প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৫১
হৃদরোগের ঝুঁকি মোকাবিলা
চল্লিশ বছরের নিচে গুরুতর হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা প্রতি বছর ১.৭ হারে বাড়ছে। এ সংখ্যা নারী, পুরুষ উভয়ের জন্যই ক্রমবর্ধমান। তাই বয়স কম বলে নিশ্চিন্তে বসে থাকার অবকাশ নেই। নানা কারণে হৃদরোগ তরুণ বয়সেই বাসা বাঁধতে পারে।
|আরো খবর
শহুরে কায়িক শ্রমবিহীন জীবন হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ ছাড়া অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে
খাদ্যাভ্যাস: তরুণ প্রজন্মের সবাই ট্রান্স-ফ্যাটের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। পিৎজ্জা, বার্গার জাতীয় ফাস্ট ফুড, বাড়তি লবণ, গরু-খাসির মাংস, কোমল পানীয় এসব অপরিমিত মাত্রায় গ্রহণ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
উচ্চরক্তচাপ : যাদের উচ্চরক্তচাপ আছে, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি।
কোলেস্টেরল : রক্তে উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরলের উপস্থিতি ধমনীগুলোকে ক্রমান্বয়ে বন্ধ করে ফেলতে পারে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
ধূমপান এবং তামাক ব্যবহার : ধমনীকে সংকুচিত করে ফলে হৃদয়ে রক্ত সরবরাহ কমে যায়।
স্থূলতা : অধুনা হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ, যা হৃদয়ে অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ায় এবং উচ্চরক্তচাপ তৈরি করে।
হৃদরোগ প্রতিরোধ
বাইরের খাবারের চেয়ে বাড়ির খাবারের প্রতি নির্ভরশীল হতে হবে। জাঙ্ক ফুড খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকলে সাবধান হতে হবে। কোমল পানীয় বন্ধ করতে হবে। প্রচুর সবজি, ফলমূল, মাছ, দুধ খান।
প্রতিদিন অ্যারোবিক এবং রেজিস্টান্স ধরনের ব্যায়াম করতে হবে। তার অংশ হিসেবে দিনে অন্তত ৩০ মিনিট বা ১০ হাজার স্টেপস হাঁটা উচিত।
সব ধরনের তামাকজাত পণ্য বর্জন করতে হবে।
দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। রাত জেগে কাজ করবেন না। অতিরিক্ত কাজের চাপ নেবেন না। মাঝেমধ্যে কাজ থেকে ছুটি নিয়ে পরিবার ও বন্ধুদের সময় দেয়া উচিত। শরীরের হরমোন নিঃসরণ এবং অনেক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া নিয়মিত বিশ্রাম এবং নিদ্রার ওপর নির্ভরশীল। তাই প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো অত্যন্ত দরকারী।
এশিয়ার পুরুষদের জন্য সঠিক কোমরের মাপ হচ্ছে ৯০ সেন্টিমিটার আর নারীদের জন্য ৮০ সেন্টিমিটার। এর বেশি হলেই ঝুঁকি বাড়ে। উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক রাখা জরুরি। ছোটদের মধ্যে স্থূলতা এড়ানোর চেষ্টা ৯ বছর বয়স থেকেই করতে হবে।
তবে সবচেয়ে জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হৃদরোগের লক্ষণ চিনতে পারা। সেই সঙ্গে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। প্রতিবছর একবার রক্তের কোলেস্টেরল, হিমোগ্লোবিন, ইসিজি, ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করানো উচিত।
মনে রাখবেন, আপনার বয়সেই অনেক নারী-পুরুষ হার্ট অ্যাটাকের কারণে আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেছেন। তাই গোড়া থেকেই সচেতন হোন, নিজের যত্ন নিতে শিখুন। সুশৃঙ্খল জীবনযাপন অবশ্যই জরুরি।লেখক : কনসালট্যান্ট (কার্ডিওলজি) ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, চাঁদপুর।