প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩:৪৮
বিড়ালের প্রতি ভালোবাসার দৃষ্টান্ত ভাসনা বেগমের
পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকেই মানুষসহ সকল জীবের মধ্যে ভালোবাসা বিরাজমান। মহান সৃষ্টিকর্তা ভালোবেসেই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন আর প্রত্যেকটি প্রাণির হৃদয়ে ভালোবাসার বিজ বুনে নিয়েছেন। আমরা সকলেই ভালোবাসার জন্যই বেঁচে রয়েছি। ভালোবাসা নিয়ে যুগ যুগ ধরে বহু ইতিহাস রচিত হয়েছে। বর্তমান সময়ে কেউ কেউ ভালোবেসে জয় করেছেন অনেক কিছু আবার ভালোবাসার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকেই। শুধু মানুষের প্রতি ভালোবাসাই নয় সৃষ্টি জগতের প্রতিও ভালোবাসার ইতিহাস কম নয়।
গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার মোঃ মিজানুর রহমান জীবিকার সন্ধানে ব্যবসা করছেন শাহরাস্তি উপজেলার কালিয়াপাড়া বাজারে। কয়েক বছর ধরে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। তার স্ত্রী ভাসনা বেগম প্রায় ৬ মাস থেকে আদর করে মনু নামের একটি বিড়াল পোষে আসছেন এর কিছু দিন পর তিনি মিনু নামের আরেকটি বিড়াল পোষতে শুরু করেন। ভাসনা বেগম তার নিজ সন্তানের মতো বিড়াল দুটোকে আদর করতে শুরু করেন। তার কথা বিড়াল গুলো বুঝতে পারতো। খাওয়া, ঘুমানো, গোসল করা সহ সন্তানের মতোই দেখবাল করে থাকতেন ভাসনা বেগম। তিনি বিড়াল গুলোকে সময় মতোই খাবার দিতেন ও ঘুম পাড়িয়ে দিতেন। ভাসনা বেগমের সাথেই ঘুমাতেন মনু ও মিনু। গত পরশু রাতের খাবার খেয়ে হঠাৎ করেই মনু অসুস্থ হয়ে পড়ে। সময় বাড়ার সাথে সাথে মনুর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে। ভাসনা বেগম তার স্বামী ও ছেলে কে নিয়ে ছুটে আসেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে। তিনি সেখানে কাউকে না পেয়ে মনুকে নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (প্রাপ্তন) ডাঃ দুলাল চন্দ্র ঘোষের কাছে নিয়ে আসলে তিনি মনুকে মৃত ঘোষণা করেন। এতেই ভাসনা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার কান্নার শব্দে আস পাশের লোকজন ছুটে আসে। দির্ঘক্ষন মনুকে বুকে জড়িয়ে তিনি কান্না করতে থাকে। ভাসনা বেগমের স্বামী মিজানুর রহমান জানান, তিনি আদর করে বিড়াল দুটোকে লালন পালন করে আসছেন। বিড়াল গুলো তার কথা শুনতো ও বুঝতে পারতো। তিনি জানান, বর্তমানে মিনুও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ভাসনা বেগমের ছেলে আয়মান জানান, তার মা অনেক আদর করতেন মনু ও মিনুকে। মনু মারা যাওয়ার মা খুব কষ্ট পেয়েছে। ডাঃ দুলাল চন্দ্র ঘোষ জানান, খাবারে বিষক্রিয়ার কারণে বিড়ালটি মারা গিয়েছে।