প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২১, ২৩:৩০
ঈদে পুলিশের ৬ ভাগের ৫ ভাগের ছুটি মিলেনি
স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা মূল কাজ হলেও পুলিশকে এখন হাজারো কাজ করতে হচ্ছে। বিশেষ করে দুর্যোগ, মহামারি, গুজবে পুলিশকে নিরলসভাবে কাজ করতে হচ্ছে। মোট জনসংখ্যার চেয়ে পুলিশের সংখ্যা নিতান্তই কম বিধায় একই পুলিশের দিনের বেশিরভাগ সময় ডিউটি করতে হচ্ছে। বিশেষ দিনের ডিউটি করে আবার রাতের ডিউটি করতে হচ্ছে। রাতের ডিউটি শেষে ভোর রাতে গিয়ে ঘুম না পুরতেই ফের দিনের ডিউটিতে যাওয়ার জন্য ডাক পড়ে। এটা একজন পুলিশ সদস্য কিংবা অফিসারের নিত্য নৈমিত্তিক দায়িত্ব। এতোসব কষ্টের মাঝে বুধবারের ঈদে ছুটি মেলেনি ৬ ভাগের ৫ ভাগ পুলিশের। বিষয়টি হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের।
|আরো খবর
জানা যায়, হাজীগঞ্জ থানায় অফিসার ও কনস্টেবল মিলিয়ে মোট পুলিশ রয়েছে ৬৬ জন। এর মধ্যে সিনিয়র জুনিয়র মিলিয়ে অফিসার রয়েছেন ১৯ জন। বাকিরা কনস্টেবল তথা সদস্য। ৬৬ জনের মধ্যে এই ঈদে ছুটি পেয়েছে মাত্র ১১ জন।
হাজীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, অফিসার ইনচার্জ, ওসি (তদন্ত) শীর্ষ এই ৩টি পদের মধ্যে ছুটি পেয়েছেন শুধুমাত্র ওসি( তদন্ত)। হাজীগঞ্জ থানায় কর্মরত নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কনস্টেবল বলেন, বাড়ি যাওয়ার অনেক শখ ছিলো। বাবা-মা এই ঈদে আছে, সামনের ঈদে হয়তো নাও থাকতে পারে। তারপরেও দেশের জন্য কাজ করছি এটাই বড় সান্ত্বনা।
পরিবার পরিজন ছেড়ে করোনাকালীন হাজীগঞ্জে ঈদ কেমন কাটালেন এমন প্রশ্নে অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশিদ চাঁদপুর কন্ঠকে জানালেন, ঈদের নামাজের পর পরিবারের সাথে ফোনে কুশলাদি বিনিময় করাকালে পর্যন্ত হাজীগঞ্জের মানুষের সমস্যা সংক্রান্ত ফোন রিসিভ করতে হয়েছে বেশ কয়েকটি। ছুটি কেনো নিলাম না সেজন্যে পরিবারের সবাই রাগ করেছে আমার সাথে। আমি হাজীগঞ্জের মানুষকে পরিবার ভেবেছি। ছুটিতে চলে গেলে যদি না বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতো ? প্রতিনিয়ত পুলিশের কাজের বাইরে ঈদের আগে ছিলো গরুর বাজারগুলো, ঈদের দিন ঈদের জামাত আর ঘটনা দুর্ঘটনা --এসব নিয়ে সারাক্ষণ কাজ করতে হয়েছে। এসব নিয়ে আমাদের ঈদ কেটেছে। ঈদের দিন পর্যন্ত ড্রেস খুলতে পারিনি। থানায় কোরবানি দিয়েছি আমরা। সবাই ঈদের দিন একত্রে কোরবানির গোস্ত খেয়েছি। আমরা সবাই এখানে একটি পরিবার --ভাই ভাই।
হাজীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদ পিপিএম বলেন, পুলিশের চাকুরিতে আসার সময় ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা নিয়েই আসতে হবে। এসবে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। বাড়িতে গেলে যেমনি ভাইদের দেখা পাই, ভালোবাসা পাই, এখানে ও সকল পুলিশ আমরা ভাই ভাই। ছুটি না পাওয়ার কোনো কষ্ট আমাদের নেই। ঈদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ মানুষের খালি বাসা পাহারা দেয়া আমাদের দায়িত্ব। আমরা ব্যক্তি -সুবিধা নেইনি, জনগণের সুবিধার জন্যেই আমাদের কাজ। ঈদের দিনেও মুসল্লিদের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য বিধি মেনে ঈদের জামাত করা, আইনশৃঙ্ঘলা রক্ষা করাই আমাদের কাজ। ঈদের ছুটি পাওয়া, না পাওয়ার বিষয় নিয়ে আমাদের পরিবার পরিবারজন এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছে।