পোল্যান্ডে বাংলাদেশীদের ঈদ পুনর্মিলনী

পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে বাংলাদেশীদের ঈদ পুনর্মিলনী উদযাপিত হয়েছে। বাংলাদেশী কমিউনিটি পোল্যান্ডের উদ্যোগে ওয়ারশর অদূরে অবস্থিত হোটেল গ্ৰোমানের কনভেনশন হলে জাঁকজমকপূর্ণভাবে ৫মে বিকাল ৬টায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি পোল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

দীর্ঘদিন ধরেই পোল্যান্ডে বাংলাদেশিদের তেমন কোন আয়োজন হয়না তাই সাম্প্রতিক করোনা মহামারীজনিত বাধ্যবাধকতা এর অন্যতম কারণ। বর্তমান সরকারি নিষেধাজ্ঞা না থাকায় সব বয়সীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান হয়ে উঠে প্রাণবন্ত। যেন প্রবাসে একটুকরো বাংলাদেশ।

প্রবাসী বাংলাদেশিরা ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে মেতে উঠেছিল ঈদের আনন্দে। শুধু তাই নয় এ মিলনমেলা যেন প্রবাসে একটি ছোট বাংলাদেশে। ঈদ উপলক্ষে সবাই বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক এমনকি প্রবাসীদের বিদেশি স্বামী এবং স্ত্রীরাও বাংলাদেশি পোশাকে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ফজলে রাব্বী। অনুষ্ঠান শুরু হয় রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ এই গণসংগীত দিয়ে। এরপর তানিয়া আফরিনের করিওগ্ৰাফিতে নৃত্য পরিবেশন করেন ইশমাম এবং তানিয়া। সংগীত পরিবেশন করেন মাহদীসহ আরো অনেকে। উৎসবে নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল মহিলাদের পিলো পাসিং খেলা, ছেলেদের ফুটবল পাসিং , বড়দের মোরগ লড়াই, বাচ্চাদের মিউজিকাল চেয়ার এবং ফান বক্স। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয় দেশীয় খাবার দিয়ে। অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। সবশেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের এবং অনুষ্ঠানে অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানদের এবং আয়োজকদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ডঃ মাহবুবুর রহমান এবং শেখ এরশাদুর রহমান।

অনুষ্ঠানের সার্বিক আয়োজনে ছিলেন শরিফ আহমেদ, সিদ্দিকুর রহমান, তানিয়া আফরিন, হামিদুল ইসলাম চৌধুরী মুরাদ, নাজমুল হাসান,শেখ এরশাদুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানকে সফল করতে আর্থিকসহযোগিতা করেছে একুশ বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান।

আমন্ত্রিত অতিথিদের সবাই অনুষ্ঠান উপভোগ করে আনন্দ করেছেন। সবাই এমন আয়োজন বেশি বেশি হ‌ওয়ার উপর জোর দেন। এছাড়াও পোল্যান্ডে সবাই একটি কমিউনিটি গড়ে তোলার উপর জোর দাবি জানান। বিশেষ করে বাংলাদেশি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার উপর জোর দেওয়া হয়। এসময় বক্তারা বলেন, একসময় পোল্যান্ডে বাংলাদেশিদের কমিউনিটি এসোসিয়েশন ছিল যা সকলের সমন্বয়হীনতার জন্য সফলতার মুখ দেখেনি। তাই অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সবাই মিলে নতুন উদ্যমে প্রবাসে একটি সুন্দর ছোট বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এর আগে একসময় পোল্যান্ডে বাংলাদেশি ছিল মাত্র দু-তিনশ। তখন সবাইকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব হতো কিন্তু এখন প্রায় পাঁচ হাজার বাংলাদেশি পোল্যান্ডে বসবাস করছেন। বক্তারা আরও বলেন, বাংলা কমিউনিটি দিনদিন বড় হচ্ছে সেদিক লক্ষ্য রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এটা সবার সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়।