বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৫১

মাদক মামলার আসামি রাজিয়ার খুঁটির জোর কোথায়

মতলব নায়েরগাঁওয়ে মাদক ব্যবসা জমজমাট

মতলব নায়েরগাঁওয়ে মাদক ব্যবসা জমজমাট
মিজানুর রহমান

মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁওয়ের একটি পরিবারের মাদক ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে না। দিন যতই যাচ্ছে তাদের মাদক ব্যবসা জমজমাট আকার ধারণ করে চলছে।

নায়েরগাঁও বাজার এলাকায় মাদকের সর্গরাজ্য সৃষ্টি করেছে রাজিয়া সুলতানর পরিবার। রাজিয়া সুলতানা ও তার দুটি সন্তানের নামে ডজন দুয়ের উপরে মাদকের মামলা চলমান থাকা সত্বেও থেমে নেই তাদের মাদক ব্যবসা। রাজিয়া সুলতানা নায়েরগাঁও বাজারস্থ পাটন গ্রামের সফিকুল ইসলাম মেম্বারের স্ত্রী।তার পূর্বের স্বামীর নাম খলিলুর রহমান।

জানা যায়, রাজিয়া সুলতানা তার দুই সন্তানকে দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদকের রমরমা ব্যবসা করে আসছে। দাউদকান্দি সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় মাদকের একটি বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলে তাঁরা।এমনকি নায়েরগাঁও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসা জমিয়ে তোলায় এক নামে সবাই চিনেন রাজিয়া সুলতানাকে। ভয়ে কেউ

প্রতিবাদ করার সাহসও পায়না ।একটি সূত্র জানায়,গত ২৩ জুলাই গোপন ও নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে রাজিয়া সুলতানার বাড়ীতে অভিযান করেন চাঁদপুরের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ওইদিন দীর্ঘসময় অভিযান চালিয়ে রাজিয়া সুলতানার ঘরে থাকা মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল খালেকের কাছ থেকে ২ হাজার পিস ইয়াবা ও রাজিয়া সুলতানার কাছ থেকে ৮০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।পরে খালেক ও রাজিয়াসহ তার এক সন্তান ডালিম প্রধানের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। কয়েকমাস জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় তাঁরা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুর ও মতলব দক্ষিণ থানা সূত্রে জানা গেছে,

রাজিয়া সুলতানার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম সেলিম একাধিকবার মাদকসহ বিভিন্ন থানায় আটক হয়।তার বিরুদ্ধে মতলব দক্ষিণ থানায় ৫টি,যাত্রাবাড়ী থানায় একটি, দাউদকান্দি থানায় দুইটি এবং রামপুরা থানায় ১টিসহ ৯টি মাদকের মামলা রয়েছে।

অপরদিকে রাজিয়া সুলতানার ছোট ছেলে ডালিম প্রধানও বেশ কয়েকবার মাদকসহ পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের হাতে আটক হয়।তার বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় ১৭ টি মাদকের মামলা রয়েছে। তন্মোধ্যে মতলব দক্ষিণ থানায় ১৫ টি এবং দাউদকান্দি থানায় ২ টি মাদকের মামলা রয়েছে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে নায়েরগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী ও ৪/৫জন বিভিন্ন দোকান মালিক জানান,তাদের এ অবৈধ মাদক ব্যবসার কারনে বাজারের দীর্ঘদিনের সুনাম নষ্ট হয়ে গেছে।কেউ প্রতিবাদ করলে নানা ধরনের মামলা হামলার হুমকি ধমকি দেয়। গত কয়েকদিন আগে রাজিয়া সুলতানা ও খালেক নামে ২জনকে ইয়াবাসহ হাতেনাতে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। পরে তাদেরকে মাদক মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে উল্টো চাঁদপুরের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে রাজিয়া সুলতানা তার মেয়েকে দিয়ে মিথ্যা একটি অভিযোগ করেন।তাই রাজিয়া সুলতানার ভয় ও আতঙ্কে থাকেন নায়েরগাঁও বাজারের দোকান মালিক ও সাধারণ মানুষ। কখন আবার কার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে।

নায়েরগাঁও বাজার বনিক ও জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি মাসুদ রানা পাটোয়ারী বলেন,

‘মাদকের বিরুদ্ধে বাজারের ব্যবসায়ীবৃন্দ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। যারা এসব ব্যবসা করে আসছে তাদেরকে কয়েকবার পুলিশ আটকও করেছে।এছাড়া তাদেরকে শতর্ক করাসহ মাদক ব্যবসা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে রাজিয়া সুলতানার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুরের সহকারী পরিচালক একেএম দিদারুল আলম বলেন, রাজিয়া সুলতানার পুরো পরিবারটি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত।তারা দীর্ঘদিন যাবৎ এ ব্যবসা করে আসছে বিধায় স্থানীয় লোকজনের নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৩ জুলাই তাদের বাসায় অভিযান চালানো হয় এবং খালেক( ২০০০ পিস ইয়াব) ও রাজিয়া সুলতানার (৮০০ পিস ইয়াবা) সহ আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা কর হয়েছে ।

মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ রিপন বালা বলেন,রাজিয়া ও তার দু’ছেলের বিরুদ্ধে মতলব দক্ষিণ থানায় মাদকের অসংখ্য মামলা রয়েছে। তবে ওই মামলায় তারা জামিনে আছেন।তারা যদি আবারো মাদক ব্যবসা করে এবং হাতেনাতে পাওয়া যায় কোন ছাড় দেয়া হবে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়