প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৫, ০৩:০০
সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী শতবর্ষী জমিদার বাড়িগুলো
কচুয়ার ঐতিহাসিক তিনটি জমিদার বাড়ি অযত্ন-অবহেলায়

ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ঐতিহাসিক নানা নিদর্শন। এই ঐতিহাসিক নিদর্শনের মধ্যে চাঁদপুরের কচুয়ায় তিনটি জমিদার বাড়ি উল্লেখযোগ্য। এগুলো হলো : সাচার জমিদার বাড়ি, যা সাচার রথ ও জগন্নাথ ধাম নামে পরিচিত; দারাশাহী তুলপাই নুরুজ্জামান চৌধুরী জমিদার বাড়ি ও পাথৈর রায়বাহাদুর শরৎচন্দ্র সেন চৌধুরী বাড়ি।
|আরো খবর
সব ক'টিই স্থাপিত হয় ২৫০ বছর থেকে ৩০০ বছর আগে। তৎকালীন জমিদার গঙ্গা গোবিন্দ সেনের হাত ধরে স্থাপিত হয় সাচার জমিদার বাড়ি, নুরুজ্জামান চৌধুরীর হাত ধরে দারাশাহী তুলপাই জমিদার বাড়ি এবং রায়বাহাদুর শরৎচন্দ্র সেন চৌধুরীর হাত ধরে স্থাপিত হয় পাথৈর রায়বাহাদুর শরৎচন্দ্র সেন চৌধুরী জমিদার বাড়ি।
জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর এসব জমিদারের কোনো বংশধর না থাকায় অযত্ন-অবহেলায় সৌন্দর্য হারাচ্ছে বাড়িগুলো।
জরাজীর্ণ এসব জমিদার বাড়ি এখন যেনো পরিণত হয়েছে ভূতুড়ে বাড়িতে। তৎকালীন জমিদারদের ধনসম্পদ ও স্বর্ণালংকার রাখার জন্যে বাড়িগুলোতে রয়েছে ‘আন্ধার মানিক’ নামের কক্ষ। সেগুলো এখনও অন্ধকারাচ্ছন্ন।
স্থানীয়দের দাবি, এসব জমিদার বাড়ি সংস্কারের মাধ্যমে পর্যটন কেন্দ্র বা মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তোলা হোক।
সাচার জমিদার বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও প্রতি বছর এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা অনুষ্ঠান হয় সাচার রথ ও জগন্নাথ ধামে। এই রথ উপলক্ষে মাসব্যাপী মেলা হয় এ জমিদার বাড়ি প্রাঙ্গণে।
রথ অনুষ্ঠানের এক মাস দর্শনার্থীদের আনাগোনা থাকলেও বাকি সময় জমিদার বাড়িটি যেনো নীরবতায় আচ্ছন্ন থাকে।
আর জমিদার নুরুজ্জামান চৌধুরী দারাশাহী তুলপাই জমিদার বাড়ির পাশাপাশি নির্মাণ করেন একটি মসজিদ, যার বর্তমান নাম হযরত দারাশাহ্ (র.) জামে মসজিদ। এখানেও জমিদারের কোনো বংশধর নেই।
তবে স্থানীয় শতবর্ষ বয়সী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোবারক হোসেন পাটোয়ারী জমিদার বাড়ির ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “জমিদার বাড়িগুলো দ্রুত সংস্কার করে সংরক্ষিত করা হোক।”
এদিকে জমিদার বাড়িগুলোকে সংস্কার করার কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী জানান, “ঐতিহাসিক তিনটি জমিদার বাড়ি আমাদের অধীনে রয়েছে। মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে জমিদার বাড়িগুলো সংস্কারের আবেদন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।”
ডিসিকে/এমজেডএইচ