প্রকাশ : ২১ জুন ২০২১, ১২:০০
সারাদেশে ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবারকে বিনামূল্যে ঘর প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
চাঁদপুরে ১০৯ পরিবারকে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে বিনামূল্যে দেশের সকল ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ঘর করে দেয়ার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলার ১০৯টিসহ আরো ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবারকে বিনামূল্যে ঘর প্রদান করেছেন।
|আরো খবর
গত জানুয়ারি মাসে প্রথম পর্যায়ে ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে ঘর প্রদানের পর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে এদিন আরো ৫৩ হাজার ৩৪০ পরিবারকে দুইশতক জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা ঘর উপহার দিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ জুন রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চাঁদপুর জেলার চাঁদপুর সদর, হাইমচর, হাজীগঞ্জ, মতলব উত্তর, শাহরাস্তি, কচুয়া এই ৬টি উপজেলাসহ সারাদেশের ৪৫৯টি উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন এসব মানুষদের ঘর দেয়ার এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জমির দলিল ও ঘরের চাবি উপকারভোগীদের হাতে তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যারা ঘর পেয়েছেন, তাদের কষ্ট দূর করা এবং তাদের মুখের হাসি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতা মানে ভোগ-বিলাস নয়, ক্ষমতা হলো মানুষের সেবা করা। মানুষের জন্যে কাজ করা।
তিনি বলেন, করোনার কারণে আমি যেতে না পারায়, আমার পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য, ডিসি এবং ইউএনও উপকারভোগীদের হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেবেন। দলিলে জমির মালিকানা স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ নামে করে দেয়া হয়েছে। তাদের নামে স্থায়ী দলিলের পাশাপাশি নামজারি করে খাজনা দাখিলাও দেয়া হয়েছে।
সেমিপাকা ঘরে আছে দু’টি রুম, একটি বড় বারান্দা, রান্নাঘর ও টয়লেট। পাশাপাশি সুপেয় পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও আছে। এ ছাড়াও আত্মনির্ভরশীল করতে ওইসব পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের জন্যে নানা ধরনের প্রশিক্ষণও দেয়া হবে বলে জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও যাতে গৃহহীন না থাকে তার সরকার সেই পদক্ষেপ নিয়েছে।
মুজিববর্ষে দেশের সকল গৃহহীনকে ঘর করে দেয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশের সকল ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষ ঘর পাবে। একটি মানুষও আর ঠিকানাবিহীন থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। তিনি অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল’ শীর্ষক একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী ৪টি উপজেলার উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের এই অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন চাঁদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি।
এ উপলক্ষে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানটি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ জেলা-উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধিগণ উপভোগ করেন।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), এনএসআই উপ-পরিচালক শাহ আরমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দাউদ হোসেন চৌধুরী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ, নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী, প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানাসহ জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাংবাদিক এবং উপকারভোগীগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা শাহনাজ।
চাঁদপুরের ৮টি উপজেলার মধ্য চাঁদপুর সদরে ১৭, মতলব উত্তরে ৩০, শাহরাস্তিতে ৩০, হাইমচরে ২০, হাজীগঞ্জে ১০ ও কচুয়া উপজেলার ২টিসহ মোট ১০৯টি ঘর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেয়া হয়।
চাঁদপুর সদর উপজেলার ১৭টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মাঝে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।