বুধবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

নারীরা একেকজন যোদ্ধা

নারীরা একেকজন যোদ্ধা
সেলিনা আফরোজ

নারী শব্দটি কন্যা, জায়া, জননীর বন্ধনে আবদ্ধ। নারী কখনও কারো মেয়ে, বোন, মা, বৌ, শাশুড়ি, ননদ ইত্যাদি। নারীর একই অঙ্গে অনেক রূপ। নারীর শিশুকাল, বয়ঃসন্ধিকাল, যৌবন ও বার্ধক্য প্রতিটি স্টেপে লুকিয়ে আছে এগিয়ে যাবার সংগ্রাম। কোন কোন পরিবারে মেয়েকে বোঝা মনে করে! সেখানে নারীকে অনেক যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়। আসলে কন্যাদের সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে বড় করলে সে সম্পদে পরিণত হয়। বর্তমান সমাজে বিভিন্ন নারীর সফলতা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। সমাজে প্রতিষ্ঠিত ও স্বাবলম্বী প্রত্যেকটা নারী একেক জন যোদ্ধা বলে আমি মনে করি। কারণ আমরা যারা চাকুরি করি, তারা সংসারও পরিচালনা করি। দুটো কাজ পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য। তারপর আমরা সেটা করতে পারি। পুরুষকে কিন্তু সংসারে তেমন কাজ করতে হয় না। কিন্তু একজন চাকুরিজীবী নারী সংসারের সমস্ত দায়িত্ব এমনকি বাচ্চাদের লেখাপড়া থেকে শুরু করে সব কাজ করে থাকেন। একদিকে সে গৃহ ব্যবস্থাপক, আরেক দিকে কর্মজীবী। আসলে যে পরিবারে নারীরূপী মা যখন নিজ গৃহটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেন না, সে গৃহে বাচ্চারা কখনও মানুষ হতে পারে না। আর গৃহে শান্তিও থাকে না। সন্তান সঠিকভাবে মানুষ ও শিষ্টাচারসম্পন্ন করতে হলে মাকে হতে হবে একজন আদর্শবান। কারণ একজন মা সন্তানের প্রথম শিক্ষক। এজন্যেই দার্শনিক নেপোলিয়ন বলেছিলেন, "আমাকে সুশিক্ষিত মা দাও আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি দিব"। আসলে প্রতিটি আদর্শবান নারীর জীবনী ঘাঁটলে আমরা দেখতে পাই, তাঁরা রীতিমত একজন যোদ্ধা। অনেক সংগ্রাম, ত্যাগ, শ্রম, বুদ্ধির মাধ্যমে তাঁরা নিজের পরিবার, কর্মস্থল ঠিক রেখে সমাজে, রাষ্ট্রে অনন্যা হয়ে উঠছেন। নারী জাগরণের মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত আমাদের নারীদের কুসংস্কারের অমসৃণ পথ মোচন করে নারীদের জাগিয়ে হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন মসৃণ পথে পথ চলার আলোকবর্তিতা।

একজন নারী যখন অন্তঃসত্ত্বা হন, তখন সেই এক কোষী ভ্রুণকে শিশুতে বর্ধিত করতে প্রতিটা মাসে কী পরিমাণ কষ্ট অনুধাবন করেন, সেটা সেই মা-ই জানেন! একেকটা মাস তখন একেকটা রণক্ষেত্রের চেয়ে বেশি কষ্টের মনে হয়! এরপর ভ্রুণকে শিশুতে বর্ধিত করে পৃথিবীর আলো দেখান। কিন্তু একজন পিতা এই ত্যাগটুকু করতে পারবে না বলেই হয়তো বিধাতা নারীকে এমন কঠিন বিষয়টি অর্পণ করেছেন। এখানেও নারীর কতো ধৈর্য! আর আমরা যারা চাকুরিজীবী তাঁদেরতো এই সন্তান গর্ভে নিয়ে অনেক কষ্ট সহ্য করে কর্মস্থলে যেতে হয় একদম প্রসবের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। এবার ভেবে দেখুন, এখানেও নারী কত বড় যোদ্ধা! একসময় পুরুষ দ্বারা মহিলারা নির্যাতিত হতো। কিন্ত সেই শৃঙ্খল ভেঙ্গে নারীরা আত্মনির্ভরশীল হয়েছে। পুরুষের পাশাপাশি তারাও উপার্জনক্ষম হচ্ছে। সংসারে শেয়ার করছে। এতে করে অর্থনৈতিকভাবে পরিবারগুলো সমৃদ্ধশালী হচ্ছে। আর মা শিক্ষিত ও চাকুরিজীবী হবার কারণে বাচ্চারাও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের চাহিদা মেটাতে পারছে এবং উন্নতভাবে লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে। আসলে জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে নারীদের যুদ্ধ করে সামনে এগুতে হয় বা হচ্ছে। বর্তমান যুগে প্রতিটি সেক্টরে নারীদের ক্ষমতায়ন দেখা যাচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে নারীদের অনেক ত্যাগ আর কষ্ট। এখানেও নারীরা জীবন সংগ্রামে যুদ্ধ করে অনেক সমালোচনাকে পিষ্ট করে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছেছেন। সর্ব ক্ষেত্রেই তাদের যুদ্ধ করেই সফলতার চাবিটি হাতে নিতে হয়েছে।

পরিশেষে একটা কথাই বলবো, একজন সুশিক্ষিত, নৈতিকতাসম্পন্ন প্রতাভাবান নারীযোদ্ধা হচ্ছেন পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের আলোকবর্তিতা।

লেখক : সিনিয়র শিক্ষক, জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুর সদর, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়