প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৫, ২৩:৫৪
খামেনির যুদ্ধক্ষমতা IRGC-র হাতে!
ইরান প্রস্তুত ‘খামেনি-পরবর্তী’ বাস্তবতার জন্য?
বিপ্লবী গার্ডের হাতে সামরিক সিদ্ধান্তের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন!

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি তাঁর যুদ্ধসম্পর্কিত সমস্ত কার্যকরী ক্ষমতা ইরানের বিপ্লবী গার্ড (IRGC)-এর ‘সুপ্রিম কাউন্সিল’-এর হাতে অস্থায়ীভাবে হস্তান্তর করেছেন। এই সিদ্ধান্তকে ইরানের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় একটি কৌশলগত ও প্রতিরক্ষা-ভিত্তিক বড় রূপান্তর হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলায় IRGC-এর সিনিয়র জেনারেলদের নিহত হওয়ার পর এবং সর্বোচ্চ নেতার জীবনের প্রতি হুমকি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খামেনি বর্তমানে ল্যাভিজান এলাকার ভূগর্ভস্থ নিরাপদ বাঙ্কারে অবস্থান করছেন।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিপ্লবী গার্ড এখন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে সর্বোচ্চ ফতোয়া ছাড়াই
এই ক্ষমতা হস্তান্তরের অর্থ হলো, এখন IRGC যুদ্ধ শুরু, পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া বা অন্যান্য কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রত্যক্ষ অনুমতি ছাড়া। এটি ইরানের আধা-ধর্মীয় কাঠামোর মধ্যে একটি সামরিক নেতৃত্বের স্থায়ী রূপ দিচ্ছে।
“খামেনি-পরবর্তী” বাস্তবতায় প্রস্তুতি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খামেনি হঠাৎ মৃত্যুবরণ করলে বা অক্ষম হলে যেন রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা না দেখা দেয়, সেইজন্যই এই ব্যবস্থা। IRGC তখন সাময়িকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পালন করতে পারবে।
এখন IRGC শুধু বাহিনী নয়, কার্যত নীতিনির্ধারক
ইরান এখন এক ধরনের
‘আধ্যাত্মিকভাবে অনুমোদিত সামরিক রাষ্ট্রে’ পরিণত হচ্ছে। IRGC এখন শুধু নিরাপত্তা রক্ষা বাহিনী নয়, বরং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেরও অংশীদার। ফলে বিদেশনীতি, পারমাণবিক কর্মসূচি বা কূটনীতি আরও কড়া ও আপসবিমুখ হবে।আঞ্চলিক বার্তা: “গাইডকে হত্যা করলেও থামবে না ইরান”
এই সিদ্ধান্তে ইসরায়েল, আমেরিকা এবং পশ্চিমা জোটকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে— “সর্বোচ্চ নেতাকে সরালেও ইরানের পথ থেমে যাবে না, বরং আরও কঠোর হাতে শাসন চলবে।”
সম্ভাব্য হুমকি বা অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র ঠেকাতে পদক্ষেপ?
বিশ্লেষকদের মতে, এই ব্যবস্থা শুধু বাইরের আক্রমণ নয়, বরং সংস্কারপন্থী বা পশ্চিমপন্থী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সম্ভাব্য ‘ক্ষমতা দখল’ ঠেকানোর কৌশলও। IRGC-এর কর্তৃত্বশীল ভূমিকা এসব ঝুঁকি দমনে গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হচ্ছে।
রাজনৈতিক কাঠামোয় নতুন অধ্যায়
ইরানে এখন যুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছে যে গোষ্ঠী, তারা পোশাকে ‘খাকি’, আর নয় ‘আবায়া’। ফতোয়া নয়, সামরিক বাস্তবতা এখন নীতিনির্ধারণে মুখ্য। পশ্চিম এশিয়ার রাজনৈতিক দাবার ছকে এই পরিবর্তন এক নতুন উত্তাপ সৃষ্টি করছে।
বিশ্লেষণ ও উপসংহার:
এই পদক্ষেপ সাময়িক হলেও তাৎপর্য গভীর। ইরানের রাষ্ট্রযন্ত্র এখন সামরিক নেতৃত্বের কাছে বাস্তবভাবে নতজানু।
বিশ্বশক্তিগুলোকে এখন নতুন দৃষ্টিতে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন বা পর্যালোচনা করতে হবে।
ডিসিকে/এমজেডএইচ