শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাজীগঞ্জে তাল গাছ থেকে পড়ে আহত যুবকের মৃত্যু
  •   অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন চৌধুরী মারা গেছেন
  •   ছেলের মামলা-হামলায় বাড়িছাড়া বৃদ্ধা মা
  •   মতলব উত্তরে ইকবাল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
  •   মতলবে ১০ কেজি গাঁজাসহ আটক ৩

প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২:০৫

রহস্যময় আগুন নিয়ে ফরিদগঞ্জে তোলপাড়

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো
রহস্যময় আগুন নিয়ে ফরিদগঞ্জে তোলপাড়

রহস্যময় আগুন থেকে বাঁচার জন্যে ঘর জুড়ে তাবিজসহ নানা ধরনের কবিরাজি সামগ্রীতে ভরপুর। কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া দরুদ পাঠ এমনকি গরু জবাই করে খাওয়ালে এই আগুন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ওই পরিবারের সদস্যরা। কীভাবে কোথা থেকে কখন আগুন লাগছে তা কেউই বলতে পারছে না। স্থানীয় মসজিদের ইমামও নিজের চোখে আগুন লাগার দৃশ্য দেখছেন। গত ক’মাস ধরে রহস্যময় আগুন নিয়ে আতঙ্কে আছে এলাকাবাসী।

ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দায়চারা গ্রামের চন্দের বাড়ির শাহাদাত হোসেনের বসত ঘরের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই তথ্য জেনে দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন এসে ভিড় করছেন রহস্যময় এই আগুনের বিষয় জানতে।

জানা গেছে, ওই গ্রামের বৃদ্ধ শাহাদাত হোসেন (৭৫)-এর ১টি পাকা ও ১টি টিনের তৈরি চৌচালা বসত ঘরে, বাড়িতে প্রবেশ পথের পর্দায়, রান্না ঘরের চালে, ঘরের ফ্রিজের ভিতরের অংশে, আসবাবপত্র, জামা-কাপড় এমনকি গায়ে থাকা পোশাকও হঠাৎ আগুন লাগা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। এই ঘরের ব্যবহৃত জিনিসপত্র প্রতিবেশীদের ঘরে রাখা হলেও সেখানে শুধুমাত্র এ ঘরের জিনিসপত্রে আগুন লাগছে। মসজিদের মতো পবিত্র স্থানে রাখা হলেও সেই মসজিদের অন্যান্য সকল সামগ্রী নিরাপদে থাকলেও আগুন লাগছে শুধু শাহাদাত হোসেনের পরিবারের ব্যবহৃত জিনিসপত্রে। কোথায় এর সূত্রপাত জানে না কেউ। তবে কখনও রাতের বেলায় এমন আগুন জ¦লতে দেখা যায়নি।

ঘরের মালিক শাহাদাত হোসেন জানান, গত ৬-৭ মাস ধরে এভাবে আগুন জ¦লে আসছে। কে জ¦ালাচ্ছে, কীভাবে জ¦ালাচ্ছে আমরা কিছুই দেখছি না। তারা (অদৃশ্য কিছু) আমাদের সামনেই আগুন জ¦ালিয়ে দিচ্ছে। আমরা সবাই বসা অবস্থায় আমাদের সামনেই আগুন লাগছে।

প্রতিবেশী মুদি দোকানদার জাকির হোসেন বলেন, জি¦নের অদৃশ্য ক্ষমতায় তারা এমন আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন বলেন, ২-৩ দিন আগে ২ জন মহিলা ও ১ শিশু বাচ্চার গায়ে আগুন লাগিয়েছে অদৃশ্য শক্তি। এ গ্রামে আর কোথায়ও এমন আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি, শুধু এই ২ ঘরেই আগুন লাগছেই।

মনির হোসেন নামে স্থানীয় আরেকজন বলেন, ৮ মাস ধরে এমন আগুন লেগে আসছে। প্রথমে বাচ্চার খাটে, খাতা কম্বলে, এমন আগুন লাগছেই। বহু হুজুর কবিরাজ আসলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। কিছুদিন আগে মসজিদের সামনে তাদের খাতা কম্বল সব পুড়ে গেছে। তাদের মালামাল যেখানে রাখা হয় সেখানেই আগুন লাগে।

স্থানীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মোঃ লিয়াকত হোসেন বলেন, আগুন জ¦লতে আমি নিজেও দেখেছি। তাদের ঘরের লেপ-তোষক, আসবাবপত্রে আগুন জ¦লে। আমিও কয়েকবার আগুন নিভিয়েছি। আগুন থেকে রক্ষা পেতে তাদের বেডিংপত্র রাখা হয় মসজিদে। মসজিদে পর্যন্ত তাদের বেডিংপত্রে আগুন লাগে। আমরা কয়েকবার কোরআন তেলাওয়াত করেছি, দোয়া-দরুদ পাঠ করেছি। গরু জবাই করে এলাকাবাসীকে খাওয়ানো হয়েছে, তাতেও রক্ষা হয়নি।

ফরিদগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের লিডার কামরুল হাসান বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আগুনের কোনো সূত্রপাত খুঁজে পাইনি। এলাকাবাসীদের কাছ থেকে জানতে পারি, কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে! অদৃশ্যভাবে এমনকি ঘরের মুরুব্বি মসজিদে নামাজ পড়তে গেলেও তার পোশাকে আগুন লেগে যাচ্ছে। বিষয়টি আমি আমার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহ-সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা আলিম আজম রেজা বলেন, আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে এই দৃশ্য দেখে অবাক হয়েছি। আমি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেছি, বিদ্যুতের কোনো তারে আগুন লাগার দৃশ্য নেই। ফলে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়