মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫, ১৫:১৭

কচুয়ায় মাদ্রাসা ছাত্র মিলনকে হত্যার দায়ে ২ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১ জনের যাবজ্জীবন

চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম।।
কচুয়ায় মাদ্রাসা ছাত্র মিলনকে হত্যার দায়ে ২ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১ জনের যাবজ্জীবন
হত্যার শিকার মাদ্রাসা ছাত্র মিলন এবং তাকে হত্যার দায়ে দণ্ডপ্রাপ্তরা।

কচুয়ায় সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে মাদ্রাসা ছাত্র মো. মিলন হোসেন (১২)কে শ্বাসরোধ এবং পানিতে ডুবিয়ে হত্যার দায়ে আসামী শামিম হোসেন (২৮) ও সোহাগ হোসেন (২৮)কে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর আসামী মো. রাব্বি হোসেন (২৮)কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (২৪ জুন ২০২৫) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২)-এর বিচারক সৈয়দ তাফাজ্জল হোসেন হিরু এই রায় দেন।

হত্যার শিকার মিলন হোসেন কচুয়া কান্দিরপাড় গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. তাজুল ইসলামের ছেলে। মিলন স্থানীয় চাপাতলী মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলো।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী শামিম হোসেন কান্দিরপাড় প্রধানিয়া বাড়ির মো. ইমাম হোসেন ও সোহাগ হোসেন পাশবর্তী পাড়াগাঁও গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী রাব্বি হোসেন কান্দিরপাড় গ্রামের ফরাজি বাড়ির আবুল বাসারের ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, হত্যার শিকার মিলনের পিতা তাজুল ইসলামের সাথে আসামীদের স্বজনদের সম্পত্তিগত বিরোধ ছিলো। ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ২৯ জুন দুপুর অনুমান ১টার দিকে মাদ্রাসা ছাত্র মিলন বাড়ি থেকে পাশের রহিমানগর বাজারে গেলে এবং বাজার থেকে বাড়িতে না ফিরলে পরদিন ৩০ জুন কচুয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তার ভাই মো. রিপন হোসেন (২৫)। এরপর ২ জুলাই স্থানীয়দের মাধ্যমে মিলনের পরিবার জানতে পারে যে, সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে আসামী শামিম, সোহাগ ও রাব্বি মিলনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কান্দিরপাড়ে জনৈক ইব্রাহিম খলিলের ধঞ্চের জমিতে নিয়ে পানিতে ডুবিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

বাদী রিপন হোসেন জানান, আসামীদের নাম ও পরিচয় জানার পর প্রথমে স্থানীয় লোকজন শামীমকে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাকি দু আসামী সোহাগ ও রাব্বির নাম পাওয়া যায়। এরপর তাদেরকে স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ২ জুলাই ঘটনাস্থল থেকে মিলনের মরদেহ উদ্ধার ও আসামীদের থানা হেফাজতে নেন।

এই ঘটনায় ওইদিনই মিলনের বড়োভাই রিপন হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়াজেদ আলী ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামলাটি দীর্ঘ ১০ বছর চলাকালীন সময়ে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। আসামীদের অপরাধ স্বীকার ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক তাদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন।

রায়ে আসামী শামিম হোসেন ও সোহাগ হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড, ১ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। অপর আসামী রাব্বিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল হক কমল।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়