প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২২, ১৪:১৫
ইতালিতে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৫১তম বার্ষিকী উদযাপন
রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে,যথাযথ মর্যাদায় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৫১তম বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। বিশেষ এই দিনে দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানের মধ্যে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ,জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন,বাণী পাঠ করা হয়। একই সঙ্গে প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন,রাষ্ট্রদূতের স্বাগত বক্তব্য প্রদান, দেশি ও বিদেশি আলোচকদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা এবং শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং দোয়া ও মোনাজাত করা হয়েছে।
|আরো খবর
সকাল ৯.৪৫ মিনিটে রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসান জাতীয় সঙ্গীতের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে দিনের কর্মসূচির সূচনা করেন। সকাল ১০টায় দূতাবাসের সভাকক্ষে দিবসটি উপলক্ষে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী,পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। এরপর চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর কর্তৃক স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উপর নির্মিত ইতিহাসভিত্তিক একটি নৃত্যনাট্য প্রদর্শন করা হয়। প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাংস্কৃতিক সংগঠন - সঞ্চারি সংগীতায়ন এর শিশু-কিশোরদের ধারণকৃত বর্ণিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিবেশনায় নতুন মাত্রা যোগ করে।
দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিষয়ে এক বিশেষ আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত দেশি-বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, বন্ধুপ্রতীম বিদেশী নাগরিকবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন আলোচনা সভায় সম্প্রতি বাংলাদেশ কর্তৃক মনোনীত সার্বিয়ায় নিযুক্ত অনারারী কনসাল জেনারেল ডেভোর ব্রেচিচ এ দিনটি উপলক্ষে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। বাংলাদেশের জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা প্রদানকালে তিনি উল্লেখ করেন যে, তৎকালীন যুগোস্লাভিয়া পৃথিবীর অন্যতম দেশ যারা প্রথমদিকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে এবং তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশে অবস্থান করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এছাড়া ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশী রাজনৈতিক,সামাজিক,সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ এবং সাংবাদিকরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচকগণ বঙ্গবন্ধুর কর্মময় গৌরবান্বিত জীবনের উপর আলোকপাত করেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেণ।
রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসান বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে,যিনি ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তার দূরদর্শী নেতৃত্বে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাসের সশন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম। তিনি আরো বলেন,বঙ্গবন্ধু একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন,আজকের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের প্রাক্কালে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয়, অর্থনৈতিক সামাজিক সূচকের সম্মানজনক অবস্থানের কারণে আমরা গর্ববোধ করি। এছাড়া এ বছর আমরা ইতালি বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করছি বিধায় আমাদের বেশ কিছু চুক্তি স্বাক্ষর এবং নানা কর্মসূচী বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। সকলকে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করার এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ার আহবান জানান। পরিশেষে সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে রাষ্ট্রদূত মহোদয় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।