প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:২৫
ফলোআপ
হাজীগঞ্জে বাবার খুনি সন্তানকে খুঁজছে পুলিশ
জন্মদাতা বাবা আক্তার হোসেন (৫৮)কে কুপিয়ে হত্যাকারী ঘাতক সন্তান সাকিব হোসেন (২৫)কে খঁজছে পুলিশ। এ ঘটনায় শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলে। এদিকে ময়না তদন্ত শেষে আক্তার হোসেনকে শুক্রবার দাফন করা হয়। এর আগে পারিবারিক কলহের জেরে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডের সর্দার বাড়িতে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে হত্যাকাণ্ডের শিকার আকতার হোসেনের (৫৮) মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। ঘটনার পর থেকে ঘাতক সাকিব পলাতক রয়েছে।
|আরো খবর
জানা যায়, হত্যাকারী সাকিব নিজে পছন্দ করে বিয়ে করে পৌর ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফারহানাকে। একদিকে বেকার, আরেকদিকে বিয়ে করে বৌকে বাড়িতে নিয়ে উঠানোর কারণে বাবা ও ছেলের সাথে প্রায়ই কলহ হতো। যে কলহ পারিবারিকভাবে লেগেই থাকতো। এ দিকে দুজন মানুষ খাবে আর মাসে ১ হাজার টাকা সংসার খরচ দিবে--এটাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেননি বাবা আক্তার হোসেন। এ নিয়ে কিছু দিন আগে বাবা-ছেলে, মা- ছেলের কলহ মারাত্মক আকার ধারণ করে। এর পরেই সাকিব তার স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এসব নিয়ে সাকিব কিছুটা ক্ষুব্ধ ছিলো বাবার উপরে । সর্বশেষ গত বুধবার রাতে আক্তার হোসেন নিজ ঘরের রুমে ঘুমিয়ে ছিলো, রাতে সেই রুমে ঢুকে সন্তান সাকিব তার বাবাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এ সময় আক্তার হোসেনের চিৎকারে তার মেয়ে দৌড়ে বাবার ঘরের সামনে এসে দেখেন, ভাই সাকিব বাবার ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। এ তথ্য নিহতের পরিবারের।
এদিকে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্র জানায়, ঘাতক সাকিবকে আটকের সর্বাত্মক কাজ চলছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হন্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে নিহতের পরিবারের সদস্যরা থানায় যায় মামলা দায়ের করতে। এ সংবাদ লিখা পর্যন্ত মামলার ড্রাফটিং চলছিল বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
একটি ভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আক্তার হোসেন হত্যা মামলায তার স্ত্রী বা মেয়েকে বাদী করা হবে। এতে আসামী করা হবে নিহতের ছেলে সাকিব ও তার স্ত্রী ফারহানাকে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, সাবিককে আটকের জন্যে টিম কাজ করছে। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, মামলায় ছেলে বউ আসামী হলে তাকে আটক করা হবে
নিহতের স্ত্রী তাসলিমা দাবি করেন, গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে বাবা ছেলের সাথে ঝগড়া হলেও পরে আবার থেমে যায়। এরপরে আমি আমার আত্মীয়কে দেখতে বাজারস্থ একটি হাসপাতালে যাই। রাত বারোটার দিকে আমার শাশুড়ি, আমার অন্য ছেলেরা ও মেয়েরা ঘুমিয়ে ছিলো। হঠাৎ করে আমার স্বামীর চিৎকার শুনে তারা ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখে, সাকিব ঘর থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। পরে তারা তাদের বাবা (আক্তার হোসেন)কে নিয়ে কুমিল্লা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ছেলে যখন বাবাকে কুপিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়, তা দেখেছে আমার মেয়ে। মেয়েই ফোন করে তাড়াতাড়ি বাড়িতে আসতে আমাকে জানায়। এ ঘটনায় আমার ছেলের বউ (ফারহানা) জড়িত। সে আমার ছেলের মাথা খারাপ করে ফেলেছে। আমি আমার স্বামী হত্যায় ছেলে ও ছেলের বউয়ের বিচার চাই।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. গোলাম মাওলা নঈম জানান, আহত আক্তার হোসেনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লায় রেফার করা হয়। পরে শুনেছি কুমিল্লা নেওয়ার পথে তিনি অ্যম্বুলেন্সের মধ্যে মারা যান।