প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২১, ০০:০০
জিলক্বদ মাসের শেষ জুমা : হজ্ব করতে না পারায় মুসল্লিদের রোনাজারি
বৈশ্বিক মহামারী করোনার আগ্রাসন বিশ^জুড়ে চলছে। সব কিছু ওলট পালট করে দিচ্ছে প্রাণঘাতি এই ভাইরাস। এর ছোবলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা হজ্বের মতো একটি কাক্সিক্ষত ফরজ ইবাদত (যাদের উপর ফরজ হয়েছে) আদায় করতে পারছেন না দুটি বছর ধরে। আল্লাহর ঘরের তাওয়াফ এবং প্রিয় নবী (দঃ)ণ্ডএর রওজা মোবারক জিয়ারত করতে না পারার বেদনা মুসলমানদের ব্যথিত করছে। পবিত্র হজ্বের মৌসুমে এসে বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের এই কষ্ট দারুণভাবে নাড়া দিচ্ছে। চাঁদপুরও এর বাইরে নয়। গতকাল শুক্রবার চাঁদপুর শহরসহ বিভিন্ন এলাকার মসজিদে জুমার নামাজের পর মুনাজাতে মুসল্লিদের রোনাজারি জানান দিলো হজ্ব করতে না পারার কষ্টের বিষয়টি। মুসল্লিরা পরম করুণাময় রাব্বুল আলামীনের দরবারে অজোরে কেঁদেছে এই মহামারী থেকে পরিত্রাণের জন্যে। এই মহামারী উঠিয়ে নিয়ে তাঁর ঘর তাওয়াফের ব্যবস্থা যেনো তিনি করে দেন এই দোয়াই ছিল মুসল্লিদের।
|আরো খবর
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে কোভিডণ্ড১৯ নামে করোনা ভাইরাসটি প্রথমবারের মতো শনাক্ত হয়। ক্রমে এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে এই ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ২৪ মার্চ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় লকডাউন দেয়া শুরু হয়। মার্চণ্ডএপ্রিলের দিকে বিশ্বের প্রায় সকল দেশে অদৃশ্য এ ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ আক্রান্ত হতে থাকে। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার বাড়তে থাকে। এর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয় সারাবিশ্বকে। আর সেটি হচ্ছে ‘লকডাউন’। এই লকডাউন কার্যকর করতে বিশ্বের এক দেশ অপর দেশের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সৌদি আরবও এর থেকে বাদ যায় নি। গত বছরের নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল থাকায় দ্বিতীয়বারের মতো হজ্ব করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা। বাংলাদেশের মুসলমানরাও সেই বঞ্চিতের কাতারে। আর এই দুঃখণ্ডবেদনা নিয়েই মুসলিম উম্মাহ পবিত্র হজ্ব দিবসকে সামনে রেখে মহান আল্লাহর কাছে কেঁদেছে।
৯ জিলহজ্ব আরাফাতের দিন তথা পবিত্র হজ্ব দিবস। আর ক'দিন পরই বছরে একবার আদায়ের সুযোগ হওয়া মহান ইবাদতের পবিত্র এ দিনটি মুসলিম উম্মাহর সামনে চলে আসবে। কিন্তু করোনার থাবার কারণে এবারো মক্কাণ্ডমদিনা যেতে পারছেন না আল্লাহ প্রেমিক নবী প্রেমিক মুসলমানরা। আর এ কষ্ট থেকেই গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর মুনাজাতে মুসল্লিদের অঝোরে কাঁদতে দেখা গেছে। খতিব সাহেব মুনাজাতে এ প্রসঙ্গ আনা মাত্রই তিনি নিজেও কেঁদেছেন, মুসল্লিদেরও কাঁদিয়েছেন। সকলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে এই মহামারী থেকে পরিত্রাণের জন্য কেঁদেছে, তাঁর রহমত প্রার্থনা করেছে। এই দৃশ্য প্রায় সকল মসজিদে দেখা গেছে।