শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশ
  •   নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে ফরিদগঞ্জে অবাধে ইলিশ বিক্রি
  •   পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মেঘনায় ভেসে উঠলো দুদিন পর
  •   নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি না করার শপথ করিয়েছেন এমএ হান্নান
  •   বিকেলে ইলিশ জব্দ ও জরিমানা

প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

সরকারি কলেজের বেসরকারির চেয়েও খারাপ রূপ!

অনলাইন ডেস্ক
সরকারি কলেজের বেসরকারির চেয়েও খারাপ রূপ!

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে 'কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে শিক্ষক ও ভবন সংকট চরমে' শিরোনামের সংবাদটি পড়ে পাঠককে অবশ্যই বিস্মিত হতে হয়েছে। সংবাদটিতে ফরহাদ চৌধুরী লিখেছেন, কচুয়ায় স্নাতক পর্যায়ে একমাত্র সরকারি বিদ্যাপীঠ কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ । ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৯৮৫-১৯৮৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক শ্রেণির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। কলেজটি ২০১৮ সালে পূর্ণাঙ্গরুপে জাতীয়করণ করা হয়। জাতীয়করণ হলেও বাড়েনি আধুনিক সুযোগ- সুবিধা। কলেজটিতে ২ হাজর ৫শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শ্রেণিতে অধ্যয়ন করছে। বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কলেজে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। কলেজে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, গবেষণাগার ও একাডেমিক ভবনের সংকট চরমে। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্যে মাত্র ৩টি একাডেমিক ভবন রয়েছে। যার মধ্যে ২টি ভবনের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। জরাজীর্ণ ভবনগুলোর কলাম (পিলার) অনেকাংশ ভেঙ্গে রড দেখা যাচ্ছে। ভবনের ছাদের আস্তর খুলে ও ফেটে ভাঙ্গার উপক্রম হয়েছে। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের শরীরে আস্তর খসে পড়ছে। তাছাড়া ছাদের আস্তর খসে পড়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁয়ে বৃষ্টির পানিতে শিক্ষার্থীদের শরীর ভিজে যায়। জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। ভবন সংকটের কারণে এইচ.এস.সি'র বোর্ড পরীক্ষা কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ, কচুয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কচুয়া প্রাথমিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। ফলে পরীক্ষা চলাকালীন পাঠদানও বিঘ্নিত হয়। প্রতিষ্ঠানের আরো তিনটি টিনশেড ঘর থাকলেও ২টি টিনশেড ঘর ১৯৭৯ সালে ও ১টি ভবন ১৯৮৬ সালে নির্মিত। টিনশেড ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) শাহ মুহাম্মদ জাকির উল্লাহ শাজুলী জানান, বর্তমানে ৪০ জন শিক্ষকের বিপরীতে কর্মরত শিক্ষক ২১ জন, ১৯ জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এসব পদে শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা বিঘ্নিত হচ্ছে। আইসিটি,পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীব বিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা, ভূগোল, পরিসংখ্যান বিভাগে গবেষণাগার না থাকায় শিক্ষার্থীগণ মান সম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপরদিকে গ্রন্থাগারিকের ২টি পদই শূন্য থাকায় গ্রন্থাগারের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক, এলাকাবাসী ও সুধীজন অচিরেই শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ, জরাজীর্ণ ভবনগুলো সংস্কার ও নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

কচুয়ার সাবেক এমপি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী-মন্ত্রী, এককালের তুখোড় সরকারি আমলা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর নিজ এলাকাকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছেন বলে তাঁর দলের লোকেরা শুধু নয়, সাধারণ মানুষ, এমনকি তাঁর প্রতিপক্ষ দলের লোকেরাও বলতেন। কিন্তু কচুয়ার সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের ভবন সঙ্কট ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ পদে শূন্যতা সম্পর্কে উপরোল্লিখিত সংবাদ থেকে জেনে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাঁর সাথে কলেজ কর্তৃপক্ষের কমিউনিকেশন গ্যাপ (যোগাযোগ ঘাটতি) ছিলো কি না সেটা বিচার্য বিষয়। কিন্তু সে বিচার করার ফুরসতও নেই। কেননা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের আপন ভ্রাতুষ্পুত্র প্রখ্যাত লেখক-গবেষক ড. মুনতাসির মামুন ছিলেন এই কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি। সে সুবাদে এই কলেজের সমস্যা-সঙ্কট নিরসনে সরকারি সর্বোচ্চ আনুকূল্য পাওয়ার কথা। সেই আনুকূল্য থেকে কলেজটি যে বঞ্চিত হয়েছে, সেটি কেউ স্বীকার করুক আর না করুক, বাস্তব পরিস্থিতি তা-ই বলে। সঙ্কটে নিপতিত কলেজটি সরকারি হলেও এটির বর্তমান রূপ যে বেসরকারি কলেজের চেয়েও খারাপ--সেটি বললে অত্যুক্তি হবে না, যা হলফ করে উচ্চারণ করা যায়। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানগুলোকে কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের সমস্যা-সঙ্কট নিরসনে আন্তরিক হবার অনুরোধ জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়