প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
বাত-ব্যথা ও প্যারালাইসিস রোগে ফিজিওথেরাপি
মোঃ মনির হোসেন
ফিজিও (শারীরিক) এবং থেরাপি (চিকিৎসা) শব্দ দুটি মিলে হয় ফিজিওথেরাপি বা শারীরিক চিকিৎসা। ফিজিওথেরাপি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম এবং অপরিহার্য শাখা। একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক স্বাধীনভাবে রোগীর বিভিন্ন স্বাস্থ্যসমস্যা (প্রধানত : বাত-ব্যথা, আঘাতজনিত ব্যথা, প্যারালাইসিস ইত্যাদি) নির্ণয় করে পরিপূর্ণ চিকিৎসাসেবা প্রদান করে থাকেন।
|আরো খবর
তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা অনেকটা পিছিয়ে থাকা সত্ত্বেও সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে শারীরিক সমস্যা, প্রতিবন্ধকতা এবং স্নায়ুবিক সমস্যার বিষয়ে উন্নত চিকিৎসার উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে। যেমন : কোমর ব্যথা, ঘাড় ব্যথা, পিঠ ব্যথা, হাঁটু ব্যথা, সেরিব্রাল পালসি, ফেসিয়াল পালসি, আঘাতজনিত ব্যথা ও প্যারালাইসিস। যে কোনো শারীরিক সমস্যা যেমন : স্নায়ুবিক ও মেরুদণ্ড এবং জয়েন্টের সমস্যায় ভুগছে তাদেরকে সময়মতো সঠিক উপদেশ এবং ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা দিলে শতকরা ৮০-৯০ ভাগ রোগীকে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা বা অপারেশন ছাড়াই ভালো করা সম্ভব। অপারেশন ছাড়া যেসব চিকিৎসা রয়েছে তার মধ্যে শারীরিক ব্যয়াম অন্যতম। এছাড়াও রয়েছে Ultra sound Therapy, Short Wave Dia therapy, Micro Wave Dia therapy, Leaser Therapy, Tens Therapy, Traction, IRR, Wax bath therapy, Deep heat therapy ইত্যাদি যন্ত্রপাতি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার একটি অংশ মাত্র।
আমাদের দেশে কত লোক যে বাত রোগে ভুগছেন তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। হাড় ও মাংশপেশির যে কোনো বিনা আঘাতজনিত দীর্ঘস্থায়ী ব্যথাকেই সাধারণ লোকজন বাত বলে মনে করেন। বেশির ভাগ গবেষকই বাত রোগের যে শ্রেণীবিন্যাস করেছেন তাতে এ রকমই চিত্র ফুটে উঠে। ঘাড় ব্যথা, হাঁটু ব্যথা, পিঠে ব্যথা, কোমর ব্যথা, পায়ের তলায় ব্যথা ও পায়ের ব্যথা এ রকম শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গে ব্যথায় ভোগা রোগীদের সংখ্যা প্রচুর। তাই এ সকল রোগীকে নিয়মিত শরীর চর্চা ও সঠিক ফিজিওথেরাপি দিয়ে সুস্থ করা সম্ভব।
আমরা জানি যে, ডায়বেটিসে আক্রান্ত রোগীরা ব্যথার ঔষধ বেশি খেতে পারে না। কারণ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা ব্যথার ঔষধ বেশি খেলে দিন দিন কিডনি ডেমেজ হতে থাকে। তাই এ সকল রোগী ব্যথার ঔষধ বেশি না খেয়ে নিয়মিত ব্যয়াম ও শরীরচর্চা করতে হবে। তবে জেনে রাখা ভালো, ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যয়াম ক্ষতির কারণ হতে পারে। সঠিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে।
আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মুখ্য উদ্দেশ্য এই যে, একজন মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কীভাবে নিজেকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে পারে। তবে মনে রাখা উচিত, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, পরিমিত খাদ্যাভাস এবং দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা, সুস্থাতার পূর্বশর্ত। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরমর্শ নেয়া উচিত।
মোঃ মনির হোসেন : ফিজিওথেরাপিস্ট, চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল, চাঁদপুর।
* চিকিৎসাঙ্গন বিভাগে লেখা পাঠানোর
ই-মেইল : [email protected]