প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
সোহেল রানার খুনির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
মতলব উত্তর উপজেলার পূর্ব ষাটনল গ্রামের সোহেল রানা খুনের আসামী মোঃ সিদ্দিক বকাউলকে ১০ এপ্রিল বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। ৯ এপ্রিল অভিযান পরিচালনা করে মুন্সিগঞ্জ থেকে আসামী মোঃ সিদ্দিক বকাউলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
|আরো খবর
২ এপ্রিল মতলব উত্তর থানাধীন পূর্ব ষাটনল (মেহারুল্লাহ প্রধানিয়া কান্দি, পাঠানবাড়ি) গ্রামের জনৈক রোকেয়া বেগমের বসত বাড়ির পশ্চিম পাশের খাল পাড়ে কবরস্থান সংলগ্ন পূর্ব পাশের ধানি জমিতে উক্ত গ্রামের সোহেল রানা (২৮)-এর মৃতদেহ চোখ ও মাথায় জখমসহ পড়ে রয়েছে সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। উক্ত মৃতদেহের ময়না তদন্তের জন্যে লাশ চাঁদপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে মৃত সোহেল রানার মাতা রোকেয়া বেগম থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে মতলব উত্তর থানার মামলা নং-০২, তাং-০২/০৪/২০২২ইং, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়।
উক্ত মামলা রুজু হওয়ার পর চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার)-এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মঈনুল হোসেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) মোঃ ইয়াসির আরাফাত, মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মাসুদ ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ মোবারক আলী উক্ত খুনের মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, আসামীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের নিমিত্তে তদন্তে নামেন।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারে যে, উক্ত হত্যাকাণ্ডটি পরকীয়া প্রেম ও আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে বিরোধের কারণে সংঘটিত হয়। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ আসামী মোঃ মাসুদ রানা ও তার স্ত্রী মোসাঃ সুফিয়াদ্বয়কে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে। পরবর্তীতে ৯ এপ্রিল অভিযান পরিচালনা করে মুন্সিগঞ্জ থেকে আসামী মোঃ সিদ্দিক বকাউলকে গ্রেফতার করে। উক্ত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারামতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
জবানবন্দিতে জানা যায়, ভিকটিম মৃত সোহেল ও গ্রেফতারকৃত আসামী মাসুদ পরস্পর ফুফাতো-মামাতো ভাই। ভিকটিম সোহেলের সাথে মাসুদের স্ত্রী মোসাঃ সুফিয়ার পরকীয়া সম্পর্ক ছিলো এবং আসামী সিদ্দিকের সাথে জায়গা-জমি বায়না টাকা নিয়ে পূর্ব থেকে বিরোধ চলে আসছিলো। এই দুই বিরোধের জের ধরে আসামী মাসুদ, তার স্ত্রী সুফিয়া ও আসামী সিদ্দিক ভাড়াটিয়া খুনির মাধ্যমে সোহেলকে খুন করে লাশ গুম করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন আসামী মাসুদ, তার স্ত্রী সুফিয়া ভিকটিম সোহেল রানাকে ঘটনাস্থলে ডেকে আনে এবং আসামী সিদ্দিক বকাউল কর্তৃক ভাড়াটে তিনজন খুনির সহায়তায় ভিকটিম সোহেলকে সিদ্দিক বকাউল ভিকটিমের গামছা দিয়ে মুখ বাঁধে এবং হাত চেপে ধরে। আসামী মাসুদ লোহার রড দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করে খুন করে। তার লাশ শিয়ালে খেয়ে নষ্ট করেছে মর্মে প্রচার পাওয়ার লক্ষ্যে আসামী সুফিয়ার পরিকল্পনা মোতাবেক সকল আসামী ভিকটিমের চোখ ব্লেড দিয়ে উপড়িয়ে ফেলে এবং গুম করার উদ্দেশ্যে মামলার ঘটনাস্থলে তথা ভিকটিমের পারিবারিক কবরস্থানের পাশে ধানী জমিতে ফেলে রাখে।