প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯
নোয়াখালীতে গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন : আটক ৪
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় তিন সন্তানের জননী শারমিন আক্তার (৩০)কে নির্যাতনের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে নির্যাতনের একটি ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
|আরো খবর
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউছার আলম ভূঁইয়া। এর আগে বুধবার রাতে উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে অভিযুক্তদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন নির্যাতিতার স্বামী নুর নবী (৩২) ও তার ভাই শেখ ফরিদ (৩৫), বোন ছায়েরা খাতুন (৩৮) এবং ভাগনে সাইফুল ইসলাম হাসান (১৫)।
জানা যায়, গত বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে চরজব্বর থানার পুলিশ। এর আগে গত ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার পূর্ব চরবটা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরমজিদ গ্রামের আব্দুল হাদির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতিতা শারমিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ১২ বছর আগে পারিবারিকভাবে একই ওয়ার্ডের নুরনবীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। স্বামী শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি ভিক্ষা করে সংসার চালান। তার এক মেয়ের হার্টের সমস্যা থাকায় ৫০ হাজার টাকা দরকার ছিলো। এ জন্যে স্থানীয় কয়েকটি বাজারে ভিক্ষা করে ১৫ হাজার টাকা জোগাড় করেন। ভিক্ষা করে বাড়ি ফিরতে দেরি হলে স্বামী পর-পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ তুলে প্রায় গালমন্দ করতেন। এভাবে পারিবারিক কলহ দেখা দিলে কিছুদিন আগে কাজের সন্ধানে তিনি ঢাকা চলে যান। পরে স্বামীর পরিবারের লোকজনের কথায় পুনরায় ফিরে আসেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ১৩ আগস্ট রাতে শ্বশুরবাড়ির পাশের বেলাল সওদাগর নামে এক ব্যক্তি আমাকে ভরসা দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে প্রথমে তিনি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করেন। এরপর ওইদিন রাত ১২টার দিকে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শ্বশুর আব্দুল হাদি, জা কুলসুমা ও নার্গিস, ভাসুরের ছেলে শেখ ফরিদ ও হাসান, ভাগ্নে রাসেল, স্বামী নুরনবী ও তার বোন ছাহেরা খাতুন আমার হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়। আমি এতিম, আমার মা-বাবা কেউ নেই। আমার খালাতো ভাইয়েরা আমাকে লালন পালন করে বিয়ে দেয়। খবর পেয়ে তারাই আমাকে উদ্ধার করে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউছার আলম ভূঁইয়া বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ওই মামলায় আটককৃতদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে।