প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২১, ২১:১৬
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক পরিদর্শনে এসে ৮৫ জন ডাক্তারের মধ্যে পেলেন ২৬ জনকে
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে চরম অসন্তোষ
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থান চাঁদপুরের এই হাসপাতালের : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব
আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবীর। একইভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হাসপাতাল বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহাদাত হোসেন সর্দার। চাঁদপুরের স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট বিশ্বস্ত সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
|আরো খবর
গত ১৬ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবীর চাঁদপুর সফর করেন। এদিন তিনি আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এই পরিদর্শনে তিনি অফিসিয়ালভাবে চিঠি দিয়ে আসেন। তিনি কয়টায় চাঁদপুর আসবেন, কয়টায় হাসপাতাল ভিজিট করবেন, হাসপাতালের ডাক্তারদের সাথে কয়টায় বসবেন সব কিছু ওই চিঠিতে উল্লেখ আছে।
তারপরও দেখা গেলো যে, হাসপাতালের ৮৫ জন ডাক্তারের মধ্যে সেদিন বিভাগীয় পরিচালকের সাথে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২৬ জন ডাক্তার। এমন উপস্থিতি দেখে বিভাগীয় পরিচালক চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি এ বিষয়টি স্বাস্থ্য সচিবকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন বলে জানা গেছে। তাঁর প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা নেয়া হলে অনেকেরই এই হাসপাতাল থেকে বিদায় নিতে হবে বলে ওই নির্ভরযোগ্য সূত্রটি দাবি করেছে।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহাদাত হোসেন চাঁদপুরের এই হাসপাতাল নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে অকপটে বলেছেন, চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে আছে এই হাসপাতালটি। বাস্তবেও দেখা যাচ্ছে তা-ই। আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের অধিকাংশ ডাক্তারের পারফরম্যান্স খুবই বাজে অবস্থা। হাতেগোনা ক'জন ডাক্তার তাঁদের পুরোটা উজাড় করে দিয়ে কোনোরকমে এটিকে টিকিয়ে রেখেছেন। গতকাল দুপুরেই হাসপাতাল আঙ্গিনায় কিছুক্ষণ অবস্থান করে এর কিছুটা চিত্র দেখা গেলো। তখন ঘড়ির কাঁটায় সময় দুপুর সাড়ে ১২টা। সে সময় দেখা গেলো হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ সালেহ আহমেদ হাসপাতালে প্রবেশ করছেন মাত্র। হাসপাতালের প্রতিদিনকার চিত্র এমনই।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক যেখানে চিঠি দিয়ে আগাম জানিয়ে হাসপাতাল ভিজিট করতে এসে এক তৃতীয়াংশও উপস্থিত পান নি, সে জায়গায় তত্ত্বাবধায়ক বা অন্য কাউকে কি পাত্তা দেয়ার কোনো টাইম আছে ওইসব ডাক্তারের?
উল্লেখ্য, বেসরকারি কোনো সংস্থা থেকে এবং হাসপা্তালের কমিউনিটি সাপোর্ট কমিটির উদ্যোগে কোনো মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হলেও ওই সব সভায় চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া সর্বোচ্চ ১০ জন ডাক্তারও উপস্থিত থাকেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ভার্চুয়াল সভায়ও ৫-৬ জনের বেশি ডাক্তার সংযুক্ত হন না বলে লক্ষ্য করা গেছে। প্রাইভেট চেম্বার ও ক্লিনিক ব্যবসার সাথে যুক্ত হয়ে এদের অনেকেই গাড়ি-বাড়ির মালিকসহ কোটিপতি হয়ে গেছেন। এরা তাদের বিভাগীয় পরিচালক তো দূরের কথা, মন্ত্রী-এমপিকেও পাত্তা না দেয়ার দৌরাত্ম্য প্রদর্শন করে চলছেন।