রবিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশ
  •   নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে ফরিদগঞ্জে অবাধে ইলিশ বিক্রি
  •   পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মেঘনায় ভেসে উঠলো দুদিন পর
  •   নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি না করার শপথ করিয়েছেন এমএ হান্নান
  •   বিকেলে ইলিশ জব্দ ও জরিমানা

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:১৯

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপান্তরের দাবি

ক্যাম্পেইন কমিটি ইউকের সাংবাদিক সম্মেলন

লন্ডন থেকে আজিজুল আম্বিয়া
ক্যাম্পেইন কমিটি ইউকের সাংবাদিক সম্মেলন

১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় ক্যাম্পেইন কমিটি ইউকে ফর ফুল্লি ফাংকশনাল ওসমানী ইন্টারন্যাশনেল এয়ার পোর্টের উদ্যোগে পূর্ব লন্ডনের লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংগঠনের আহ্বায়ক কে এম আবু তাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন সংগঠনের অর্থ সচিব সলিসিটর মোহাম্মদ ইয়াওর উদ্দিন। সংগঠনের পক্ষে আরো বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রব, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মো. মফিজুর রহমান, কাউন্সিলর ফারুক চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহবাব হোসেন চৌধুরী, শাহ মুনিম, জামান আহমদ সিদ্দিকী, মাহবুবুর রহমান কোরেশী, খন্দকার সাইদুজ্জামান সুমন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ২০০২ সালে ওসমানী বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপান্তর করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটবাসীর দীর্ঘ আন্দোলনের পর লন্ডন-সিলেট রুটে ডাইরেক্ট ফ্লাইট চালু করা হয়। তা অনেকবার বন্ধ করা হয়েছে। আবার আন্দোলন করার পর চালু হয়েছে। যার ফলে সিলেট প্রবাসীরা সরাসরি বাংলাদেশে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন এবং বাংলাদেশের সরকারও আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। তারা অভিযোগ করেন, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নামে আন্তর্জাতিক হলেও কাজে এখনো আন্তর্জাতিক হয়নি। একমাত্র বাংলাদেশ বিমান ছাড়া অন্য কোনো এয়ারলাইন্সকে ওসমানীতে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে প্রতি সপ্তাহে বিমান ছাড়াও ৭টি বিদেশী এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট উঠানামা করছে। এতে সরকারের একটা বৈষম্য নীতি চোখের সামনে ধরা পড়ে। বোঝা যায়, বাংলাদেশ সরকার ও সিভিল এভিয়েশন অথরিটি সিলেটবাসীর সাথে ইচ্ছাকৃতভাবে এই বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। বাংলাদেশ বিমানের শতকরা ৯৫ ভাগ যাত্রী সিলেট বিভাগের। এই সুযোগে সিলেটীদের জিম্মি করে বিমানের রিটার্ন ভাড়া সিলেট পর্যন্ত কখনো ১৫০০, কখনো ১২০০, কখনো ১৮০০ পাউন্ড পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। অথচ সমান ফ্লাইটে ঢাকার যাত্রীদের জন্যে ৮০০ পাউন্ড ভাড়া নেওয়া হয়। এটা প্রবাসী সিলেটবাসীর জন্যে আরেক প্রতারণা। যার ফলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটীরা পরিবারের সবাইকে নিয়ে এক সাথে দেশে যেতে পারেন না অনেক সময়।

সম্মেলনে আরো বলা হয় যে, ওসমানী বিমান বন্দরে নতুন টারমিনাল নির্মাণের কাজ তিন বছর মেয়াদে শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে। বিগত চার বছরে কাজ হয়েছে মাত্র শতকরা ২২ভাগ। অথচ ঢাকার শাহজালাল বিমান বন্দরের কাজ ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে তিন বছর মেয়াদে শুরু হয়ে তা শেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। এটাও সিলেটবাসীর প্রতি আরেকটি বৈষম্যমূলক আচরণ।

ওসমানী বিমান বন্দরে প্রবাসী বিমান যাত্রীদের হয়রানি এখনো কমেনি।আন্তর্জাতিক মানের কোনো সেবা নেই। বিমানের চেক ইন কাউন্টারে প্রতিনিয়ত যাত্রীরা হয়রানির শিকার হন। এক শ্রেণীর সিলেট বিদ্বেষী কুচক্রিমহল সিন্ডিকেট তৈরি করে সিলেটবাসীকে এ হয়রানি করছে। অতীতের সব সরকার সিলেটবাসীর উপরোক্ত সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্মের সন্তানরা বাংলাদেশে না গিয়ে তুরস্ক, মরক্কো, মিশর ও ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে হলিডেতে যাচ্ছে। ফলে আমাদের সন্তানরা দেশমুখী হচ্ছে না এবং বাংলাদেশ বিরাট অংকের আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বৃটেনের বিভিন্ন সংগঠন এসব সমস্যার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।

তাই যুক্তরাজ্যে বসবাসরত কমিউনিটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দের একটি জরুরি বৈঠকে সম্প্রতি ‘ঈধসঢ়ধরমহ ঈড়সসরঃঃবব টক ভড়ৎ ভঁষষু ভঁহপঃরড়হধষ ঙংসধহর ওহঃবৎহধঃরড়হধষ অরৎঢ়ড়ৎঃ’ নামে একটি ক্যাম্পেইন গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। এ সংগঠনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নিম্নরূপ দাবি পেশ করা হয় :-

১) ওসমানী বিমান বন্দরকে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপান্তর করতে হবে।

২) বাংলাদেশের জাতীয় এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশের পাশাপাশি বৃটিশ, তুরস্ক, কাতার, আমিরাত, দুবাই, ওমান, সৌদিআরবসহ অন্যান্য দেশের ফ্লাইট চালু করতে হবে।

৩) ওসমানী বিমান বন্দরের নতুন টারমিনালের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।

৪) বাংলাদেশ বিমানের ভাড়া হ্রাস করতে হবে এবং ঢাকা ও সিলেটের মধ্যে বিমানের ভাড়ার পার্থক্য দূর করতে হবে।

৫) ওসমানী ও শাহজালাল বিমান বন্দরে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সেকশনে প্রবাসী যাত্রীদের অহেতুক হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

উপরোক্ত দাবিদাওয়া বাস্তবায়নে যে কর্ম সূচি ঘোষণা করা হয়েছে, তা হচ্ছে--

১) লন্ডন, ঢাকা ও সিলেটে সাংবাদিক সম্মেলন।

২) বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে স্মারকলিপি পেশ।

৩) সিলেট ও লন্ডনে মানববন্ধন।

৪) বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে ডেলিগেশন প্রেরণ।

৫) বৃটেনের প্রতিটি শহরে সমাবেশ।

৬) বিভিন্ন কমিউনিটি সংগঠনের সাথে জনসংযোগ।

৭) সমমনা আন্দোলনরত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নিয়ে বৃহত্তর মোর্চা গঠন। ইতোমধ্যেই আগামী ১ নভেম্বর শুক্রবার সিলেট কোর্ট পয়েন্টে মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। যতদিন পর্যন্ত উপরোক্ত দাবি বাস্তবায়ন না হবে ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চলবে । ন্যায়সঙ্গত এসব দাবি না মানলে বিভিন্ন বয়কট কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে। এই আন্দোলনে দলমত নির্বিশেষে সকলের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোস্তফা, শাহ মুনিম, আজম আলী, শাহ সেরওয়ান কামালী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, শেখ ফারুক আহমদ, হাজী ফারুক মিয়া, আনোয়ার জাকারিয়া খান প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়