প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৩, ২১:১২
ফরিদগঞ্জে চেতনানাশক ঔষধ প্রয়োগে চুরি
শহরের মলম পার্টি এখন গ্রামে
ফরিদগঞ্জে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটেই চলছে। নতুন এই স্টাইলের চুরি বিগত সময়ে দেখা যায়নি। এ রকম মলম পার্টির ঘটনা শুধু শহরে, গাড়িতে এবং লঞ্চেই ঘটত। সময়ের পালাক্রমে তা গ্রামে প্রবেশ করেছে। আর এই স্টাইলে হঠাৎ করে চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। রাতের আঁধারে গ্রিল কেটে অথবা টিন কেটে ঘরে প্রবেশ করে চোরের দল। ঘরের লোকদের চেতনানাশক ঔষধ প্রয়োগ করে নির্দিষ্ট কিছু জিনিস চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। চুরির ধরণ দেখে অনুমান করা যায় মাদকাসক্তরা এ কাজ করতে পারে।
|আরো খবর
বৃহস্পতিবার ১৭ আগস্ট গভীর রাতে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাহাপুর গ্রামের তালুকদার (তালগইচ্ছা) বাড়িতে এ রকম একটি চুরির ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ ইমাম হোসেন তার পরিবার নিয়ে যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, ঠিক তখনই তাদের ঘরের বেড়া কেটে প্রবেশ করে চোর। ইমাম হোসেনের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের কানের দুল নেওয়ার সময় সে জেগে উঠে চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন সেখানে ছুটে আসেন। পরে দেখা যায় ইমাম হোসেনের স্ত্রীর কানের দুল এবং গলার চেইন নেই। মেয়ে জান্নাতের কানের দুল নেই। এই প্রতিবেদক বিকাল সাড়ে তিনটায় সেখানে গিয়ে ইমাম হোসেনকে অচেতন অবস্থায় পান।
এ সময় তার স্ত্রী লাইলী বেগম বলেন, আমরা তিনজন রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ি। রাতে আমাদের ঘরে চোর ঢুকে। ভাগ্য ভালো আমার মেয়েকে অচেতন করতে পারেনি। তার ডাক-চিৎকারে সবাই চলে আসে এবং চোর চলে যায়। যাওয়ার আগে তারা আমার কানের স্বর্ণের দুল এবং গলার চেইন আর মেয়ের কানেরদুল নিয়ে যায়। সবগুলো ১ভরি ৪ আনা।
একই বাড়ির সাইফুল ইসলাম সোহাগ বলেন, আমি সকাল ১১টার দিকে ৯৯৯-এ কল দিলে আমাকে কর্মরত একজন পুলিশ অফিসারের নাম্বার দেন, সেই নাম্বারে কল দিয়ে তাদের বিস্তারিত বলি। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা এখন পর্যন্ত আসেননি।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল মান্নান বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। সত্যি বলতে কী, আজ ৯৯৯-এ ৭টি কল আসছে। অনেক দূরে দূরে যেতে হয়েছে বলে দেরি হয়েছে। আর চুরির বিষয়ে মানুষকে সচেতন হতে হবে। ভাত রান্না করে পাক ঘরে রাখা যাবে না। চোরেরা চুরির নতুন কৌশল প্রয়োগ করছে। আমরা চেষ্টা করছি এই চক্রকে ধরার।
ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের অবহেলার কারণে ফরিদগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। তাদেরকে আরো তৎপর হতে হবে। তাদের এই ধীরে চলা নীতি চোরদের আরো উৎসাহ জোগাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চান দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক। দেশের মানুষের সুখের জন্যে, ভালোর জন্যে জননেত্রী দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। অথচ গুটি কয়েক অফিসার সেই অর্জনকে ম্লান করার চেষ্টা করছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।