প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৫, ০৩:১৭
ইরানের ভয়াবহ মিসাইল হামলা, দলবল নিয়ে মাটির নিচে নেতানিয়াহু
তেলআবিব লক্ষ্য করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ চালালো ইরান, উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বাঙ্কারে ইসরায়েলি নেতৃত্ব

ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলার পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করেছে ইরান। তেল আবিবসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন অংশ লক্ষ্য করে এরই মধ্যে কয়েক দফায় শত শত মিসাইল ছুড়েছে তেহরান। মধ্যরাতে এ হামলার সঙ্গে সঙ্গেই মাটির নিচে বাঙ্কারে চলে গেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
|আরো খবর
সেখানে তার সঙ্গে অবস্থান করছেন তার নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান ও উচ্চপদস্থ মন্ত্রীরা। বাঙ্কারের ভেতরে এখন ‘যুদ্ধ পরিকল্পনা’ নিয়ে জোর আলোচনা চলছে।
শনিবার (১৪ জুন) মধ্যরাতে টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, নেতানিয়াহু তাঁর শীর্ষ মন্ত্রীদের সঙ্গে বাঙ্কারে বসে ইরানের মিসাইল হামলার জবাব নিয়ে বৈঠক করছেন। কীভাবে জবাব দেওয়া হবে তা নির্ধারণে বিভিন্ন সামরিক বিকল্প আলোচনা চলছে।
এর আগে, শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইরানের বিভিন্ন জায়গায় ভয়াবহ হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েল। সারাদিন ব্যাপী চলা এই হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসি প্রধান হোসাইন সালামিসহ অন্তত ২০ জন শীর্ষ কমান্ডার নিহত হন।
এই ঘটনার পরপরই, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি আইআরজিসি’র নতুন প্রধান নিয়োগ দেন এবং কঠোর প্রতিশোধের বার্তা দেন।
নতুন আইআরজিসি প্রধান ঘোষণা করেন, “শিশু হত্যাকারী জায়নবাদী শাসকের জন্য শিগগিরই জাহান্নামের দরজা খুলে যাবে।” এই হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শুরু হয় ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’।
ইরান ঘোষণা করেছে, এই অভিযানের লক্ষ্য ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনা ও অবকাঠামো। প্রথম ধাপে ছোড়া হয়েছে শতাধিক ব্যালিস্টিক মিসাইল। পরবর্তী ধাপগুলোতেও লক্ষ্যবস্তুতে হামলা অব্যাহত রয়েছে।
ইরানি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ চলবে যতক্ষণ না পর্যন্ত ইসরায়েল উপযুক্ত শিক্ষা না পায়। ইতোমধ্যে কয়েকশ মিসাইল ছোড়া হয়েছে বলে তারা দাবি করছে।
ইসরায়েলের বিভিন্ন অংশে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। তেলআবিবসহ কিছু এলাকায় ভবনের ক্ষতি, আহত ও আতঙ্কে বাঙ্কারে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের দৃশ্য চোখে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সহায়তা দেওয়া হলেও পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা-পাল্টা হামলা এক নতুন মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়লেও এখন পর্যন্ত যুদ্ধ থামার কোনো আলামত নেই।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে এবং বিশ্বনেতারা উভয়পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় কেউই সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী নয়।
এই মুহূর্তে সবার দৃষ্টি রয়েছে, ইরান ও ইসরায়েল পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেয় এবং সংঘাত কোন মাত্রায় পৌঁছায় – তার দিকে।
ডিসিকে/এমজেডএইচ