ্য অন্য লেবেল লাগিয়ে বিক্রি করার অপরাধে একজনকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর ২০২৪) রাতে সংবাদ পেয়ে শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসির আরাফাত বেরনাইয়া বাজারের দিহান ইভান স্টোরে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় দোকানটি থেকে তীর ব্র্যান্ডের ৪৫টি লেবেল উদ্ধার করা হয়। আর টিসিবি কার্ডধারীদের মাঝে বিতরণের জন্যে ১০ কার্টুন খোলা অবস্থায় দোকানটিতে পাওয়া যায়। খোলাবাজারে বিক্রয়ের জন্যে দোকানের তাকে সাজিয়ে রাখা ৬টি এক লিটার এবং ১টি দুই লিটার সয়াবিন তেলের বোতল পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে টিসিবি ডিলার দোকান পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম শাওন (৩৬) টিসিবি পণ্যের গায়ের লেবেল পরিবর্তন করে দোকানে খুচরা বিক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন। বিগত ৪-৫ মাস ধরে তিনি এভাবে লেবেল পরিবর্তন করে খোলাবাজারে বিক্রয় করছেন বলে জানান। শাওনের বাড়ি কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ছনুয়া গ্রামে। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
সাম্প্রতিক সময়ে আমরা চাঁদপুর জেলার যেসব ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংবাদ ছেপেছি, তাতে কোথাও কোনো বিচারককে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রদানের রায় দেয়ার তথ্য জানা যায়নি। এটা নিশ্চয়ই বড়ো ধরনের সাজা এবং এ ধরনের অপরাধীদের জন্যে কড়া সতর্ক বার্তা। আমরা কোনো বিচারকের বিচার কার্য নিয়ে মন্তব্য করার সুযোগ নিতে চাই না। তবে তাঁকে ধন্যবাদ জানাবার ফুরসতটুকু নিতে চাই।
আমাদের সমাজে যে ধরনের ভেজাল, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা হয়, তাতে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার অনিবার্যতা রয়েছে। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অপ্রতুলতা রয়েছে। কেননা ভ্রাম্যমাণ আদালতের জন্যেই কেবল ডেডিকেটেড নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নেই। যাঁরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্যে অ্যাসাইনমেন্ট পান, তাঁরা হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তথা এসি (ল্যান্ড) হিসেবে কিংবা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কোনো নির্দিষ্ট পদবী ধারণ করেন। তারা নির্দিষ্ট পদবীর দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্ব পালন করেন। এজন্যে আমাদের পরামর্শ ও দাবি হচ্ছে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের জন্যে ডেডিকেটেড নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট) রাখা হোক। এতে ভেজাল, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে নিয়মিত ব্যবস্থাগ্রহণ করা সম্ভব। ফলে আমাদের সমাজের চেহারাটা কম-বেশি পরিবর্তনের পথে এগিয়ে যাবে বলে আমাদের ধারণা।