শনিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুরে রাজনৈতিক মামলায় আসামীদের আটক অভিযান অব্যাহত। যুবলীগ, কৃষকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫ নেতা-কর্মী আটক
  •   ছেঁড়া তারে প্রাণ গেল যুবকের
  •   চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
  •   রাজধানীতে কচুয়ার কৃতী সন্তানদের সংবর্ধনা
  •   সম্প্রীতির চমৎকার নিদর্শন আমাদের বাংলাদেশ --------------জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন

প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

চাঁদপুর-শরীয়তপুর সেতু নির্মাণে চলছে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ

চাঁদপুর-শরীয়তপুর সেতু নির্মাণে চলছে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ
মিজানুর রহমান ॥

চাঁদপুর-শরিয়তপুর ফেরি নৌ-রুটে দ্বিতীয় বৃহত্তম মেঘনা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেই সাথে গজারিয়া-মুন্সিগঞ্জ সড়কেও সেতু নির্মাণ করা হবে। এই দুটি সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে এখন চলছে মেঘনা নদীর ওপর চাঁদপুর-শরীয়তপুর এবং গজারিয়া-মুন্সিগঞ্জ এলাকার নদীতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা এবং মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ। এজন্যে ২৪৩ কোটি ১৮ লাখ ৫৯ হাজার ৫৬৩ টাকা ব্যয়ে ছয়টি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

সম্প্রতি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভায় ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ভার্চুয়াল এ সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।

শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও শরিয়তপুরের এমপি একেএম এনামুল হক শামীম এবং চাঁদপুর-২ মতলব আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডঃ নূরুল আমিন রুহুল এমপির প্রচেষ্টায় বর্তমান সরকারের সময় মেঘনা নদীর ওপর দেশের জনগুরুত্বপূর্ণ সেতু দুটি নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

বর্তমানে শরীয়তপুর-চাঁদপুর রূটে মেঘনা নদীর উপর ফেরি চালু রয়েছে। শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার আলুবাজার ফেরিঘাট আর অন্য প্রান্তে চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাট। দুই ফেরিঘাটের মধ্যে নদী ও চর মিলিয়ে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। এখানে সেতু নির্মাণের সমীক্ষার জন্য দরপত্রও আহ্বান করে ঠিকাদার নিযুক্ত করে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে সেতু বিভাগ। এ দুই ঘাটের দুই প্রান্তেই আঞ্চলিক মহাসড়ক রয়েছে। এছাড়া পদ্মা সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের নাওডোবা থেকে শরীয়তপুর সদর পর্যন্ত চারলেন সড়ক নির্মাণের ডিপিপি প্রস্তুত করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।

জানা গেছে, ২০০১ সালে জাপানি অর্থ সহায়ক সংস্থা (জাইকা) দেশে যে পাঁচটি দীর্ঘ সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা দেয় তার মধ্যে শরীয়তপুরের আলুবাজার ফেরিঘাট থেকে চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাট পর্যন্ত মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব ছিলো। এ সেতু নির্মাণ করা হলে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের মধ্যে যোগাযোগ সহজ হয়ে যাবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সেতু বিভাগের অধীন সেতু কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চাঁদপুর ও শরীয়তপুর জেলার মধ্যবর্তী মেঘনা নদীর ওপর শরীয়তপুর-চাঁদপুর ও গজারিয়া-মুন্সিগঞ্জ সড়কে সেতু নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা এবং মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে স্পেনের টেকনিকা ওয়াই প্রয়েকটস এসএ, জাপানের নিপ্পন কোই কোম্পানি লিমিটেড, দক্ষিণ কোরিয়ার দোহওয়া ইঞ্জিনিয়ার্স কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশের ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালট্যান্ট লিমিটেড, বিসিএল অ্যাসোসিয়েটস এবং ডেভ কনসালট্যান্ট লিমিটেডকে নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ২৪৩ কোটি ১৮ লাখ ৫৯ হাজার ৫৬৩ টাকা।

চলতি এপ্রিল মাস থেকে শরিয়তপুর ও চাঁদপুরে মেঘনা নদীর ৯টি পয়েন্টে সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাইতে সমীক্ষা হচ্ছে। এর মধ্য শরিয়তপুর আলুবাজার এলাকার ৪টি পয়েন্টের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে বাকি ৫টি পয়েন্টের কাজ সমাপ্ত হবে।

পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম ২২ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে শরীয়তপুরের সম্ভাব্য সেতুর স্থান আলুর বাজার সংলগ্ন মেঘনা নদী পরিদর্শন করেছেন।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। তাঁর হাত ধরেই মেঘনা সেতু নির্মিত হবে। শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌরুটে মেঘনা সেতু নির্মিত হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ২২ জেলা, সিলেটের চার জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এই সেতু নির্মিত হলে দেশের অর্থনীতির অনেক সমৃদ্ধি সম্ভব হবে। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই সেতুর একপ্রান্তে চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাট আর অন্যপ্রান্তে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার আলুবাজার ফেরিঘাট। সেতুটি হলে চাঁদপুর ও শরীয়তপুরই শুধু লাভবান হবে না, সারাদেশের অর্থনীতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তনে বিপ্লব সাধিত হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়