প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২১, ২০:৩৫
চাঁদপুরে রিক্সাচালক দালালদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি
গ্রাম থেকে আসা রোগীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার
চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন প্যাথলজির রিক্সা চালকদের দালালি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে গ্রাম থেকে আসা সাধারন রুগিদের প্রতিনিয়ত এই রিক্সা চালক দালালদের খপ্পরে পরে প্রতারিত হতে হচ্ছে। শরিয়তপুরের মুলারহাট এলাকা থেকে চাঁদপুরে আসা নাছির নামে এক রুগি এ ঘটনার শিকার হন। এবিষয়ে তার সাথে আলাপ কালে তিনি জানান,২৫ জুলাই রবিবার সকালে আমার এক আত্মিয়র মাধ্যমে চাঁদপুর শহরের ডাকা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসি। তারা আমাকে শহরের স্টেডিয়াম রোডে অবস্থিত চাদপুর ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাঃ সোহেল আহমেদ কে দেখানোর জন্য পাঠান।
|আরো খবর
আমরা সে কথা অনুযায়ী রিক্সা করে ডাঃ সোহেল আহমেদের চেম্বারে যাওয়ার জন্য রওনা দেই, রিক্সার ড্রাইভার আমাদেরকে সেখানে না নিয়ে একই এলাকায় অবস্থিত তার পরিচিত নিউ আল কারিম নামক একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। তখন আমি রিক্সা ড্রাইভারকে ডাঃ সোহেল আহমেদের কথা জিজ্ঞেস করলে আমাকে সেই রিক্সা ড্রাইভার জানান ডাঃ সোহেল আহমেদ চাঁদপুরে নেই। তখন আমি ফোনে বিষয়টি আমার আত্মীয়কে জানালে তিনি খোজ নিয়ে দেখেণ ডাঃ সোহেল আহমেদ চাঁদপুরেই আছেন। তখন তিনি তাৎক্ষনিক নিউ আল কারিম ডায়াগনস্টিকে ছুটে আসেন। এরই মধ্যে রিক্সা ড্রাইভার দালাল সেখান থেকে পালিয়ে যায় এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজন তাদের চেম্বারে থাকা এক ডাক্তারকে তাৎক্ষনিক দেখিয়ে পরিক্ষা নিরিক্ষার নাম করে ৩৫শত টাকা হাতিয়ে নেয়। তখন রুগির আত্মিয় গিয়ে রুগিকে সেখান থেকে নিয়ে আসেন। এ ধরনের ঘটনা প্রতি নিয়ত শহরের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রিক্সা ড্রাইভার দালালদের ও রুগিদের সাথে ঘটছে। ভোক্তভুগি রুগিদের দাবি এর কি কোন প্রতিকার নেই।
খোজ নিয়ে জানা যায় রিক্সা ড্রাইভার দালালদের কিছু কিছু প্যাথলজির মালিক লালন-পালন করছেন। গ্রাম থেকে অনেক সহজ সরল মানুষ আসে চাঁদপুর শহরে ভালো চিকিৎসা করার জন্য। কিন্তু বড় স্টেশন, লঞ্চঘাট, পালেরবাজার ব্রিজের গোড়ায়,কালীবাড়ী, বাছস্ট্যান্ডসহ শহরের নামকরা বিভিন্ন ডাক্তাদের চেম্বারের সামনে তরা বসে থাকে। যেমন : মিশন স্কুলের সামনে একজন শিশু ডাক্তার প্রতিনিয়ত তার বাসাতেই চেম্বার করেন, তারও অভিযোগ এ ধরনের রিক্সা ড্রাইভার দালালরা সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকে। তার কাছে আসা সহজ সরল রোগী দেখলে তাদেরকে বলে ডাক্তার চেম্বারে নেই তাদের কাছে ভালো ডাকাতার আছে এই বলে অন্যত্র নিয়ে যায়। পরে রোগী ভালো না হলে তার পরিবারের লোকজন পুনরায় তাদের চেনা পূর্বের সেই ডাক্তারের কাছে আসে এবং সকল ঘটনা ডাক্তরকে জানায়।
এই দালালরা বসে থাকে কখন আসবে গ্রামের রোগীরা। রোগী এসে যে ডাক্তারের কথা বলে, রিক্সা ড্রাইভার নামক দালালরা বলে ঐ ডাক্তার চাঁদপুরে নেই বা হজ্বে চলে গেছেন কিংবা বদলি হয়ে গেছেন। তারা রোগীদেরকে পরামর্শ দেন তাদের সাথে যে ডায়গনস্টিক সেন্টারটি জড়িত আছে সেখানে যেতে এবং রোগীদেরকে তারা সেখানে নিয়ে যায়। অথচ রোগীরা যে ডাক্তারের উদ্দেশ্যে আসে, ওই সকল ডাক্তার ঠিকই চাঁদপুরে রয়েছেন। কিন্তু মিথ্যা কথা বলে দালালরা নিয়ে যায় তাদের সেই জড়িত থাকা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। আর চিকিৎসার নামে অসহায় রোগীরা অনেক হয়রানি এবং আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়ে। আর এসব সমস্যার অধিক ভুক্তভোগী হয় গ্রাম থেকে আসা আমাদের নিরীহ মা বোনেরা। আর এই রিক্সা চালক দালালদের মধ্যে যারা চিহ্নিত দালাল খোজ নিয়ে জানা যায়। তারা হচ্ছে : সিদ্দিক, জালাল, মিন্টু, আলম, মাসুদ, নুরু ও তাদের সহকর্মীরা। এই কাজটি এরা দিন দিন বীর দর্পে চালিয়ে যাচ্ছে এবং এরা পাশাপাশি মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত। চাঁদপুরের নিরীহ গ্রাম থেকে আসা রুগি ও তাদের আত্মিয় স্বজনরা এভাবেই রিক্সা ড্রাইভার দালালদের হাতে দিনদিন প্রতারিত হচ্ছে।
এদের পেছনে শক্ত কারো হাত রয়েছে বলে ধারনা করছেন ভুক্তভোগীরা। তা না হলে প্রতিনিয়ত এতো বড় প্রতারনা করে কিভাবে পার পেয়ে যাচ্ছে তারা। গ্রাম থেকে আসা সহজ সরল রোগীরা ও সচেতন মহল চাঁদপুরের প্রসাশনসহ সুশীল সমাজের কাছে দাবি জানাচ্ছেন এ ধরনের রিক্সা ড্রাইভার দালালদের চিহ্নিত করে আটক করলে অনেকটাই উপকৃত হবো।