শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২১, ১০:০১

অনিশ্চিত ডিসি সম্মেলন!

অনলাইন ডেস্ক
অনিশ্চিত ডিসি সম্মেলন!

দেশে এই সময়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন করার চেয়ে করোনা মোকাবিলা জরুরি। তাই সরকার এখনও ডিসি সম্মেলন নিয়ে কিছুই ভাবছে না। পরিস্থিতি সামলে উঠলে দেখা যাবে কী করা যায়। তবে ২০২১ সালের ডিসি সম্মেলন হচ্ছে না- এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে অক্টোবর-নভেম্বরেও হতে পারে ডিসি সম্মেলন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারি বেসরকারি অফিস আদালত ব্যবসা বাণিজ্য সবকিছু বন্ধ। সাধারণ মানুষের চলাচলে জারি করা হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। চলবে ৭ জুলাই পর্যন্ত। মানুষজন সবাই ঘরে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বিধি-নিষেধের এই মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। এই বিধি-নিষেধ কার্যকর করছেন জেলা প্রশাসকরা। পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, ভিডিপি, কোস্টগার্ড, সর্বোপরি সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করছে। এদের সবাইকে সমন্বয় করছেন জেলা প্রশাসকরা। এমন পরিস্থিতিতে জুলাই মাসে ডিসি সম্মেলন নিয়ে চিন্তাভাবনাও পাগলের কাজ বলে মনে করেন অনেকে।

উল্লেখ্য, মাঠ পর্যায়ে সরকারের সরাসরি প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন ডিসিরা। তারাই জনসাধারণের মনোভাব ইচ্ছা অনিচ্ছা চাহিদা ইত্যাদি সরকারকে সরাসরি জানায়। আবার সরকারের মনোভাবও জনসাধরণকে সরাসরি জানানোর ক্ষেত্রে মিডলম্যানের কাজ করেন ডিসিরা। প্রতি বছর এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দেশের ৮ বিভাগের কমিশনার ও ৬৪ জেলার ডিসির সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের নীতিনির্ধারকরা। এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যাবলি সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ জন্যই অনুষ্ঠিত হয় কার্য-অধিবেশন। এসব অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা জেলা প্রশাসকদের দিক-নির্দেশনা ও করনীয় সম্পর্কে বক্তব্য দেন। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকরাও জনগনের কল্যাণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন কর্মসূচিগুলোকে আরও কার্যকর করতে মাঠ প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ বা সমস্যাগুলো লিখিতভাবে প্রস্তাব দেন। এ ছাড়াও কার্যঅধিবেশন চলাকালীন ডিসিরা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাবও উপস্থাপন ধরেন।

প্রতি বছরের জুলাইতে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার রেওয়াজ থাকলেও করোনা মহামারির কারণে গত বছরের জুলাইতে ডিসি সম্মেলন হয়নি। সেই সম্মেলন চলতি ২০২১ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়েও তা স্থগিত করে সরকার। এবারও জুলাইয়ে হচ্ছে না ডিসি সম্মেলন। কারণ করোনা মহামারি প্রকট আকার ধারণ করেছে বিধায় লকডাউন চলছে। এই মুহূর্তে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলাই জরুরি। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করাটাই লক্ষ্য বলে মনে করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব সাবিরুল ইসলাম। তিনি জানান, পরিস্থিতির উন্নতি হলে অক্টোবর-নভেম্বরে হতেও সমস্যা নাই। তবে এসব কিছুই নির্ভর করছে ভবিষ্যতের ওপর।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জন্য বিভিন্ন জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে পাওয়া সুপারিশগুলো একত্রিত করে বই আকারে ছাপার সকল প্রস্ততি থাকা স্বত্বেও ছাপানো হয়নি করোনার কারণে। দিন তারিখ নির্দিষ্ট হলে সেগুলো ছাপিয়ে আনার জন্য বিজি প্রেসকেও তৈরি রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতিবছর ডিসি সম্মেলন তিনদিন হলেও সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই ডিসি সম্মেলন শুরু হয়ে চলেছিল পাঁচদিন। রেওয়াজ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে এই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বঙ্গভবনে। জাতীয় সংসদের স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সংসদ ভবনে। ২০১৯ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রথমবারের মতো প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে ও জাতীয় সংসদের স্পিকারের সঙ্গে জাতীয় সংসদ ভবনে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা মতবিনিময় করেন। একই বছর তিনবাহিনীর প্রধানগণ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের দিক নির্দেশনামূলক মতবিনিময় করেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসি সম্মেলনে ২৪টি কার্য-অধিবেশনে ৩৩৩টি প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। কার্য অধিবেশনগুলোয় মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসাবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা অংশগ্রহণ করেছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী বিভাগের একজন নতুন জেলা প্রশাসক জানিয়েছে, জেলা প্রশাসকদের সবচেয়ে বড় ইভেন্ট হচ্ছে প্রতিবছরের ডিসি সম্মেলন। এই সম্মেলনে অংশ নেওয়া চাকরিজীবনের একটি বড় অর্জন বলেও মনে করেন তিনি। কারণ মাঠ পর্যায়ের নানা সমস্যা এবং সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বাধাগুলো নিয়ে সম্মেলনে খোলামেলা আলোচনার সুযোগ হয়। তিনি বলেন, সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধানগণসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ডিসিদের দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে নানা ধরনের দিক-নির্দেশনা দেন। দায়িত্ব পালনে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের চাপ ও প্রভাব মোকাবিলার ক্ষেত্রে এই সম্মেলনেই সহায়তা, পরামর্শ এমনকি দিকনির্দেশনাও পাওয়া যায়। কিন্তু এ বছর এ সুযোগ পাবো কিনা জানি না।

এদিকে করোনার চলমান পরিস্থিতিতে জুলাইতে ডিসি সম্মেলন করার মতো অবস্থা দেশে নেই। এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে চূড়ান্ত হবে।

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়