রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৫, ১৩:০৯

প্রতিবন্ধী সন্তানসহ গৃহবধূকে ঘর থেকে বের করে দিলেন শাশুড়ি-ননদ

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো
প্রতিবন্ধী সন্তানসহ গৃহবধূকে ঘর থেকে বের করে দিলেন শাশুড়ি-ননদ

ফরিদগঞ্জে স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে প্রতিবন্ধী সন্তানসহ এক গৃহবধূকে মারধর করে বসতঘর থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। এ সময় অভিযুক্তরা বসতঘর ভাংচুর করে বলে অভিযোগ করেছেন ওই গৃহবধূ। শনিবার (২৬ জুলাই ২০২৫) সকালে ফরিদগঞ্জের রূপসা উত্তর ইউনিয়নের কমলকান্দি গ্রামে ঘটে এ ঘটনা। এর আগে শুক্রবার (২৫ জুলাই ২০২৫) রাতে ওই গৃহবধূ থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ তাকে রাতে তার স্বামীর বাড়িতে পৌঁছে দেয়। স্বামীর ভিটাতে প্রতিবন্ধী সন্তানসহ আশ্রয়ের জন্যে জনে জনে ঘুরলেও কোনো সুরাহা মিলছে না গৃহবধূ সালমা বেগম সাথী ও সন্তানদের ।

জানা গেছে, ওই গ্রামের গণি বেপারী বাড়ির মৃত শহিদ উল্যাহ ও রাবেয়া বেগম দম্পতি ৩ ছেলে ১ মেয়ের জনক-জননী। শহিদ উল্যাহর মৃত্যুর পর পরিবারের বড়ো ছেলে মনির হোসেন ও মেজো ছেলে জহির হোসেনের টাকায় টিন শেডের একটি পাকা বিল্ডিং নির্মাণ করেন। প্রথম দিকে সকলের সাথে সুম্পর্ক ভালো থাকলেও ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে শুরু হয় পারিবারিক বিরোধ। অভিযোগ রয়েছে, বড়ো ২ ছেলে প্রবাসে থাকার সুযোগে স্থানীয় একটি মহলের প্ররোচনায় প্রবাসী মেজো ছেলে জহির হোসেনের স্ত্রী সালমা বেগম সাথীর সাথে শাশুড়ি রাবেয়া বেগম ও ননদ নাছিমা বেগমের ঝামেলা বাঁধে। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হামলা, ভাংচুর ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূর ঘর ভাংচুর করে তাকে প্রতিবন্ধী সন্তানসহ ঘর থেকে বের করে দেয় তার শাশুড়ি, ননদ ও ভাসুরের লোকজন। দীর্ঘদিন বাপের বাড়িতে থাকার পর গত ২৫ জুলাই শুক্রবার বিকেলে সালমা বেগম সাথী তার প্রতিবন্ধী সন্তানসহ স্বামীর বাড়িতে আসলেও শাশুড়িসহ লোকজন তাকে পুনরায় ঘর থেকে বের করে দেন। পরে শুক্রবার (২৫ জুলাই ২০২৫) রাতে ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করে সালমা বেগম সাথী।

থানা পুলিশ সালমা বেগেমের আবেদনের প্রেক্ষিতে রাতেই তাকে স্বামীর বাড়িতে পৌঁছে দেয়। কিন্তু শনিবার (২৬ জুলাই ২০২৫) সকালে শাশুড়ি ও ননদ মিলে সালমা বেগমকে মারধর করে ঘর থেকে আবারো বের করে দেয়। বর্তমানে সে সন্তানসহ খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। ভুক্তভোগী মালেয়েশিয়া প্রবাসী জহির হোসেনের স্ত্রী গৃহবধূ সালমা বেগম সাথী বলেন, আমার স্বামী ও ভাসুর মিলে ঘরটি নির্মাণ করেছে। কিন্তু এখন আমার ভাসুরের প্ররোচনায় শাশুড়ি ও ননদ মিলে আমাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে।

অন্যদিকে প্রবাসে থেকে জহির হোসেন জানান, আমার স্ত্রী ও সন্তানদের ওপর যে নির্মম অন্যায় হচ্ছে আমি এর বিচার চাই। প্রয়োজনে আমাদের ঘরটি সমানভাবে ভাগ করে আপাতত আমার পরিবারকে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়ার অনুরোধ করছি প্রশাসনসহ বিচার বিভাগের কাছে।

এদিকে শাশুড়ি রাবেয়া বেগম বলেন, বউয়ের সাথে দীর্ঘদিন যাবত আমাদের বিরোধ চলে আসছে। সে আমার বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে মামলা দায়ের করেছে। একসাথে থাকলে ঝামেলা হবে, তাই অন্যত্র গিয়ে থাকুক। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন রতন বলেন, আমি চেষ্টা করেছি তাদের বিরোধ মিটিয়ে দিতে। একপক্ষ মানলে অপর পক্ষ মানছে না। তাই সমাধান হচ্ছে না। ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহআলম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে রাতে ওই নারীকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছি। পুনরায় ঘটনা ঘটলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়